বেনাপোলে ২৫ হাজার পরিবার ভিজিএফ কার্ডের আওতায়
প্রকাশিত : ১৭:৩৬, ২৬ মে ২০১৯
যশোরের শার্শা উপজেলা ও বেনাপোল পৌরসভার অতিদরিদ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২৫ হাজার পরিবার দুঃস্থ ভিজিএফ কার্ডের আওতায় আসছে। তাদের জন্য ৩’শ ৭১ দশমিক ৮৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভিজিএফ কার্ডের তালিকায় শতকরা ৭০ জন মহিলাকে নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে অতি দরিদ্র পরিবারকে ভিজিএফ খাদ্যশস্য সহায়তা আগামী ৩ জুনের মধ্যে শেষ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন ও জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রদের বরাদ্দপত্র সরবরাহ করাসহ অবহিত করা হয়েছে। ইউনিয়ন ও পৌর ওয়ার্ডে ভিজিএফ কমিটি ঠিকমত যাচাই বাছাই ও বিতরণ করছে কিনা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে নিজে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদারকি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর পবিত্র রমজান মাস ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বন্যায় আক্রান্ত,অন্যান্য দুর্যোগ আক্রান্ত দুঃস্থ ও অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ভিজিএফ (ভার্নালেবেল গ্রুপ ফিডিং) খাদ্য শস্য সহায়তা প্রদান করতে যাচ্ছে।
দুঃস্থদের মাঝে কার্ড প্রতি ১৫ কেজি হারে চাল বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। এরই মধ্যে শার্শা উপজেলায় ২০ হাজার ১৭০ জনের জন্য ৩শ‘২ দশমিক ৫৫০ মেট্রিক টন ও বেনাপোল পৌরসভায় ৪ হাজার ৬২১ জনের বিপরীতে ৬৯ দশমিক ৩১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে, এ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা ।
অতি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ওই চাল স্থানীয় খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করে সংসদীয় এলাকার সংসদ সদস্যকে অবহিত করে উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে যাবে ওই বরাদ্দ। ইউনিয়ন ভিজিএফ কমিটি অতি দরিদ্র বাছাই করে করে কার্ড বিতরণ করবেন। ধনী বা স্বচ্ছল ব্যক্তি নয়, দুঃস্থ অতিদরিদ্র ব্যক্তি ও পরিবারকে এ সহায়তা প্রদান করতে হবে।
তবে সম্প্রতি বন্যায় আক্রান্ত ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ অতিদরিদ্রকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যে পরিবারের মালিকানায় কোন জমি নেই বা ভিটাবাড়ি ছাড়া কোন জমি নেই, দিন মজুরের আয়ের উপর নির্ভরশীল, মহিলা শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির উপর নির্ভরশীল,উপার্জনক্ষম পূর্ণবয়ষ্ক কোন পুরুষ সদস্য নেই, স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্যে কাজ করতে হয় উপর্জনশীল কোন সম্পদ নেই, স্বামী পরিত্যক্তা বা তালাকপ্রাপ্তা মহিলা, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্ত হননি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার, অধিকাংশ সময় দু’বেলা খাবার পায় না-এমন ১২ শর্তের মধ্যে কমপক্ষে ৪টি শর্ত পুরণ করে এমন ব্যক্তি দুঃস্থ বা অতিদরিদ্র বলে গণ্য হবেন। যারা এই সুবিধার আওতায় আসবে।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল জানান, উপকারভোগীদের তালিকা এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে যাতে কোন অবস্থাতেই একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ না পায়।
এছাড়া উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শতকরা কমপক্ষে ৭০ জন মহিলাকে অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করতে হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদারকিসহ সঠিক পরিমানে খাদ্যশস্য বিতরণে নিশ্চয়তা বিধান করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ চাল নিয়ে কেউ নয়-ছয় করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, আগামী ৩ জুনের মধ্যে চাল উত্তোলন করে যথা নিয়মে বিতরণ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। অতিদরিদ্র ও দুস্থ বাছাইয়ে ১২টি শর্তের কথা বলা হলেও ৪ শর্তকে অত্যাবশ্যকীয় করা হয়েছে। দরিদ্র মানুষের যাতে ঈদের আনন্দ ¤øান না হয় সে জন্য সরকারের এই মহৎ প্রয়াস।
কেআই/
আরও পড়ুন