ঢাকা, শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২১৫ রানের হার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২২:২৫, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ইমরুলের এই ছবি-ই বলে দিচ্ছে ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা কতটা অসহায় ছিলেন।

ইমরুলের এই ছবি-ই বলে দিচ্ছে ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা কতটা অসহায় ছিলেন।

৫ দিনের টেস্ট শেষ আড়াই দিনেই। মিরপুরে ২১৫ রানের লজ্জার হার বগলদাবা করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে টাইগার ব্যাটসম্যানদের।
প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতা থেকে দ্বিতীয় ইনিংসেও বের হয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। রীতিমত উইকেট বিসর্জন দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নামেন ব্যাটসম্যানরা। ক্রিজে তাদের অসহায়ত্ব  দেখে মনে হয়েছে শ্রীলংকান বোলাররা যেন মঙ্গল গ্রহ থেকে ঐশ্বরিক শক্তি নিয়ে মাটিতে এসেছেন! হেরাথ-ধনঞ্জয়া-পেরেরারা যেন আনপ্লেয়েবল। সবমিলে তালগোল পাকানো ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সব কয়জন ব্যাটসম্যান মিলে রান করেন মাত্র ১২৩।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট জিততে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল ৩৩৯ রান। এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এর পর কিছুটা ঘুরেও দাঁড়িয়েছিল স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক জুটি ৪৬ রান যোগ করেছিলেন। কিন্তু দলীয় ৪৯ রানের মাথায় ইমরুল ফিরে যান। কিছুটা আশা জাগিয়ে লাঞ্চের পর ফিরে যান মুমিনুল হকও (৩৩)।

এর পরের অধ্যায়টা শুধুই হতাশায় মোড়ানো। মমিনুলের পর একমাত্র মুশফিক ছাড়া কেউ-ই উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেন নি। এমনকি তাদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে কী যেন অদ্ভূত তাড়া রয়েছে। প্যাভিলিয়নকে তারা মিস করছে।

ধনঞ্জনায় পকেটে উইকেট দিয়ে এসেছেন প্রথম টেস্টে অসাধারণ ইনিংস খেলা লিটন দাস।

লাঞ্চের পর উইকেট হারানোর যে হিড়িক শুরু হয় এতে যোগ হয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহও। তিনি ব্যক্তিগত ৬ রানের মাথায় আকিলা ধনঞ্জয়ার শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন।

কিছুটা আশা ছিল সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ওপর। তিনি ২৫ রান করে উইকেটে অনেকটাই সেট ছিলেন। তিনিও পারেননি বাংলাদেশের চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাল ধরতে। এর পর কেউই পারেননি দলের বিপর্যয়ে রুখে দাঁড়াতে। ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দেন প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ সাব্বির।

শেষের ৯ ওভারে উইকেটের পতন হয়েছে ৬টি। শেষের ৫ ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন মাত্র ২৩ রান। অর্থ্যাৎ একশ’ রানের পর ২৩ রান করতেই ৫ উইকেটের পতন হয়।

লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহ, সাব্বির, মিরাজ, আবদুর রাজ্জাকরা কেউ-ই চার ওভারের বেশি ক্রিজে থাকতে পারেননি। চার ব্যাটসম্যান ছাড়া বাদবাকি সবার স্কোর এক অংকের কোটায়। দুই অংক ছোঁয়া চার জনের মধ্যে দুজনের রান বিশের নিচে। তারা হলেন ইমরুল ১৭ ও লিটন ১২। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে আউট হয়েছেন মমিনুল ৩৩ ও মুশফিক ২৫।

তাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে ২১৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ধস নামন লঙ্কান দুই স্পিনার আকিলা ধনঞ্জয়া ও রঙ্গনা হেরাথ। ধনঞ্জয়া মাত্র পাঁচ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নেন। আর ১১.৩ ওভারে ৪৯ রান খরচায় হেরাথ পেয়েছেন চার উইকট।

প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা করেছিল ২২২ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ করেছিল ১১০ রান। ১১২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। সেখানেও সংগ্রহটা খুব বেশি বড় করতে পারেনি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন তাইজুল ইসলাম। এবার তিনি নিয়েছেন চারটি উইকেট। তিনটি উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন বল হাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। দুর্দান্ত বোলিং করে শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ২২২ রানে বেঁধে ফেলেছিলেন আবদুর রাজ্জাক, তাইজুল ইসলাম। কিন্তু নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারননি মাহমুদউল্লাহর দল। অলআউট হয়ে গিয়েছিল মাত্র ১১০ রানে। অন্য ব্যাটসম্যানরা যেখানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন, সেখানে ৩৮ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশের পক্ষে একাই লড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার করা ২২২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২ রান সংগ্রহ করতেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমকে। দিনের শেষ পর্যায়ে ইমরুল কায়েসও ফিরেছিলেন ১৯ রান করে। গতকাল দ্বিতীয় দিনের শুরুতে লিটন দাস সাজঘরে ফিরে গেছেন ২৫ রান করে। ১৭ রান করে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু সেই ১৭ রানেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়ককে। সাব্বির রহমান আউট হয়েছেন শূন্য রানে। ১ রান করে এসেছে আবদুর রাজ্জাক ও তাইজুল ইসলামের ব্যাট থেকে।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে কুশল মেন্ডিসের ৬৮, রোসেন সিলভার ৫৬, দিলরুয়ান পেরেরার ৩১ ও আকিলা ধনঞ্জয়ের ২০ রানের ইনিংসগুলোতে ভর করে স্কোরবোর্ডে ২২২ রান জমা করেছিল শ্রীলঙ্কা।

সূত্র : ইএসপিএন ক্রিকইনফো।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি