ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

মাথাধরা রোধে কলমি শাক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩২, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

শাস্ত্রে আছে ষড়ঋতুর রোগ প্রতিরোধ করে কলমী শাক। ভেষজের জগতে কলমী শাকের রয়েছে দুর্লভ সব ওষুধী গুণ। এ কারণে আবহমান বাংলায় কলমী শাকের চাষ হতো গৃহস্থ বাড়ির কাছেই যাতে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়।

ড. তপন কুমার দে তার ‘বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় গাছ-গাছড়া’ বইয়ে তুলে ধরেছেন কলমী শাকের ওষুধী গুণাবলি। একুশে টিভি অনলাইনে গুণাবলিগুলো দেওয়া হলো-

১) অনেক সময় শিশুর মল কঠিন হয়ে গেলে কান্নাকাটি করে। কিংবা দিনে এক আধবার ঘুমালেও রাতে ঘুমাতে চায় না। অনেকেই বিশ্বাস করে যে, রাতে জন্মালেই বুঝি এরকম হয়। তবে এটি ঠিক নয়। এক্ষেত্রে খানিকটা বিশুদ্ধ গরম দুধের সঙ্গে ২০ থেকে ২৫ ফোঁটা কলমী শাকের রস মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ালে তাড়াতাড়ি স্বস্তি ফিরে পাবে।

২) শিশুকে দুধ পান করাতে দিয়ে দুধ কম হওয়ায় অকে মা অস্বস্তিতে পড়েন। এক্ষেত্রে কলমী শাকের রস তিন/চার চামচ একটু ঘিয়ে গরম করে সকালে ও বিকেলে দুইবার খেলে উপকার হবে।

৩) অতিরিক্ত শুক্রক্ষয়ে অনেকেই দুর্বল হয়ে পড়েন। এ সময় মাথাধরা, হাত-পা জ্বালা করা, অগ্নিমান্দ্য, মুখে পানি আসা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। এ সময় কলমী শাকের রস দুই চামচ ও অশ্বগন্ধা মূল চূর্ণ আধা চামচের সঙ্গে সামান্য দুধ মিশিয়ে খেলে এসব উপসর্গ কেটে যাবে।

৪) স্তনে দুধ বসে গিয়ে যন্ত্রণা হলে কলমী শাক বেটে অল্প গরম করে স্তনে লাগালে এবং ওই শাকের রস দিয়ে ধুলে বসা দুধ পাতলা হয়ে নিংসরণের সুবিধা হয় এবং যন্ত্রণাও কমে যায়।

৫) গণোরিয়া (যৌন রোগ) হয়ে জ্বালা-যন্ত্রণা ও পুঁজ পড়তে থাকলে কলমী শাকের রস চার থেকে পাঁচ চামচ অল্প ঘিয়ে হালকা গরম করে সকাল-বিকেল দিলে যন্ত্রণা ও পুঁজ পড়া বন্ধ হবে।

৬) ভীমরুল ও মৌমাছি হুল ফুটালে কলমী বেটে প্রলেপ দিলে জ্বালা কমে যায়।

৭) শাকের রস ৫০ থেকে ৬০ মি.লি. খাওয়ালে আফিং এর বিষক্রিয়া নষ্ট হয়।

৮) ফোঁড়ার ভিতরে পুঁজ হয়েছে, বেরুতে পারছেনা। এক্ষেত্রে কলমীর ডগা ও শিকড় একত্রে বেটে ফোঁড়ার ওপর প্রলেপ দিলে ফোঁড়ার মুখ হয়।

৯) কলমী শাকের রস দুই চামচ একটু গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

পরিচিতি : কলমী শাক গ্রামে-গঞ্জে, পুকুর বা অন্য যে কোন জলাশয়ে জন্মে। কলমী শাক পানির ওপরেই লতিয়ে বেড়ে উঠে। এর অন্য নাম কলম্বী। কে অর্থ পানি আর পানিতে যে লম্বা হয়ে বা লতিয়ে বেড়ে চলে সেটাই হচ্ছে কলম্বী। এর ডাঁটা ফাঁপা, ফিকে লালচে। ডাঁটার গিরা থেকে একটি করে পাতা লম্বা বোঁটাসহ গজায়। পরিপক্ক গিরা থেকে নতুন কুশি বা আগা গুচ্ছাকারে বের হয়। পাতাগুলি ময়লা সবুজ রং-এর এবং আকৃতি অনেকটা পানি কচু পাতার মত। গোড়ার দিকটা ছড়ানো ও আগার দিকটা সরু। তবে আকারে কচু পাতার তুলনায় অনেক ছোট। বর্ষাকালে হালকা বেগুনী রংয়ের ফুল ফোটে। ফুলের আকৃতি ধুতরা ফুল বা ফানেলের মত। বর্ষার শেষে ফল ধরে। বর্ষাকালে শিমুলের আঠার মত এক প্রকার আঠা কলমী শাকে জন্মে, এগুলোর মধ্যে কীট জন্মে। এগুলো আবার শরৎকালে চলে যায়। এ কারণে বৈদিক শাস্ত্র মতে শয়ল একাদশী (উল্টোরথের পরদিন থেকে) উথান একাদশী (রাস পূর্ণিমার পূর্বের একাদশী) পর্যন্ত কলমী শাক খাওয়া নিষেধ।

 

/কেএনইউ/এসএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি