ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভূমিধসের ৯ দিন আগে পাওয়া যাবে পূর্বাভাস (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৮, ৩ নভেম্বর ২০২২

ভূমি কিংবা পাহাড় ধসে হতাহতের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস দেয়ার কোন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। বৃষ্টিপাতের পরিমাণের ভিত্তিতে ভূমিধসের সতর্কতা দিয়ে থাকে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এই অবস্থা শেষ হতে যাচ্ছে। কমপক্ষে ৯ দিন আগে ভূমিধসের পূর্বাভাস দেয়া যাবে এমন একটি পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা কারিতাস।

জলবায়ুর পরিবর্তন, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে এদেশ দুর্যোগপ্রবণ। ভূমিধসের বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে পাহাড়ে। এমনকি, বিদ্যমান তথ্যে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোও চিহ্নিত। 

ভূমিক্ষয়, গাছপালা উজার, পানিরস্তর নীচে নামা, অপরিকল্পিত বসতির বাড়তি চাপে, বৃষ্টি বেশি হলেই ঘটে ধসের ঘটনা। বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই সময়গুলোতে অতিবৃষ্টিপাত হয় দেশে। 

বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের গবেষণায় দেখা গেছে, ১ দিনে ১শ’ মিলিমিটার, ৩ দিনে ২শ’ ৫০ মিলিমিটার এবং ৭ দিনে ৩শ’ ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। 

কারিতাসের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান আলেক্সজান্ডার ত্রিপুরা বলেন, “স্থানীয়রা জানেন যে কোন কোন জায়গায় ঘর করা যাবে না। কারণ তারা যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছেন। এখানে ঘর-বাড়ি করলে তারা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।”

ক্যাথলিক রিলিফ সার্ভিসের কান্ট্রি ম্যানেজার স্নিগ্ধ্যা চক্রবর্তী বলেন, “বাংলাদেশের ওয়ার্নিং সিস্টেম এখনও রিসার্চের পর্যায়ে আছে। পাহাড়ে যারা আদিবাসী আছেন বা ছিলেন তারা বরাবর পরিবেশ রক্ষা করে আসছেন।”

ফোরওয়ার্ন বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল হক বলেন, “ওয়ার্ল্ড মেকানিজমের বিভিন্ন মডেল ফোরকাস্টিং সিস্টেম আছে, সেখান থেকে ১০ দিনের একটি ফোরকাস্টিং পাওয়া সম্ভব। সেই ফোরকাস্টিংয়ের উপর ভিত্তি করে ৮-৯ দিন আগে থেকে তারা কি কি ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারেন, কি কি কাজ করতে পারেন সেটা সংগ্রহ করে এই কমিউনিটির সঙ্গে শেয়ার করছি।”

তবে সংবেদনশীল এলাকায় জনগোষ্ঠির এ সম্পর্কিত স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে আগে। স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ‘রেইন গজ’ এ বৃষ্টির পানি নিয়মিত পরিমাপ করতে হবে। 

বৃষ্টির পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রার বেশি হলে কম পক্ষে নয় দিনের মধ্যে দুর্ঘটনা বেশি হয় বলে প্রমাণ মিলেছে গবেষণায়। কালক্ষেপণ না করে সর্তকতার বার্তা প্রচার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ গবেষকদের। 

আশরাফুল হক বলেন, “এখন তারা আগে থেকেই জানতে পারছে কোন কোন জায়গা ঝুঁকিতে, আগে থেকে জানতে পারছে কবে থেকে বৃষ্টিপাত হবে এবং কি পরিমাণ বৃষ্টি হবে, হলে কি কি ধরনের কাজ করতে হবে- এই জিনিসগুলো আগে ছিল না।”

বার্তা পৌঁছাতে হবে জনগোষ্ঠির নিজস্ব মানুষ দিয়ে নিজস্ব ভাষায়। ক্ষেত্র বিশেষে তথ্যের আদান প্রদান হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গ্রুপেও। আসন্ন বিপদের শঙ্কার কথা মানতে হবে মানুষকেও। 

স্নিগ্ধ্যা চক্রবর্তী বলেন, “প্রথম পিলারটাই হচ্ছে কমিউনিটি বলান্টিয়ার্স। বাংলা তো আছেই এর সঙ্গে আরও তিনটি ভাষায় তাদেরকে সবকিছু বোঝানো হচ্ছে। তারা যখন রিলিজিয়াস লিডার বা ট্রাডিশন লিডারের কাছ থেকে শোনেন তখন তারা অনেক বেশি সেটাকে পালন করেন।”

দেশে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার পূর্বাভাসের সতর্কতার ব্যবস্থা থাকলেও ভূমিধসের মত প্রাকৃতি দুর্যোগের পূর্বাভাসে কোন স্থায়ী ও আইনগত স্বীকৃত কোন ব্যবস্থা এখনও নেই। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি