মা হওয়ার পর বদলে যায় জীবন, সত্যিই কি তাই?
প্রকাশিত : ১৫:০৫, ১৪ নভেম্বর ২০২২
মেয়ে থেকে ‘মা’ হওয়া মানে জীবনের একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হওয়া। অনেকেই মনে করেন, বাহ্যিক পরিবর্তন এলেও মনের দিক থেকে সেই মেয়েবেলাতেই রয়েছেন তারা। সত্যিই কী তাই?
দম্পতি থেকে হঠাৎ করে অভিভাবক হয়ে ওঠার পথটা সকলের কাছে খুব মসৃণ নয়। বিশেষ করে মেয়েদের কাছে এই লম্বা সময়ের বিভিন্ন পর্যায়ে জুড়ে চলা শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনগুলো সব সময়ে যে সুখস্মৃতি হয়ে মনে থেকে যায়, তা-ও নয়।
মনোবিদরা বলছেন, অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মা হওয়ার খবরে আপাত ভাবে খুশি হলেও, তাদের এই পরিবর্তন তারা মেনেই নিতে পারেন না। তথাকথিত সুখী দাম্পত্যেও চিড় ধরতে দেখা গিয়েছে শুধু মাত্র এই পরিবর্তনকে কেন্দ্র করেই। নিজের মনের অবস্থা কাউকে বোঝানোর মতো অবস্থাতেও থাকেন না অনেকে। প্রতি মুহূর্তে নিজেকে অপরাধী মনে হয়, অনেকে মনে করেন ‘মা’ হওয়ার সিদ্ধান্তটিই বোধ হয় ভুল ছিল। গর্ভকালীন অবস্থায় মেয়েদের এমন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার উদাহরণ আছে ভুরি ভুরি।
পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বড়রা সান্ত্বনা দেন, আসলেই সব আগের মতো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু মা হওয়ার পর সত্যিই কি জীবন আগের মতো থাকে? বিজ্ঞান কী বলছে?
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সন্তানধারণের দিন থেকে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত শরীরে যেমন পরিবর্তন আসে, অদ্ভুত ভাবে মস্তিষ্কেও তার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ক্ষেত্রেই নিয়মটা এক। কারণ তারা কেউই জন্ম থেকে মা হয়ে আসে না। মা হতে হয়। মা হওয়ার এই পর্বজুড়ে বিভিন্ন হরমোনের ওঠানামা মস্তিষ্কের গঠন এবং ভাবনা-চিন্তা পুরোপুরি ভাবে বদলে দেয়।
হরমোনের প্রভাব, সন্তানধারণ, স্তন্যদানের মধ্যে দিয়ে নানা রকম শারীরিক পরিবর্তন হতে থাকে নতুন মায়েদের। তার মধ্যে হাড়ের ক্ষয়, সংক্রমণ, দুর্বলতা, রক্তাল্পতা তো আছেই। এই সমস্ত জটিলতাকে একা হাতে সামাল দেওয়ার ক্ষমতা সকলের থাকে না। তাই এই পরিবর্তন মেনে নেওয়াও কঠিন হয়।
এ ছাড়া সদ্যোজাত সন্তানের দেখাশোনা করা, তাকে খাওয়ানোর যাবতীয় দায়িত্ব মায়েদের। তাই বাড়ির বাইরে পা ফেলার জো থাকে না। সারা ক্ষণ ওই এক কাজ করতে করতে কখনও কখনও অবসাদও গ্রাস করে মায়েদের।
সূত্র: আনন্দবাজার
এসবি/