ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

ভারতের স্বীকৃতির পরই পাল্টে যায় যুদ্ধের কৌশল

আদিত্য মামুন

প্রকাশিত : ১১:৩০, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

একাত্তরের ৬ ডিসেম্বরের পর থেকে পাল্টে যায় যুদ্ধের ধরণ। এদিন বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয় ভারত। ফলে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর পাল্টা হামলায় গুড়িয়ে যায় পাকসেনাদের দুর্গগুলো। ক্রমশ যুদ্ধজয়ের বিশ্বাস প্রগাঢ় হয় মুক্তিসেনাদের মধ্যে। 

যুদ্ধের ৯ মাসে অগণন শহীদের আত্মত্যাগ খুব কাছ থেকে দেখেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। অপরদিকে রক্তস্নাত আত্মত্যাগ অপরদিকে শক্তি আর সাহস পরাক্রমশালী করে তুলেছিল মুক্তিসেনাদের।

৩রা ডিসেম্বর পাকিস্তানের ভারত আক্রমণের পর থেকেই পাল্টাতে থাকে যুদ্ধের কৌশল। ৬ ডিসেম্বর ভারতের দেয়া বাংলদেশের স্বীকৃতি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যায়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার আনীত যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো দিয়েছে তার আগেই।

৬ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে বিপুল হর্ষধ্বনির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশকে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এই ঘটনা।  

ফলে ভারতে অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করে দেয় আমেরিকা। পাকিস্তান ছিন্ন করে কূটনৈতিক সম্পর্ক। ভারত স্বীকৃতি দেয়ার পর রণাঙ্গণের পরিস্থিতি কেমন হয়েছিল- জানতে চাইলে তখনকার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক হারুন হাবীব।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব বলেন, “সে সময় একটি অদ্ভূত উত্তেজনা সারা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে কাজ করেছি। ভারতের স্বীকৃতির কয়েক ঘণ্টা আগে বা পড়ে ভুটানের স্বীকৃতি এসেছে। তখন বাস্তবিকভাগেই রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। সেই উত্তেজনায় মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা উপরের দিকে গুলি চালিয়ে আনন্দ উদযাপন করছিল। পাশ দিয়ে ইন্ডিয়া বাহিনী যাচ্ছিল, তারা না করছে যে গুলি নষ্ট করা তোমাদের উচিত হবেনা।”

ভারতের স্বীকৃতির চিঠি পাঠানো হয় মুজিবনগর সরকারকে। সেদিনই মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত এবং আরেক স্বীকৃতিদাতাদেশ ভুটানসহ বন্ধুদেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় বাংলাদেশ সরকার। বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যম সেসব খবর গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে নিন্দা জানানো হয় পাকিস্তানের বর্বরতার।  

হারুন হাবীব বলেন, “টাইম ম্যাগাজিন, নিউজ উইক যথেষ্ট ভালো ভূমিকা রেখেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার গণমাধ্যমগুলো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এসেছে। ফলে মুক্তিবাহিনীর মধ্যে একটা আশা সঞ্চার হয়েছে, শক্তি বেড়েছে, লাখ লাখ রিফ্যুইজি তাদের মনে শক্তি সঞ্চারিত হয়েছে। অন্যদিকে অভরুদ্ধ দেশে যে আরও কয়েক কোটি মানুষ অবস্থান করছিল তাদের মনোবল জাগিয়ে তুলেছিল।”

যুদ্ধক্ষেত্রেও বিপাকে পড়ে পাকবাহিনী। বিভিন্ন অঞ্চল ক্রমশ মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসে। এমনকি অবরোধের মুখে পড়ে যশোর সেনানিবাস। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি