ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

মামলা নিষ্পত্তিতে আসবে ৫০ হাজার কোটি টাকা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৫৯, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

আপিল ট্রাইবুনালে অনিষ্পন্ন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পন্ন করতে পারলে সরকারের রাজস্ব কোষাগারে ৫০ হাজার কোটি টাকা যোগ হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এনবিআর সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা হচ্ছে এখন থেকে মাফ করার সংস্কৃতি পাল্টাতে হবে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া, বকেয়া আদায়ে যত্নবান হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে সচিবদের ডিও লেটার দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে মন্ত্রী সভায় আলোচনা করে দিকনির্দেশনা চাইবো। পেট্রোবাংলার কাছে ২২ হাজার কোটি টাকা, পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের কাছে ২৩শ কোটি টাকা, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা, বিটিআরসি, মোবাইল অপারেটরসহ বেশ কিছু কোম্পানির কাছেও বকেয়া আছে। আমরা ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক পর্যায়ে আলোচনা করে বকেয়া পাওনা আদায় করে সরকারের রাজস্ব বাড়াবো।

রাজস্ব ঘাটতি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে। তবে গতবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। রাজস্ব প্রবৃদ্ধি এখনো ঠিক আছে।

চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআরের মাঠ অফিসগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেব। জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। জনবল বৃদ্ধি পেলে ট্যাক্স নেট বাড়ানোর সুযোগ হবে। জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন নতুন করদাতা চিহিৃত করে কর আদায় করা হবে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, হয়রানি না করে সুযোগ বৃদ্ধি করেন আমরা সঠিকভাবে রাজস্ব দেব।

আগামী ২০২০-২১ সালের ট্যাক্স জিডিপি রেসিও ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা করছে। জিডিপির আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নয়ন পরিকল্পনা আর জিপিডির আকারের সঙ্গে ট্যাক্স জিডিপি রেসিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেসব দেশে ট্যাক্স জিডিপির হারও ভালো তাদের বিদেশি নির্ভরতা কম থাকে। আমাদের টার্গেট রয়েছে বর্তমান যে ট্যাক্স জিডিপির হারও ১১ শতাংশ রয়েছে তা থেকে ২০২০-২১ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া।

তিনি বলেন, ট্যাক্স জিডিপির হার বাড়ানোর মানে এই না আমরা মানুষকে চাপ দিয়ে, কষ্ট দিয়ে রাজস্ব আহরণ করে ট্যাক্স জিডিপি বাড়াবো। আমাদের একটা লক্ষ্য থাকবে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট না হলে দেশ এগিয়ে যেত না, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো না। দেশে অর্থের প্রবাহ, অর্থনীতির আকার বাড়ছে বলে রাজস্ব আদায় হচ্ছে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা ট্রেড ফ্যাসিলেটেড করবো। ট্রেড ফ্যাসিলেটেশনের ফলে যদি ব্যবসায়ীরা ভালো করে তাহলে রাজস্ব বেড়ে যাবে। কর ও শুল্ক অব্যাহতি দেওয়ার সংস্কৃতি রয়েছে। শুধু প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে এ অব্যাহতি দেওয়া হবে।

অব্যাহতির বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এখন শিশু না। আমাদের ব্যবসায়ীরাও শিশু না। আমাদের সবদিকে ম্যাচিউরিটি আসছে। একজন রেয়াত চাই তাহলে আরেকজন চাইবে। আমি এখানে কারো মুখ দেখে কাজ করবো না। কোনো বৈষম্যকে প্রশ্রয় দেব না। মাফ করার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

কর ও শুল্কে রেয়াত সুবিধা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, শুধু খুব প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই রেয়াত সুবিধা থাকবে। আস্তে আস্তে এই রেয়াত সুবিধা থেকে বের হতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে বাংলাদেশ ফিন্যানিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট নামে একটি সতন্ত্র প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। যেখানে আমরা তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরকে প্রধান করে এ ইউনিটে সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছে। যাদের সঙ্গে বিদেশী সংস্থাও কাজ করবে। এতে মানিলন্ডারিং বন্ধ হবে। সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর এর অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

 

আরকে/টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি