ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

মায়ের বয়স হওয়ায় পায়ে শিকল দিল ছেলে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৪, ১৫ জুলাই ২০১৭

ছবি : মায়ের বয়স হয়েছে, এটা-ওটা নষ্ট করে তাই পায়ে শিকল দিল ছেলে

ছবি : মায়ের বয়স হয়েছে, এটা-ওটা নষ্ট করে তাই পায়ে শিকল দিল ছেলে

এক মাকে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে তার ছেলে। বয়স হওয়ায় মাঝেমধ্যে এটা-ওটা নষ্ট করেন এ অজুহাতে এমনটি করেছে পাষণ্ড ছেলে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের ঘটনা এটি।

 

জানা গেছে, শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের মৃত বাল্লক ওরফে পুটে গাজীর স্ত্রী জানু পারভিন। পাঁচ ছেলে এক মেয়ে তার। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। মেজ ছেলে শফিকুল ও তার স্ত্রী জানুকে দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন করে আসছে। ৭০ বছর বয়সী মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর ভয় দেখায়। মাঝে মাঝে পাঠায়ও। আবার নিয়েও আসে। তারা জানু বেগমের পায়ে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে বাড়ির গাছের সঙ্গে।

 

দিনের পর দিন এভাবেই চলছে। ছেলে ও ছেলের বউয়ের নিষ্ঠুর আচরণে জানু পারভিন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ছেলে যখন পায়ে শিকল বেঁধে দেয় তখন শিশুর মতো ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন জানু পারভিন। কান্নাকাটি করে বলেন, ওরে খুলে দে। আমায় বেঁধে রাখিস না। কিন্তু ছেলের মন গলে না। বাধন খুলে দেয় না। জানু মানুষ দেখলে অনুনয় বিনয় করেন যেন ছেলেকে বুঝিয়ে বাধনটা একটু খুলে দেয়।


এ বিষয়ে শফিকুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মার বয়স হয়েছে। মাঝেমধ্যে পাগলামি করে। এটা-ওটা নষ্ট করে। তাই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা আরকি। তবে সব সময় না। মাঝে মাঝে খুলে দিই।’ প্রতিবেশীরা জানান, জানু ভোরে দরজায় টোকা দিয়ে নামাজ পড়তে বলেন। তার ডাকে প্রতিবেশীদের ঘুম ভাঙে। শফিকুল জানান, বেঁধে না রাখলে মানুষের ঘরের দরজায় যখন তখন টোকা দিয়ে ঘুম ভাঙিয়ে দেয়।

শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান বলেন, ‘এমন অমানবিক দৃশ্য আর দেখতে চাই না। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেব।’ সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুর হোসেন সজল বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। এমন অমানবিক আচরণ কোনো সন্তান তার মায়ের সঙ্গে করতে পারে না। আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

//এআর

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি