ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২১:৩৯, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ২৩:০১, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

দেশের ব্যাংকিং খাত নাজুক অবস্থায় আছে এ কথা স্বীকার করতে দোষের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের এ নাজুক অবস্থা থেকে উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া আসন্ন বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্যও প্রণোদনা থাকবে।

রোববার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের ব্যাংকিং খাত অনেকের ধারণায় নাজুক অবস্থায় আছে। এটা আমাদের স্বীকার করতে দোষ নেই। প্রত্যেক দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। একটি উন্নয়নশীল দেশে সবগুলো খাতকে সুন্দর ও সমভাবে পরিচালনা করা অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তবে নাজুক বলা হলেও দেশের ব্যাংকিং খাত খুব খারাপ করছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ খাত খারাপ করলে বাংলাদেশ বিশ্বের পাঁচটি মাথাপিছু প্রবৃদ্ধি অর্জনের দেশে পরিণত হতে পারতো না। সবার ওপরে এখন রয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের সমকক্ষ দুটি দেশ। একটি চীন আর অন্যটি হচ্ছে ভারত। এই অর্জন ব্যাংককে বাদ দিয়ে হয় না। ব্যাংক একটি বড় এলাকা। আর্থিক খাত ও ব্যাংক খাতকে বাদ দিয়ে এত বড় অর্জন সম্ভব নয়। তারপরও বলবো আমাদের রেট অব ইন্টারেস্ট অনেক বেশি। এখানে যে পরিমাণ ইন্টারেস্ট ধরা হয় প্রকৃতপক্ষে তা কিন্তু ব্যাংকগুলো পায় না। কয়েকদিন পরপরই এগুলো অবলোপন করতে হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের মতো ১৪-১৫ শতাংশ ঋণের সুদ পৃথিবীর কোথাও নেই। প্রধানমন্ত্রী সব কিছু বুঝে-শুনে শিল্প ও বাণিজ্য রক্ষা করার জন্য যে সিঙ্গেল ডিজিটের কথা বলেছিলেন সেটিই গ্রহণযোগ্য ছিল। কারণ সিঙ্গেল ডিজিটের ওপরে হলে যিনি ঋণ নিয়েছেন তিনিও শোধ দিতে পারবেন না। আর যারা দিয়েছেন তারাও পাবে না। কয়েকদিন পর রাইট অফ করতে হয়। এতে দিনের শেষে দেখা যাবে ৯ শতাংশও পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা সুদের হারের বিষয়টির ওপর কাজ করছি। শিগগিরই সারা বিশ্বের সঙ্গে সমন্বিত করে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক রেট আমরা করবো। সেই রেট অব ইন্টারেস্ট বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের ইতিহাসে আর্থিক খাতের জন্য সেটা হবে টার্নিং পয়েন্ট। আর এটা না করতে পারলে আমাদের বারবার এভাবে রাইট অফের কথা চিন্তা করতে হবে। এতে ননপারফর্মিং লোন অনেক বেড়ে যাবে। দুর্বল জায়গাগুলো আরও দুর্বল হতে থাকবে। আমরা চাই না সেই কাজটি হোক। আমরা এর ওপর কাজ শুরু করেছি। এখন বাস্তবায়নের পালা। ইন্টারেস্ট আমরা কমাবো। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত সিঙ্গেল ডিজিটে রাখবো।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যাংক ও ঋণগ্রহীতার সুবিধা বিবেচনা করে সুদের হার নির্ধারণ করা হবে। দুই পক্ষেরই উইন উইন ইন্টারেস্ট রেট পুনর্নির্ধারণ করা হবে।

নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ ব্যাংক তিন মাস মেয়াদি আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ এবং প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যাংক বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে মেয়াদি ঋণ খাতে সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। এছাড়া অনেক ব্যাংকের ঋণের সুদের হার কমানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকগুলো যাতে তাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী সুদের হার কম করে সে বিষয়টি নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।

নতুন নামে ফারমার্স ব্যাংক পরিচালনা প্রসঙ্গে কাজী ফিরোজ রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হোক সেটা সরকার চায় না। আমরা চাই সকলে ভালোভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের পরিস্থিতি হলে সরকার তার পাশে দাঁড়াবে। যতটা প্রয়োজন সহযোগিতা করবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও এই সুযোগ দেওয়া হয়। আর ফারমার্স ব্যাংক ব্যর্থ হয়েছে এর অর্থ এই নয় যে- পদ্মা ব্যাংকও ফেল করবে। আমরা আশা করি পদ্মা ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি