ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, প্রাথমিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা
প্রকাশিত : ১২:১৪, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
শীত মৌসুম শুরুর আগেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। পরপর তিনদিনে মারাত্মক পর্যায়ে চলে গিয়েছে রাজধানীর বাতাসের গুণমান। বন্ধ করা হয়েছে দিল্লির সমস্ত প্রাথমিক স্কুল। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে গোটা তাজমহল কার্যত অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে কুয়াশার চাদরে। তাজমহল দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরেছেন পর্যটকরা।
অবশ্য স্কুল বন্ধ হলেও শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কাজ চলবে অনলাইনে। এছাড়া ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন দিল্লির পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) থেকেই সকল প্রাইমারি স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। বিবিসি বলছে, দিল্লি এবং আশপাশের শহরগুলো ব্যাপক মাত্রায় দূষণের কবলে পড়েছে যেটাকে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও দিল্লির বাতাসে সূক্ষ্ম কণার পরিমাণ নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ৫০ গুণেরও বেশি ছিল।
ভারতের রাজধানীর মুখ্যমন্ত্রী অতিশি মারলেনা সিং সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, শহরটিকে ঘিরে থাকা ঘন ধোঁয়াশার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দিল্লির সব প্রাথমিক স্কুলে ক্লাস অনলাইনে চলবে।
মূলত তাপমাত্রা হ্রাস, ধোঁয়া, ধূলিকণা, বাতাসের কম গতি, যানবাহন থেকে ধোঁয়া নির্গমন এবং ফসলের খড় পোড়ানোর কারণে শীতকালে দিল্লি এবং উত্তর ভারতের রাজ্যগুলো প্রতি বছর ধোঁয়াশার সম্মুখীন হয়ে থাকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দিল্লির দূষণ ঘিরে উদ্বেগের মধ্যেই শুক্রবার থেকে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে ভারতের এই রাজধানীতে। দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মানের অত্যন্ত অবনতি হওয়ায় এই কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। দূষণ মোকাবিলায় শুক্রবার সকাল ৮টা থেকেই কার্যকর হতে চলেছে তৃতীয় স্তরের সতর্কতা (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৩ বা জিআরএপি ৩)। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণও জারি করা হচ্ছে এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপের আওতায়।
জিআরএপি ৩ যখন কার্যকর হওয়া মানে এখনই প্রয়োজন নেই, এমন নির্মাণকাজ ও ভাঙচুরের কাজ বন্ধ থাকবে। বিএস ৩-এর নিচে থাকা পেট্রলচালিত গাড়ি এবং বিএস ৪-এর নিচে থাকা ডিজেলচালিত গাড়ি দিল্লির রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না। একই নিয়ম কার্যকর থাকবে দিল্লি–সংলগ্ন উত্তর প্রদেশের গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, গাজিয়াবাদ ও গৌতম বুদ্ধনগরে।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৬টার সময়ে দিল্লির আনন্দ বিহারে বাতাসের AQI পৌঁছে গিয়েছিল ৪৪১ পর্যন্ত। এছাড়াও বাতাসের মান খুব খারাপ পর্যায়ে গিয়েছে বাওয়ানা (৪৫৫), দ্বারকা সেক্টর (৪৪৪) এবং জাহাঙ্গিরপুরী (৪৫৮)তে। তার জেরে গত দু-দিন ধরে ব্যাহত হয়েছে বিমান চলাচল। দূষণের মাত্রা মারাত্মক হওয়ায় একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে দিল্লির প্রশাসন।
এদিকে, একাধিক যানবাহন বন্ধ রাখায় প্রতিদিন ৪০টির বেশি মেট্রো লছে দিল্লিতে। দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেছে যে, কালো ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকে গিয়েছে তাজমহল। দর্শনার্থীরা তাজমহলের এক ঝলকও দেখতে পাননি কুয়াশার চাদর ভেদ করে।
এসএস//
আরও পড়ুন