ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৫

মানবাধিকার দিবসে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৩৪, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ১৮:৩৫, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা হয়। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছে। কোনো কোনো সন্ত্রাসীর পক্ষেও বিবৃতিজীবীরা কেউ কেউ সোচ্চার হয়। কিন্তু সেই সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নাই। 

তিনি বলেন, পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে। যেসকল বিশ্ববেনিয়া মানবাধিকারের কথা বলে এবং বাংলাদেশেও যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষসহ হাজার হাজার নারী ও শিশুকে হত্যা করা হলো, কিন্তু এ নিয়ে তাদের বা বড় বড় সংগঠনগুলোর কোনো কথা বা বিবৃতি নেই।
 
তিনি আরও বলেন, অথচ বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং এরপর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধের মাধ্যমে।
 
তিনি বলেন, দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদের বিনা বিচারে হত্যা করা, নামের মিল আছে সেজন্যই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া, এমনকি ফাঁসি কার্যকর হবার পর ফাঁসির রায় হয়েছে এমন ঘটনাও আছে। তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব হয়েছে। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।
 
মন্ত্রী বলেন, কিছু বিবৃতিজীবী আছে, বিবৃতি দেওয়াই তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু আছেন। কিন্তু সবসময় যারা এ ধরনের বিবৃতি দেন, দেশে এখন যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, তাদের বিবৃতি এখন দেখতে পাচ্ছি না। এই বিবৃতিজীবীরা কই ? জনগণ এদের খুঁজছে, আমিও খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলো কি না তা নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়ে একই হাসপাতালে ৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে হাসপাতাল অকেজো করে দেয়ার পর সেখানে আইসিইউ’তে থাকা সব মানুষ মারা গেছে। এই ধরণের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্ববেনিয়ারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে। আবার ইসরাইলি বাহিনী যাতে ভালোমতো বোমা বর্ষণ করতে পারে সেজন্য সহায়তাও করছে।
 
হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমি প্রথম থেকেই এটার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি এবং থাকব। আমাদের সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীও সোচ্চার আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে এটার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর সমস্ত রাষ্ট্রদূতের সাথে বসে এই ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
 
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, কেউ হরতাল-অবরোধের ডাক দিতে পারে, সরকার পতনের ডাক দিতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে পারে, এটিই গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক সমাজের রীতি। কিন্তু ঘরে বসে সেই ডাক দিয়ে গাড়ির মধ্যে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়। এগুলো একদিকে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরদিকে মানুষের অধিকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমি আশা করব, সাংবাদিকরা এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন, কলম ধরবেন।
 
শ্রমিক অধিকারের নামে বছরে ১২বার বিদেশ সফরকারী দু-একজন শ্রমিক নেতা কারও এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন কিনা প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, দেখা গেল আল্পনা-কল্পনা-জল্পনা আক্তাররা বছরে ১২ বার বিদেশ গেছেন, ১৮-২০ লাখ টাকা বিমান ভাড়া দিয়েছেন। এদের কারও কারও আবার গাড়িও আছে, ঢাকা শহরে বড় বড় ফ্ল্যাট আছে। শ্রমিক সমাবেশে যাবার সময় কিছু দূরে গাড়ি রেখে হেঁটে কিংবা রিকশায় যান, যদি শ্রমিকরা গাড়ি দেখে ফেলেন। এরা কীভাবে এবং কারও এজেন্ট হিসেবে যে কাজ করে সেটি আজ স্পষ্ট। এ সমস্ত এজেন্টের ব্যাপারেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি সাংবাদিক সমাজের কাছে অনুরোধ করব তাদের মুখোশ উন্মোচনের জন্য।
 
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায়  অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেল খান, সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটু, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।

কেআই//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি