ভারত নিয়ে বিধ্বংসী বক্তব্য জামায়াত আমিরের
প্রকাশিত : ২২:২৩, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা চাই আমাদের প্রতিবেশিরা শান্তিতে থাকুক, আর আমরাই চাই তারা যেন আমাদের অশান্তির কারণ না হোক। কিন্তু মাঝে মধ্যে তারা বাউন্ডারি ক্রস করে, বাংলাদেশের মসনদে কে বসবে, কে কার সঙ্গে জোট বাঁধবে, কে সরকার গঠন করবে তারা বাংলাদেশে এসে তরকারিতে লবণ দেয়। আমরা আগামীতে আমাদের তরকারিকে কাউকে লবণ দিতে দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, আমাদের তরকারি আমরা বানাব। বাংলাদেশের মানুষ কি করবে, এখানে কে ক্ষমতায় আসবে, কে ক্ষমতায় আসবে না এটা বাংলাদেশের মানুষ ঠিক করবে।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুল বড়মাঠে আয়োজিত জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যারা খুন-গুম-চুরি-লুণ্ঠন করেছেন, দেশের ২৬ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তাদের বিচার হতে হবে। আর ঐ টাকাগুলো দেশে ফেরত আনতে হবে। এগুলো জনগণের টাকা, ফেরত এনে জনগণের কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, এখন আওয়ামী লীগ আবার হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, আবার তারা ফিরে আসবেন- দেশ দখল করবেন। আবার আগের মত তারা তান্ডব চালাবেন, বলে- যে কয়েকদিন বাঁচার বেঁচে নাও, আবার আসতেছি, আবার দেখা হবে! আত্মস্বীকৃতি খুনী, খুনের হুঙ্কার দিয়েই চলেছে। আমরা তাদেরকে বিনয়ের সাথে বলতে চাই এই অধ্যায় ক্লোজ।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরশাসকরা পালিয়ে গেলে আর ফিরে আসে না। বিশ্বের অনেক স্বৈরশাসক পালিয়ে গেছে, আর কেউ ফিরে আসতে পারেনি। আপনারা মানুষের সান্ত্বনার জন্য যার বলতে চান বলুন, বাংলাদেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না। অনেক যন্ত্রণা আমাদের ওপর করা হয়েছে, চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, জুলুম করা হয়েছে। দেশের স্বার্থে আমরা সবগুলো বুকে চেপে দেশটাকে সামনের দিকে সবাই মিলে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে অনেক আওয়াজ, গুঞ্জন, অনেক বিভক্তির কথা, অনেক বিষ ছড়ানো কথা শুনেছি। আমি প্রশ্ন করতে চাই যারা এই চেতনার কথা বলে, সর্বশেষ ঘটনা এবারকার মহান বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এটাকে ভারতের বিজয় দিবস দাবি করে টুইপ করেছেন; তিনি তার দেশের সৈনিকদের ও দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একটা শব্দ নিয়ে বাংলাদেশ নামটা নিয়ে উচ্চারণ করেননি। আপনাদের চেতনা কোথায় ছিল? এই বিজয় বাংলাদেশের না ভারতের? বাংলাদেশের যদি বিজয় হয়ে থাকে তাহলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই বিজয় তাদের বলে দাবি করে আপনারা চুপ কেন? আপনাদের চেতনা কোথায় যায় তখন?’
জামায়াত আমির বলেন, সীমান্তে যখন ফেলানীর লাশ ঝুলে থাকে তখন আপনাদের চেতনা কোথায় থাকে? দিনের পর দিন যখন নিরীহ মানুষকে বর্ডারে হত্যা করা হয় তখন আপনাদের মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হয়না। বরং আপনাদের একসময়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিল- সীমান্তে যারা বাংলাদেশি মারা যায় তারা দুস্কৃতিকারী। লজ্জা, জাতীয় লজ্জা, আপনারা এই দেশের মন্ত্রী হয়ে ভিন্ন দেশের গান করেন। কারণ আপনার মাথা ভিন্ন জায়গায় বন্ধ করে রেখেছেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন প্রধানের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিম প্রমূখ।
এসএস//
আরও পড়ুন