কোটা আন্দোলনকারীদের হুমকি
বেশি বাড়াবাড়ি করিস না
প্রকাশিত : ১৩:০৮, ১৬ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৪৩, ১৯ মে ২০১৮
ফাইল ছবি
‘এই আন্দোলন করছিস তোরা সরকারের বিরুদ্ধে। তোদের একটাকেও ছাড়া হবে না। প্রজ্ঞাপনটা জারি হলে তোদের কুত্তার মতো পেটানো হবে। কুকুরের মতো গুলি করে রাস্তায় মারা হবে। তোরা তো কেউ বাঁচবি না। বেশি বাড়াবাড়ি করিস না।’-এভাবেই গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কোটা আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরু ও রাশেদ খানকে প্রকাশ্যে পিস্তল ঠেকিয়ে এ হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্তরা বলছেন এসব অভিযোগ অবান্তর। এমন ঘটনা ঘটেনি।
আন্দোলনাকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রাত দেড়টার দিকে মুহসীন হলে ১১৯ নম্বর কক্ষে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমনসহ একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত দেড়টার দিকে বাপ্পি, সানী ও লিমনের নেতৃত্বে ১৫/২০ ছাত্রলীগ কর্মী মুহসীন হলের ওই কক্ষটিতে আসেন। এ সময় নুরুল হক নুরুর কক্ষে ছিলেন আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ। বাপ্পির পকেটে একটি পিস্তল ছিল বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
নূরু ও রাশেদকে হুমকি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পি বলেন, ‘এই আন্দোলন করছিস তোরা সরকারের বিরুদ্ধে। তোদের একটাকেও ছাড়া হবে না। প্রজ্ঞাপনটা জারি হলে তোদের কুত্তার মতো পেটানো হবে। কুকুরের মতো গুলি করে রাস্তায় মারা হবে। তোরা তো কেউ বাঁচবি না। বেশি বাড়াবাড়ি করিস না। শেষবারের মতো মা-বাবার দোয়া নিয়ে নিস। শুধু প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। তোদের কী অবস্থা করি।’
এ বিষয়ে নুরুল হক নুরু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আমার রুমে ছিলাম। এর মধ্যে চারুকলা অনুষদের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিমন ফোন দিয়ে হুমকি দেয় যে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে। পিটিয়ে নামিয়ে দেওয়া হবে। আমরা নাকি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি ফোন নিয়ে বলেন, তোদের মতো কুলাঙ্গারদের রাখতাম না এই দেশে। তবে তোরা বাঁচবি না। কিছুদিন পর প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। দেখি, তোদের কোন বাপ ঠেকায়। তার ১০ মিনিট পরে রুমে পিস্তল নিয়ে এসে বলে, তোরা মা-বাবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে নে। তোরা বাঁচবি না। তোদের গুলি করে মারব। নুরু আরও বলেন, তারা আমাকে মারতেও আসে। তারা আমার মোবাইলও নিয়ে যায়, যাতে আমি রেকর্ড করতে না পারি। আমরা এখন জীবননাশের হুমকির মুখে আছি।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি গণমাধ্যমকে বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ও আমার পাশে রুমে থাকে। আমার এক ছোট ভাইয়ের আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন গ্রুপে দেয়। পরে তার সঙ্গে এ বিষয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। আমি তাকে বলেছি, আন্দোলন করতেছস ঠিক আছে। অন্য কোনো ঝামেলায় জড়াবি না। আমি কাল হল ছাড়ছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে মুহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী বলেন, ‘তাকে কিছু করা হয়নি। সে ইস্যু বানাচ্ছে।’
/ এআর /
আরও পড়ুন