বৈশ্বিক সংকটেও উচ্চপ্রবৃদ্ধি নিয়েই শেষ হচ্ছে অর্থবছর (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:৩৬, ৩০ মে ২০২৩
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও উচ্চপ্রবৃদ্ধি নিয়েই শেষ হচ্ছে চলতি অর্থবছর। এ সময়ে বেড়েছে রপ্তানি, এগিয়ে চলছে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। তবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও ঊর্ধ্বমুখী আন্তর্জাতিক পণ্য বাজারের কারণে মূল্যস্ফীতি বাগে আনা যায়নি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আসছে বাজেটে অর্থনীতির গতিশীলতা ধরে রাখার সঙ্গে গুরুত্ব থাকতে হবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির দিকে।
অস্থিরতা চলছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। করোনার অভিঘাত ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে অস্বাভাাবিক বেড়েছে জ্বালানি ও পণ্যমূল্য। মন্দার কবলে অনেক ধনী দেশ। প্রবৃদ্ধিতেও নেমেছে ধ্বস।
এমন বাস্তবতা সত্ত্বেও এবছরও উচ্চপ্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশে। চলতি বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কালন করা হলেও অর্থবছর শেষে কমপক্ষে ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এদিকে, আসছে বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে সাড়ে ৭ শতাংশ। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে লক্ষ্যপূরণ হলে জিডিপির আকার হতে পারে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা।
বৈশ্বিক অস্থিরতার প্রভাবে দেশের অর্থনীতি খানিকটা চাপে পড়লেও মাথাপিছু আয় প্রায় আগের মতো থাকছে। অর্থবছর শেষে মাথাপিছু গড় আয় দাঁড়াতে পারে ২ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলারের বেশি।
চলতি বাজেটের ওপর ভর করে স্থিতিশীল আছে রপ্তানি-বাণিজ্য। গেল অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয় হয় ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ বেশি।
এছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও চলছে এগিয়ে। সরকারের অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলোর মধ্যে বেশকটি শেষ পর্যায়ে। আসছে বাজেটেও চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে দেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্বের অন্য অনেক দেশের তুলনায় সংকট ভালভাবে সামাল দিয়েছে বাংলাদেশ। আসছে বাজেটেও অর্থনীতির গতিশীলতা ধরে রাখার পাশাপাশি কর্মবান্ধব খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খালীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “করোনার আগে যে অবস্থায় ছিলাম সে অবস্থায় এখনও ফিরে যেতে পারিনি। ফিরে যাওয়ার জন্য যা যা করণীয় আসন্ন বাজেটে তা থাকবে আশা করছি। তার একটা দিক হচ্ছে প্রবৃদ্ধির দিক, শুধু প্রবৃদ্ধি হলেই হবেনা সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্যে পিছিয়ে পড়া মানুষদের প্রতি নজর দিতে হবে।”
বর্তমানে দেশে গড় মূল্যস্ফীতি প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। আসছে অর্থবছরে এটিকে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে স্বস্তি দিতে বাজেটে থাকতে হবে বিশেষ দিকনির্দেশনা।
ড. কাজী খালীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “চেষ্টা করতে হবে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সমাধান করে সাধারণ মানুষের স্বস্তি ফিরিয়ে আনা। সেদিকে নজর দিতে হবে, যাতে আমরা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে পারি।”
সব কিছু ঠিক থাকলে নতুন অর্থবছরের সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
এএইচ
আরও পড়ুন