‘ভালো আর্থিক প্রতিবেদন দিতে পারে ভালো আইপিও’
প্রকাশিত : ১৭:৩৬, ২৩ জানুয়ারি ২০২০
আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতার অভাব শেয়ারবাজারকে ভোগাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন। তিনি বলেন, আজকে বাজার যে পরিস্থিতিতে আছে, তাতে সহায়ক শক্তিগুলো খুবই প্রয়োজন। আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতার জায়গায় ভয়াবহ সাফার (ভোগা) করছি। ভালো মানের আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) বলে কিছু নেই। ভালো আর্থিক প্রতিবেদনই ভালো মানের আইপিও দিতে পারে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভের (জিআরআই) সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ডিএসইর ট্রেনিং একাডেমি আয়োজিত ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং কর্পোরেট ইমপ্যাকট থ্র ডিসক্লোজার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, আজকের বাজার পরিস্থিতিতে আমরা যদি আমাদের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারি এবং প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে অ্যাকাউন্ট তারল্য যেগুলো, অ্যাকাউন্টিং প্রেজেন্টেশনগুলো, আর্থিক প্রতিবেদনের কোন খাত কিভাবে প্রেজেন্ট করার কথা, রেশিওনালাইজ শুধু বিনিয়োগকারী বুঝলে হবে না, সাংবাদিকরা যদি বুঝতে পারে তাহলে কিন্তু তারা প্রসপেক্টাস আসলে বিচার বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট দিতে পারবে।
তিনি বলেন, আইপিও আসার পরে এগুলো নিয়ে কথা বললে আসলে কিন্তু আইপিওকে বাঁচানো যায় না। আইপিও আসার আগেই তাদের এই বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্টগুলো একটু কষ্ট করে দাঁড় করানো যায় তাহলে আমরা সবাই উপকৃত হবো।
ডিএসইর এই পরিচালক বলেন, বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর একাউন্টটিং প্রেজেন্টেশন সমমানের করা দরকার। পৃথিবীর সকল দেশেই অডিট রিপোর্টগুলো বোধগম্য হলে শেয়ারবাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিনিয়োগকারীদের একমাত্র প্রান্তিই কিন্তু ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট তাদের হাতে দেয়া।
আমরা সাদামাটা যে রিপোর্ট উপস্থাপন করি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটার একটা আন্তর্জাতিক মান ও সমমান তৈরির চেষ্টা। গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভের মূল উদ্যোগ হচ্ছে অ্যাকাউন্টিং রিপোর্টিং যেন সমমানের হয়, আন্তর্জাতিক মানের হয় এবং সবার জন্য বোধগম্য হয়। তাহলে হবে কি বাংলাদেশে যে অ্যাকাউন্টসটা প্রেজেন্ট হবে, আমেরিকাতেও যেটা হবে। আমেরিকান একজন ব্যক্তি কিন্তু বাংলাদেশের রিপোর্টটা বুঝতে পারবে।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে অডিটররা যে রিপোর্টটা করে, তাদের যে প্রেজেন্টেশন তা কিন্তু অনেক সময় আন্তর্জতিক মানসম্পন্ন হয় না। বড় বড় অডিট ফার্মে যারা যুক্ত থাকে তাদের রিপোর্টের যে স্ট্যান্ডার্ড, নিম্ন মানের অডিট রিপোর্টের মান কিন্তু এক রকম হয় না। তিনি বলেন, বিএটিবিসির রিপোর্ট যেভাবে পাবেন, মডার্ণ ডাইংয়ের রিপোর্ট কিন্তু সেভাবে পাবেন না। এটা হচ্ছে কোয়ালিটি অব দ্যা রিপোর্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি অব দ্যা অডিটর্স অ্যান্ড দ্যা কোয়ালিটি অব দ্যা প্রেজেন্টেশন অব দ্যা অডিট রিপোর্টস। এজন্য অডিটরদের রিপোর্টগুলো আন্তর্জাতিক মানের এবং সমপর্যায়ে আনতে হবে। এতে করে সব ভাষার লোকই এগুলো বুঝতে পারে।
এখন নানা রকমের অ্যাকাউন্টিং প্রেজেন্টেশন হয় উল্লেখ করে মান্নান ইমন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডে যখন একটা গ্লোবাল প্রেজেন্টেশন সিস্টেম আসবে তখন আপনি কিন্তু একটির সাথে অন্যটির পার্থক্য বুঝে ফেলবেন। যেকোনো রিপোর্টের ভালোমন্দ বিচার করেন আপনারা। আপনাদের মাধ্যমেই বাজারের ভুলত্রুটি এবং ভালোমন্দ বেরিয়ে আসে। আপনারা হচ্ছেন বাজারের মূল সহায়ক শক্তি। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো ভুলত্রুটি বের করে আনা সম্ভব না।
তিনি আরো বলেন, আমরা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ড পরিচালক, ব্রোকার বা ডিলার যতই সারাদিন চিৎকার করি যেসব বিনিয়োগকারী আমাদের চারপাশে থাকে তারা হয়তো জানতে পারে কিন্তু আপনাদের লেখার মাধ্যমে ৩০ লক্ষ বিনিয়োগকারী সেটা সহজেই জানতে পারে। সুতারাং আপনি যত সুন্দরভাবে রিপোর্টিং সিস্টেমটা বুঝবেন, তখন বুঝবেন ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টংয়ের সাথে আমাদের রিপোর্টিংয়ের পার্থাক্য কতটা বেশি।
আরকে//
আরও পড়ুন