মিন্নির পাশে শতাধিক আইনজীবী
প্রকাশিত : ১৪:০৩, ২০ জুলাই ২০১৯
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিতে বরগুনায় যাচ্ছেন দেশের শতাধীক আইনজীবী। সম্প্রতি বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে শাহ নেওয়াজ শরিফ রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত নিহতের স্ত্রী মিন্নি আইনি সহায়তা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগের পর তারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ শনিবার রাজধানী ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি থেকে শতাধিক আইনজীবীর কয়েকটি দল বিভিন্ন পথে বরগুনা রওনা হয়েছে।
জানা যায়, আগামীকাল রোববার কারাগারে মিন্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওকালতনামায় স্বাক্ষর নেবেন আইনজীবীরা। এরপরই বরগুনা আদালতে মিন্নির জামিনের বিষয়ে আইনি পদক্ষপ নেবেন তারা।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না জানান, শনিবার ঢাকা থেকে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র’র (আসক) আইনজীবীরা এবং বরিশাল, পটুয়াখালী ও ঝালকাঠি থেকে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের আইনজীবীরা বরগুনার পথে যাত্রা করেছেন । রবিবার থেকে মিন্নির জামিনের জন্য চেষ্টা চালানো হবে।
তিনি বলেন, ‘বরগুনা থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি। দেশের সকল আইনজীবীদের সহানুভূতির জন্য এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ভূমিকা স্বরণীয় হয়ে থাকবে। জাতির কাছে একটা ভুল বার্তা গেছে যে বরগুনা আইনজীবী সমিতি মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিবে না। কিন্তু সমিতির নেতৃবৃন্দ এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তারাও মিন্নিকে আইনি সহায়তা দেবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে বুধবার আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে পাঁচ দিনের রিমান্ড পাঠান আদালত। এরপর ফের গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। মিন্নি বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনায় নিজে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন এমনটি জানায় পুলিশ।
তবে মিন্নির বাবা অভিযোগ করেন, মিন্নির জন্য কোন আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। তার পক্ষে যেন কোন আইনজীবী আদালতে না আসেন সে জন্য স্থানীয় প্রভাবশালীরা আইনজীবীদের হুমকি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে পুলিশ মিন্নিকে নির্যাতন করে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে শাহ নেওয়াজ শরীফ রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে ঐ দিন বিকেলে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান শরীফ।
এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
এ দিকে মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এমএস/
আরও পড়ুন