ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মনের বিষ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৮, ২১ জুলাই ২০২১

Ekushey Television Ltd.

দৃষ্টিভঙ্গি, নিয়ত বা প্রোগ্রাম দ্বারাই মন নিয়ন্ত্রিত আর মস্তিষ্ক পরিচালিত হয়। মস্তিষ্কের কাজের ফলাফলও নিরূপিত হয় এই দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রোগ্রাম দ্বারা। দৃষ্টিভঙ্গি বা প্রোগ্রাম দুধরনের। এক, আত্মবিনাশী। দুই, আত্মবিকাশী। আত্মবিনাশী প্রোগ্রাম ধীরে ধীরে একজন মানুষকে অবক্ষয় ও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আর আত্মবিকাশী প্রোগ্রাম মেধা ও প্রতিভাকে বিকশিত করে। জীবনে আনে প্রশান্তি প্রাচুর্য ও সাফল্য। 

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, আমাদের অধিকাংশের চিন্তা-জগতের শতকরা ৭০-৮০ ভাগই দখল করে রাখে রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা, দুঃখ, অনুতাপ, অনুশোচনা, কুচিন্তা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা, হতাশা ও নেতিবাচক চিন্তারূপী আত্মবিনাশী প্রোগ্রাম। এই আত্মবিনাশী প্রোগ্রাম অধিকাংশ মানুষের জীবনকেই ধীরে ধীরে করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। আমরা যদি এই প্রক্রিয়াকে উল্টে দিতে পারি অর্থাৎ ৭০-৮০ ভাগ চিন্তাকেই আত্মবিকাশী ইতিবাচক চিন্তায় পরিণত করতে পারি, তাহলেই আমরা মনের শক্তিকে ফলপ্রসূভাবে কাজে লাগাতে পারব। 

ইতিবাচক চিন্তাকে একবার ৭০ ভাগে উন্নীত করতে পারলে নেতিবাচক চিন্তা ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাবে। এরপরও যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তবে তার প্রভাব এতই হ্রাস পাবে যে, তা ইতিবাচক চিন্তার প্রাধান্যের কারণে আপনার জন্যে ক্ষতিকর কিছু করতে পারবে না।

আত্মবিনাশী চিন্তার বিনাশ সাধন প্রথমে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। এমনকি নেতিবাচক ও ইতিবাচক চিন্তার অনুপাত ৫০:৫০ করাও মনে হতে পারে দুঃসাধ্য। কারণ আমরা নেতিবাচক চিন্তায় এমন অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে, এটা আমাদের চরিত্রের অঙ্গে পরিণত হয়েছে। তবুও একটু সচেতন প্রচেষ্টা চালালে ধাপে ধাপে আপনি এই নেতিবাচক চিন্তাকে নির্মূল করতে পারবেন। একবার এ প্রক্রিয়া শুরু করলে আপনার কাছে তা এত সুন্দর ও মজার মনে হবে যে, আপনি তাকে যুক্তিসঙ্গত পরিণতির দিকে নিয়ে যাবেন। আপনার মধ্যে এমন একটা তৃপ্তি আসবে, যা আপনি ইতিপূর্বে অনুভব করেন নি। তাহলে এবার শুরু করা যাক। 
অনুশীলনী-১

বিষণ্নতা বা হতাশায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব আজেবাজে চিন্তা মাথায় ভিড় জমাচ্ছে! ভেতরে ক্ষোভ, ঘৃণা বা প্রতিহিংসার আগুন জ্বলছে! ব্যর্থতার গ্লানিতে ভুগছেন! অনুশোচনা আপনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে! ঠিক আছে, ঘাবড়াবার কিছু নেই। হতাশায় তলিয়ে যান। কিন্তু সময় পাচ্ছেন ঘড়ি দেখে মাত্র পাঁচ মিনিট! পাঁচ মিনিট পর্যন্ত যত নেতিবাচক চিন্তা করতে পারেন করুন। 

তারপরই নেতিবাচক চিন্তা বন্ধ করে দিন। নেতিবাচক চিন্তার ওপর সাঁড়াশি আক্রমণ চালান। হতাশাকে ছিন্নভিন্ন করে দিন। কারণ এ এক কালসাপ। দুধকলা দিয়ে পুষলে আর প্রশ্রয় দিলে আপনাকেই ছোবল দিয়ে শেষ করে দেবে। তাই বেড়ে ওঠার আগে ভ্রূণেই বিনষ্ট করুন একে। 

হাঁ পারতেই হবে। আর আপনি তা পারবেন। কারণ বিষণ্নতা মানেই অশান্তি। আর অশান্তিতে আপনার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ পৃথিবীতে এমনিতেই প্রচুর অশান্তি রয়েছে। আপনি আরেকটা অশান্তি সৃষ্টি হতে না দিলে নিজের যেমন উপকার করবেন তেমনি তা আপনার আপনজন ও সহকর্মীদের জীবনকেও কিছুটা স্বস্তি ও শান্তি দেবে। আর এই ইতিবাচক প্রভাবের ফল অন্যরাও ভোগ করবে। 

বিজ্ঞ জ্ঞানীরা সবসময় চিন্তাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখেন আর আপনিও তা-ই চান। কিন্তু দুশ্চিন্তাকে পাঁচ মিনিটের চেয়ে বেশি বাড়তে দিলে দুশ্চিন্তাই আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। আর তাই উল্টোটা করার জন্যে অর্থাৎ নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে চিন্তার চ্যানেল পাল্টে দিন। 

রেডিও-টিভির চ্যানেল পাল্টানোর সাথে সাথে যেমন ভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে, আপনিও ঠিক তেমনি চিন্তাকে চ্যানেল পাল্টে নতুন খাতে নিয়ে যান। ঘরে বসে থাকলে জানালা দিয়ে বাইরে তাকান। দেখুন না বাইরে কী হচ্ছে? জানালার ধারে কি কোনো গাছ আছে? গাছে কি কোনো কাঠঠোকরা গর্ত করার চেষ্টা করছে? বা কোনো দোয়েল কি লেজ নাচাচ্ছে? বা কোনো টুনটুনি দম্পতি কি পিঠা তৈরির ব্যাপারে শলাপরামর্শ করছে? বা কোনো পাখি কি নীড়ে ফিরে বাচ্চাদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছে? এর যে-কোনো একটির দিকে মনোযোগ দিন। এদের গতি ও রঙ উপলব্ধি করুন।

কী বললেন? আপনার জানালা দিয়ে কোনো গাছ দেখা যায় না! ঠিক আছে চারতলায় জানালার ধারে দাঁড়িয়ে নিচের রাস্তায় দেখুন না জীবনের গতি। রাস্তার যে-কোনো দিকেই চিন্তাকে প্রসারিত করতে পারেন। আর জানালার কাছে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে যদি অসুবিধা থাকে তবে ভেতরে বসেই তাকান না আকাশের দিকে। 

রোদ হচ্ছে, না বৃষ্টি হচ্ছে? মেঘ আছে কী নেই? মেঘ থাকলে প্রতিটি মেঘকেই একটা চেহারা হাত পা বা অবয়ব দিন না! শিল্পীর মতো মেঘগুলোকে রঙে রঞ্জিত করে ফেলুন। কবির মতো কথা বলুন মেঘের সাথে। একসময় মজা পেয়ে নিজেই হেসে উঠবেন হো হো করে। আর এই হাসিই বিষণ্নতা ও হতাশার বিরুদ্ধে সবচেয়ে সফল অস্ত্র!

ঘরের বাইরে থাকা অবস্থায় বিষণ্নতায় আক্রান্ত হলে তাকান না চারপাশে। প্রত্যেকের মুখের দিকে তাকান, পোশাকের দিকে তাকান, এমন কাউকে অবশ্যই পেয়ে যাবেন, যার অবস্থা আপনার চেয়েও করুণ। আপনার কী নেই তা নিয়ে ভাবা একেবারেই অর্থহীন। আপনার কী আছে তা নিয়ে ভাবুন। কতটুকু আছে তা ভাবুন। 

তারপরে ভাবুন কী কী দরকার। পরিকল্পনা করুন কীভাবে তা পাওয়া যেতে পারে। মনকে বলুন পাওয়ার উপায় চিন্তা করে খুঁজে বের করতে। হতাশ ব্যক্তি সবসময় চিন্তা করে তার গ্লাস অর্ধেক খালি আর সফল ব্যক্তি সবসময় ভাবে তার গ্লাস অর্ধেক ভর্তি। আর এই ইতিবাচক মনোভাবই তাকে আরো সাফল্যের পথে নিয়ে যায়।

চিন্তার চ্যানেল পরিবর্তন করে আপনি নেতিবাচক চিন্তাকে প্রথম পাঁচ মিনিট সময় দেবেন। ক্রমান্বয়ে সময় কমাতে থাকবেন। চার মিনিট। তার কিছুদিন পর তিন মিনিট। তারপর দুই মিনিট। 

তারপর এমন সময় আসবে যখন বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তা আসার সাথে সাথেই ইতিবাচক মনোভাব দিয়ে তাকে অকেজো বা নিউট্রালাইজ করে দিতে পারবেন। আপনি হয়ে উঠবেন আত্মনিয়ন্ত্রিত এক শক্তিমান ব্যক্তিত্ব। কারণ একজন হতাশ ব্যক্তি সবসময় নিজেকে বিড়ম্বিত, বঞ্চিত মনে করে। আর একজন আশাবাদী ব্যক্তি সবসময় মনে করে আমিই আমার নিয়ন্তা।
আত্মবিনাশী চিন্তা প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা

নেতিবাচক চিন্তা ও অনুভূতি থেকে রাগ ক্ষোভ ক্রোধ দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়ার আরেকটি পথ হচ্ছে তা প্রকাশ করা। সাধারণত আমরা আমাদের নেতিবাচক চিন্তা বা কুচিন্তার শতকরা ৯০ ভাগ কখনো প্রকাশ করতে পারি না। কারণ একটাই- 'লোকে শুনলে কী বলবে!' চিন্তার প্রকাশ মনকে হালকা করে। প্রকাশ যত তীব্র হয়, মন তত দ্রুত হালকা হয়ে ওঠে। 

শিকারীর হাতে সঙ্গী বা শাবক নিহত হলে পশুর যে হৃদয় নিংড়ানো চিৎকার তা যে-কাউকে ব্যথিত করবে। কিন্তু সেই চিৎকারের পরই দ্রুত সব ভুলে গিয়ে সে জীবনকে নতুন করে গড়ার উদ্যোগ নেয়। কোনো দুঃখ পেলে কেউ যদি আর্তচিৎকার দিয়ে কাঁদতে পারেন, তাহলে তিনি সহজে সে দুঃখ কাটিয়ে উঠতে পারবেন। আর যিনি কাঁদতে পারেন না, তিনি সহজে দুঃখ ভুলতে পারেন না।

মনের বিষ ঝেড়ে ফেলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে চমৎকার একটি গল্প আছে। এক গ্রামে এক সাপ বাস করত। ছেলেমেয়েরা খেলতে বেরুলেই সাপ তাদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলত। গ্রামের মুরুব্বীরা সাপের সাথে দেখা করে অনুরোধ করলেন সে যেন ছেলেমেয়েদের না কামড়ায়। সাপ তাদের অনুরোধ রক্ষা করল এবং পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ সবকিছু ঠিকঠাক চলল। ছেলেমেয়েরা মাঠে খেলাধুলা শেষে প্রতি সন্ধ্যায়ই খুশি মনে বাসায় ফিরে আসতে লাগল।

মুরুব্বীরা এতে খুশি হয়ে সাপকে ধন্যবাদ দিতে গেলেন। কিন্তু গিয়ে দেখলেন যে, সাপ বিধ্বস্ত অসুস্থ হয়ে নিজে নিজেই গিঁট পাকিয়ে পড়ে আছে। তারা সাপকে জিজ্ঞেস করলেন, ব্যাপার কী? কী হয়েছে তোমার? সাপ বিরস কণ্ঠে জবাব দিল, 'তোমরাই তো আমাকে ছেলেমেয়েদের কামড়াতে মানা করেছ।' মুরুব্বীরা জবাব দিলেন, 'তা ঠিক! আমরা কামড়াতে না করেছি, কিন্তু ফোঁস ফোঁস করতে তো না করি নি।'

সাপের এ গল্প থেকে ক্রোধ, ঘৃণা, ক্ষোভ এগুলো মন থেকে প্রকাশ করে ফেলা যে কত জরুরি তা আমরা বুঝতে পারি। বিশিষ্ট মার্কিন শল্য চিকিৎসক ও রোগ নিরাময়ে মনোশক্তি ব্যবহারের প্রবক্তা ড. বার্নি সীগেল খুব চমৎকারভাবে বলেছেন, 'অপ্রীতিকর অনুভূতিসহ আপনার অনুভূতিগুলো পুরোপুরি প্রকাশ করে ফেলা উচিত। প্রকাশিত হলেই আপনার ওপর এগুলোর প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো তখন আপনার জন্যে কোনো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে না-আপনার মনে কোনো গিঁঠ লাগাতে পারে না।'

কিন্তু সচেতন মনের অনুশাসন সবসময়ই আমাদের চিন্তা প্রকাশের অন্তরায়। অন্যরা খারাপ মনে করবে, এইজন্যে আমাদের অধিকাংশ নেতিবাচক চিন্তা অপ্রকাশ্য থেকে যায়। অধিকাংশ সময়ই রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা মনের ভেতরেই গুমরাতে থাকে। এর ফলে মনে সৃষ্টি হয় এক নেতিবাচক অবস্থা। নোংরা আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থে মনের কক্ষ পূর্ণ হয়ে ওঠে। ভালো জিনিস ঢোকার জায়গাই পায় না তখন। 

আমরা যেমন ঘরবাড়ি আসবাব নিয়মিত সাফ করি, তেমনি মনের কক্ষগুলোও নিয়মিত সাফ করা প্রয়োজন। এই সাফ করার পদ্ধতি হচ্ছে লেখা, একটু বিশেষ পদ্ধতিতে লেখা। 
অনুশীলনী-২

