ভিসা অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামে বাংলাদেশের স্টার্টআপ টালিখাতা
প্রকাশিত : ১৮:২৬, ১০ মে ২০২২ | আপডেট: ২০:৪৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০২২
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল পেমেন্ট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ভিসা চলতি বছর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ভিসা অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামের জন্য বাংলাদেশ থেকে ডিজিটাল পেমেন্ট স্টার্টআপ টালিখাতা-কে নির্বাচিত করেছে।
এ অঞ্চলজুড়ে প্রধান পাঁচটি স্টার্টআপের একটি নির্বাচিত গ্রুপে যোগদান করার মাধ্যমে টালিখাতা বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাইক্রো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ওয়ালেট এবং ক্রেডিট সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে একটি অগ্রণী ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এটি ছোট আকারের ব্যবসা পরিচালনার জন্য ক্রেডিট লাইন এবং কার্যকরী মূলধন সংগ্রহ ও নতুন উপায় উদ্ভাবনের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে ভূমিকা রাখবে।
আগামী ছয় মাসে স্টার্টআপগুলো ভিসার সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করবে; যার মাধ্যমে তারা ভিসার বিস্তৃত ব্যাংক, মার্চেন্ট, সরকার এবং ভেঞ্চার অংশীদারদের নেটওয়ার্কে নানা বাণিজ্যিক সুযোগ তৈরিতে কাজ করবে।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে টালিখাতা ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক মূলধন সংগ্রহের জন্য একটি ভিসা ভার্চুয়াল কার্ড ইস্যু করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব করবে। ভিসা ভার্চুয়াল কার্ড ক্রেডিট লাইন (স্বল্পমেয়াদী কার্যকরী মূলধন ঋণ) হিসেবে কাজ করে, যা এমএসএমই দ্বারা অনুমোদিত ও তালিকায় অন্তর্ভূক্ত সরবরাহকারী/ এফএমসিজি কোম্পানিগুলোতে সরাসরি অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবহার করা যায়।
এ বিষয়ে টালিখাতার প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ড. শাহাদাত খান বলেন, “ভিসা অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রাম ২০২২ এ অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। ভিসা ও স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সাথে যৌথ উদ্যোগে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য উদ্ভাবনী ক্রেডিট প্রোডাক্টগুলোর বিকাশে কাজ করছি। ভিসা রেলস এবং টালিখাতা লেনদেন ডেটা এবং ক্রেডিট স্কোরিংয়ের সুবিধা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের ১ কোটি ১০ লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দ্রুত এবং সহজে ডিজিটাল ক্রেডিট ব্যবহারের সুবিধা প্রদান করতে পারবো।”
এ নিয়ে ভিসা’র বাংলাদেশ, নেপাল ও ভূটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সৌম্য বসু বলেন, “বাংলাদেশের বিস্তৃত ও প্রবৃদ্ধিশীল ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে টালিখাতার মতো উদ্ভাবনী সমাধান দরকার। তাদের সহযোগিতা প্রদান এবং পেমেন্ট পরিশোধের ক্ষেত্রে ভিসার অভিজ্ঞতা সম্প্রসারিত করতে পেরে; পাশাপাশি, বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে এ ধরনের ডিজাইন সল্যুশনের অভিজ্ঞতা প্রদানে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী। ভ্যালু চেইনের ডিজিটালাইজেশনকে ত্বরাণ্বিত ও অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে এক সাথে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি আরো বলেন, “এ অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামের দ্বারা ভিসা স্টার্টআপ কমিউনিটিকে সহায়তা করার মাধ্যমে তাদের মূল প্রতিবন্ধকতাগুলো উত্তরণে সাহায্য করবে; যা তাদেরকে স্থানীয় বাজার ও এ অঞ্চলে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। গত বছর বৈশ্বিকভাবে ৩০ শতাংশেরও অধিক ফিনটেক প্রতিষ্ঠান ভিসা ক্রিডেনশাল ইস্যু করেছে; যা তাদের পেমেন্ট ভলিয়্যুমকে প্রায় দ্বিগুণ করেছে। ভিসার সক্ষমতা এবং স্টার্টআপগুলোর দক্ষতার সাথে আমাদের গ্লোবাল নেটওয়ার্কে সমন্বয় করে আমরা একসাথে নতুন উদ্ভাবনী অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারবো এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে আরও ব্যক্তি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করতে পারবো।”
কোভিড-১৯ মহামারি একটি ডিজিটাল ভবিষ্যতমুখী বিশ্বের দিকে সবার যাত্রাকে ত্বরান্বিত করেছে। ২০২২ সালেও এ প্রোগ্রামের স্টার্টআপগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৃষ্ট উল্লেখযোগ্য কিছু আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সমস্যা মোকাবিলা করবে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুুড়ে অবস্থিত অন্য চারটি প্রতিষ্ঠান যারা এই প্রোগ্রামে টালিখাতার সাথে যোগ দিবে তাদের মধ্যে রয়েছে:
মানিট্রি ও পারফিওস হলো যথাক্রমে জাপান ও ভারতীয় ফাইন্যান্সিয়াল ডেটা সমষ্টিকরণ প্ল্যাটফর্ম, যারা ডেটা সমষ্টিকরণ ও অ্যানালেটিকসের ক্ষেত্রে বেশ দক্ষ। এ প্রতিষ্ঠানগুলো এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলগুলোতে ঝুঁকি ও অর্থ বিষয়ক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে উন্মুক্ত ডেটা পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।
ব্যাংক, মানি সার্ভিস ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ফিনটেক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহজে ও বিস্তৃত পরিসরের লেনদেনের জন্য একটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ও মুদ্রা বিনিময়ের প্ল্যাটফর্ম হলো সাইমঞ্জ।
ট্রিপলএ সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক স্টার্টআপ, যারা হোয়াইট-লেভেল ক্রিপ্টো কারেন্সি সল্যুশন প্রদান করে। এ প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটাল কারেন্সি ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন পেমেন্ট ইনোভেশন নিয়ে কাজ করছে।
২০২০ সালে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রাম চালু করে ভিসা। যেসব স্টার্টআপ স্থানীয় বাজারে সফলভাবে নানা ধরনের সল্যুশন চালু করেছে এবং এখন নিজেদের প্রবৃদ্ধিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সচেষ্ট রয়েছে তাদের জন্য প্রোগ্রামটি ডিজাইন করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রোগ্রামটি গ্রোথ-স্টেজ ফিনটেক, যারা সিরিজ এ ও এ’র ওপরে রয়েছে এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ও এ অঞ্চলে চলমান কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতিশীল, তাদের প্রবৃদ্ধিতে কাজ করে।
এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের স্টার্টআপ কমিউনিটির জন্য ভিসার পরিচালিত বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের অংশ হলো দ্য অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রাম।
আরকে//
আরও পড়ুন