মধ্যম আয়ের দেশ গড়তে চাই বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি
প্রকাশিত : ১৭:৫৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৮:০১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে দরকার বসায়িক প্রবৃদ্ধি। আর ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজন আমদানি-রফতানির জন্য সহজলভ্য পরিবহন ব্যবস্থা। তবে সহজ পরিবহণের প্রধান অন্তরায় বন্দরের নানা সমস্যাকে চিহ্নিত করে বক্তারা বলছেন, বন্দরের সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারলেই কেবল মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব। অন্যথায় তা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে বলেও মত দেন তারা।
মঙ্গলবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, পরিবহন ব্যবস্থা যারা পরিচালনা করেন, তাদের এক ধরণের একচেটিয়া ক্ষমতা থাকে। তারা যেন ব্যবসায়ীদের ওপর এই একচেটিয়া ক্ষমতা প্রয়োগ না করে, এক্ষেত্রে রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের একটা ভূমিকা রাখতে হবে। এসময় তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের সব সুপারিশ রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়না। তবে রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়ে যে কথা বলা হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি নূর- ই আলম চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বন্দরের উপর নির্ভরশীল। তারা অন্য কোন বন্দরে যেতে চায় না, ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট লেগেই থাকে। অথচ সরকার পায়রা বন্দরেও ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সেগুলো কাজে লাগাতে পারেননি।
সেমিনারে ব্যবসায়ীদের তুলে ধরা বন্দরের নানাবিধ সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও সিঙ্গাপুরে অনেকগুলো বন্দর থাকলেও সেখানে একটাই কর্তৃপক্ষ, একটাই আইন। ফলে তাদের বন্দরে পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা কম হয়। ব্যবসায়ীদের কোন ভোগান্তি পোহাতে হয় না। বাংলাদেশেও এনন একটিই আইন ও কর্তপক্ষ দরকার।
সেমিনারে নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিদ্যমান সমস্যা দূরীকরণের ওপর জোর দিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে। নদীপথের যোগাযোগের উপর গুরুত্ব দিয়ে এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সমস্যা মোকাবেলায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যম আয়ের দেশে উত্তীর্ণ কঠিন হয়ে পড়বে। যদি জাহাজ জটসহ বন্দরের অন্যান্য সমস্যাগুলো অচিরেই দূর করা না যায়, তাহলে ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে সেটাও কঠিন হয়ে যাবে। ।
তিনি আরো বলেন, এখনও পর্যন্ত আমাদের পণ্যবোঝায় জাহাজ বন্দরে ১৫ থেকে ২০ দিন আটকে থাকে। আমাদের আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে বন্দরগুলোর এসব সমস্যা দূর করতে হবে।
তিনি বলেন, পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে বন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের স্বাধীন হওযার সুযোগ দিতে হবে। ব্যবসায়ীরা যেন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে তারা কোন বন্দর ব্যবহার করবেন। আর কোনটা ব্যবহার করবেন না।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআইয়ের জাতীয় অবকাঠামো বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সমন্বয়ক ইয়াসের রিজভী। অন্যান্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন পানগাঁও আইল্যান্ড কনটেইনার টারমিনালের ম্যানেজার আহমেদুল করিম চৌধুরী, মার্কস এন্ড স্পেন্সারের কান্ট্রি হেড স্বপ্না ভৌমিক প্রমুখ।
আরকে/ এমজে
আরও পড়ুন