১. প্রথমে একটি বলপেন নিন। লেখার জন্যে কাগজ নেবেন একেবারে নিম্নমানের। নিম্নমানের নিউজপ্রিন্টই (সংবাদপত্র ছাপার কাগজ) এজন্যে সবচেয়ে ভালো। একটা নীরব কক্ষ বেছে নিন। যেখানে আপনাকে আপাতত কেউ বিরক্ত করতে আসবে না। এবার বসে লেখা শুরু করুন। সব লিখে যান। যা মনে আসে সব। কোনো বাছ-বিচারের চেষ্টা করবেন না। কোনো সংকোচ করবেন না। কারণ কেউ আপনাকে এখন দেখছে না। আর আপনার এ লেখাও কেউ কোনোদিন দেখবে না। তাই কোনো দ্বিধার প্রয়োজন নেই। লিখে যান আপনার অশান্তি, দুঃখ, ক্ষোভ, অপরাধবোধ, ঘৃণার কথা। লিখুন সব হতাশা, ঈর্ষা, লোভ ও লালসার কথা। 

কাউকে অশ্লীল গালিগালাজ করতে ইচ্ছে হয়ে থাকলে তা-ও লিখে ফেলুন। যৌন কল্পনা বা তাড়না বা অনাচারের কথা, যা কাউকে কখনো বলতে পারেন নি, তা-ও লিখে যান অবলীলায়। কারণ প্রতিটি নর-নারীই ষড়রিপু দ্বারা প্রভাবিত। বিজ্ঞ জ্ঞানীরা চেষ্টা করে রিপুকে জয় করেছেন। আর নির্বোধরা রিপুর তাড়নায় ধ্বংস হয়েছে। আপনিও রিপুকে জয় করার চেষ্টা করছেন। তাই লিখতে থাকুন। পাঁচ মিনিট, দশ মিনিট, আধা ঘণ্টা, এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা। ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত লিখে যান। লিখতে লিখতে ক্লান্ত হওয়ার পর আপনি থামুন। 

২. এবার একটা খালি টিনের বাক্স নিন। মুড়ির টিন বা বড় ডিব্বা হলেও চলবে। আপনি এতক্ষণ যা লিখেছেন সেই কাগজগুলো টুকরো টুকরো করে টিনের ডিব্বার মধ্যে ফেলুন। এবার একটা ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলুন কাগজের টুকরোগুলো। আপনার সকল ক্ষতিকর চিন্তা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন তা বাগানে মাটিতে পুঁতে ফেলুন বা কমোডে ফেলে ফ্লাশ টেনে ভাসিয়ে দিন। 

৩. এ প্রক্রিয়া অনুসরণে লাভ হচ্ছে এই যে, মনের ভেতরে যে ক্ষতিকর চিন্তাগুলো আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল, তাকে আপনি ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে এসেছেন। আপনার টেনশন কমে গেছে। ক্ষতিকর চিন্তাগুলো হচ্ছে অন্ধকারের কীট। 

আলোর মুখ দেখলেই সে নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। প্রকাশিত হয়ে পড়লেই এর ধ্বংসকারী প্রভাব শেষ হয়ে যায়। আবার তারপরও আপনি ওকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলেছেন। ফলে তা অন্য কারো হাতে পড়ছে না। তাই আপনারও কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং দু’তিনবার এমনিভাবে ক্ষতিকর চিন্তা বা কুচিন্তাকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলার পর নিজেকে অনেক হালকা লাগবে আপনার, মনে হবে কাঁধ থেকে সিন্দাবাদের বুড়ো যেন নেমে গেল। সফল জীবনের পথে আরেক ধাপ অগ্রসর হলেন।

৪. সাবধান! একটা ব্যাপারে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। কী লিখছেন লিখে ফেলার পর তা কখনোই আর পড়তে যাবেন না। এমনকি লেখা ঠিক হলো কিনা দেখার জন্যেও তা পড়বেন না। লেখা ঠিক হোক বা না হোক, একবারে যা লিখে গেলেন তা সে অবস্থায়ই থাকবে। যদি আপনি আপনার লেখা পড়েন তবে আপনার পুরো শ্রমই হবে পণ্ডশ্রম। কারণ যা আপনি মন থেকে বের করে দিতে চাচ্ছিলেন তা পুনরায় চোখের মাধ্যমে মস্তিষ্কে গিয়ে আশ্রয় নেবে। তাই সতর্ক থাকুন। লিখে ফেলার পর তা আর কখনো পড়তে যাবেন না। 
লেখাটি কোয়ান্টাম মেথডের প্রবক্তা মহাজাতক এর মেডিটেশন বই থেকে সংগ্রহ।
এসএ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি