‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’
মার্টিন লুথার কিংয়ের সেই ভাষণের ৬০ বছর পূর্তি
প্রকাশিত : ১২:০৩, ২৮ আগস্ট ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি মানবাধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ঐতিহাসিক ভাষণ ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’-এর ৬০ বছর পূর্ণ হল।
১৯৬৩ সালে ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিংকন মেমোরিয়ালে সমাবেত প্রায় আড়াই লাখের বেশি মানুষের সামনে এই ভাষণ দেন তিনি। তার ওই ভাষণ ও সমাবেশের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত শনিবার ওয়াশিংটনের লিংকল মেমোরিয়ালের সামনে এক সমাবেশে হাজির হন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে তারা জানান, কিংয়ের স্বপ্ন এবং কর্মের ফল এখন নতুন করে ঝুঁকিতে।
শনিবারের সমাবেশে কিংয়ের নাতনি ইয়োলান্ডা রিনি বলেন, আজ যদি আমার দাদার সঙ্গে কথা বলতে পারতাম, তাহলে বলতাম, আমি দুঃখিত যে আপনার কাজ শেষ করার জন্য এবং আপনার লুকানো স্বপ্নকে উপলব্ধি করার জন্য আমাদেরকে পুনরায় উৎসর্গ করতে এখানে থাকতে হবে।
কিংয়ের বড় ছেলে তৃতীয় মার্টিন লুথার কিং বলেন, আমাদের দেশ যেদিকে যাচ্ছে তা নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে, মনে হচ্ছে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার এবং নারী ও শিশুদের অধিকার অবশ্যই রক্ষা করতে হবে এবং বন্দুক সহিংসতার অবসান ঘটাতে হবে। তাহলে হয়তো একদিন আমরা একটি মহান জাতি হব।
দিনব্যাপী সমাবেশে নাগরিক ও মানবাধিকার গ্রুপের নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। এর সংগঠকরা স্পষ্ট করেন যে, এই সমাবেশ কোনো স্মরণ অনুষ্ঠান নয় বরং ১৯৬৩ সালের দাবিগুলোর পুনরুক্তি।
আজ সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হোয়াইট হাউসে সমাবেশের আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ১৯৬৩ সালে মার্টিন লুথার কিংয়ের ওই ভাষণের পর তাকেসহ সমাবেশের আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির প্রশাসন। সেই বৈঠককে স্মরণ করতেই আজ আয়োজকদের সঙ্গে বসবে বাইডেন প্রশাসন।
১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট। বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্রে। সারাদেশ থেকে ওয়াশিংটনের পথে ফ্রিডম মার্চে অংশ নেয় লাখো মানুষ। কৃষ্ণাঙ্গদের সম অধিকার আদায়ের দাবিতে লিংকন মেমোরিয়ালের সামনে জড়ো হন তারা।
৬০ বছর আগের ওই দিনে ঐতিহাসিক ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ ভাষণের মধ্য দিয়ে বৈষম্য বিরোধী এক যুক্তরাষ্ট্রের আশাবাদ জানিয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং। কৃষ্ণাঙ্গদের সম অধিকার আদায়ের দাবিতে আড়াই লাখ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন ওই সমাবেশে। সেখানেই ইতিহাস সৃষ্টি করা ভাষণে মানবাধিকার কর্মী ড. মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এমন এক আমেরিকার স্বপ্নের কথা বলেন, যেখানে সবাই হবে সমান।
আলোড়ন তৈরিকারী সেই বক্তব্যের জেরেই প্রণয়ন করা হয়েছিলো মানবাধিকার ও ভোটাধিকার আইন। তবে ছয় দশক পরও প্রতিষ্ঠা হয়নি বৈষম্যমুক্ত সমাজ। এখনও প্রতিনিয়ত বর্ণবৈষম্যের শিকার হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। কেবল জাতিগত বিদ্বেষের কারণে অহরহ ঘটছে বন্দুক সহিংসতার ঘটনা।
এসবি/