ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মোদী-শি বৈঠক

ভারত-চীন সম্পর্কের বরফ গলার ইঙ্গিত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৪, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের এই প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বুধবার দু’টি দেশের সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

রাশিয়ার কাজান শহরে ব্রিক্স শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে শি ও মোদীর মধ্যকার বৈঠক ২০২০ সালে তাদের সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তাক্ত সীমান্ত সংঘাতের পর শীতল বৈরিতার বরফ গলার ইঙ্গিত দিয়েছে।

টেলিভিশনে প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে বৈঠকে বসার আগে এই দুই নেতা করমর্দন করছেন। এই বৈঠকের বেশ কিছুদিন আগে তাদের সরকার একটি চুক্তির কথা ঘোষণা করে ‌ যাতে আশা করা হয় যে সংঘাতপূর্ণ সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা হ্রাস পেতে পারে। ২০২০ সালের সংঘাতের পর হাজার হাজার সৈন্য ওই সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক সিসিটিভি বৈঠকের শুরুতে শির বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে বলেছে, “ দু পক্ষের উচিৎ হবে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা, বৈপরীত্য ও মতপার্থক্যকে ভাল ভাবে মোকাবিলা করা এবং পরস্পরের উন্নয়নের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করা”। তিনি বলেন এটা উভয় পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে “ আমরা আন্তর্জাতিক দায়িত্বগুলি আমাদের কাঁধে বহন করবো”।

মোদী বলেন,“ সীমান্তে শান্তি ও স্থিত অবস্থা বজায় রাখা আমাদের অগ্রধিকার হওয়া উচিৎ। পারস্পরিক বিশ্বাস, পারস্পরিক সম্মান ও পারস্পরিক সংবেদনশীলতা আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি হওয়া উচিৎ”।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয় এই দুই নেতা নিশ্চিত করেছেন যে ভারত ও চীনের মধ্যে স্থিতিশীলতা, ভবিষ্যৎ কে বোঝা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিক্রম মিসরি সংবাদদাতাদের বলেন সাম্প্রতিক চুক্তিকে দুই নেতা অনুমোদন দেওয়ায় সীমান্ত বরাবর পরিস্থিতি সহজ হয়ে উঠবে।

মিসরি বলেন,“সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি, সম্পর্কের স্বাভাবিকরণের দিকে ফিরে যাওয়ার একটা জায়গা তৈরি হবে । এখন আমাদের সেই পথ ধরেই হাঁটতে হবে”।

এই সপ্তাহের গোড়ার দিকে ঘোষিত এই চুক্তি হিমালয় অঞ্চলে তাদের সীমান্ত বরাবর বিতর্কিত এলাকার উভয় দিকে তাদের সামরিক বাহিনীকে টহল দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে । ভারতীয় কর্মকর্তাদের মতে এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সীমান্তে সংঘাত বন্ধ করা এবং এটা নিশ্চিত করা যে সংঘাত হলে দেশগুলি, “দ্রুতই তার অবসান ঘটাতে পারে”।

চীন মঙ্গলবার জানায় যে,“ভারতের সঙ্গে এই পরিকল্পনা যথার্থ ভাবে বাস্তবায়িত করার জন্য বেইজিং পরবর্তী পর্যায়ের কাজ করে যাবে”।

গত চার বছরে তাদের কুটনৈতিক ও সামরিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর উভয়ই দেশই বিতর্কিত অঞ্চলগুলি থেকে সৈন্য সরিয়ে নিয়েছে তবে তাতে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে উভয় দেশই, হিমালয় পর্বতে রাস্তা ও অবকাঠামো নির্মাণ আরো জোরদার করতে প্রতিযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। সে সব অঞ্চলে স্থলবাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে জঙ্গি বিমান ও ট্যাংক।

এটা এখনও পরিস্কার নয় যে সীমান্ত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে কীনা, তবে এই চুক্তিকে সামরিক অচলাবস্থা অবসানের দিকে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

ভারতে রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা বুধবারের বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন।

নতুন দিল্লীতে অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের মনোজ যোশি বলেন, “ দু দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।উভয় দেশই এই উত্তাপ কমানোর চেষ্টা করছে তবে এখনও অনেকটা পথ বাকি”।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চীনের সঙ্গে নতুন দিল্লির দূরত্ব, ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমি দেশগুলির সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি