মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে হুমায়ুন রশীদ এক উজ্জ্বল নক্ষত্র : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৮:৩২, ১০ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ১৮:৩৫, ১০ জুলাই ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। ‘স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী-২০২৪’ উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে আজ তিনি বলেন, ‘হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী জীবনের মায়া তুচ্ছ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাঙালির পক্ষে কূটনৈতিক যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দিল্লীতে পাকিস্তানি দূতাবাসে কর্মরত অবস্থায় পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করেন।
এসময় দূতাবাসে কর্মরত বাঙালিদের জীবন রক্ষায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বিদেশি গণমাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং আমাদের মহান নেতা কারাগারে বন্দি জাতির পিতার মুক্তির জন্য জোরালো আহ্বান জানান এবং বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কূটনীতিবিদ, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক সফল স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন। তাঁর কূটনৈতিক পারদর্শিতায় ৩৪টি দেশ স্বল্পসময়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ মেয়াদে জার্মানিতে (তৎকালীন পশ্চিম জার্মানী) রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে প্রভূত অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতার নির্মম হত্যাকা-ের খবর পেয়ে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী আমাকে এবং আমার বোন শেখ রেহানাকে বেলজিয়াম থেকে জার্মানিতে আনার ব্যবস্থা করেন। আমাদের চরম দুঃসময়ে তিনি এবং তাঁর সহধর্মিণী বেগম মেহজাবিন চৌধুরী পরম মমতায় আমাদের দুই বোনকে আগলে রাখেন। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে যোগাযোগ করে তিনি দিল্লীতে আমাদের রাজনৈতিক আশ্রয়েরও ব্যবস্থা করেন।’
তিনি বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর সিলেট-১ নির্বাচনি আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে স্পিকারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। জাতীয় সংসদকে গতিশীল, ডিজিটাল এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। এছাড়াও জাতীয় সংসদের প্রচলিত রীতিনীতির আধুনিকায়ন এবং সংস্কারে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৮ সালে মরহুম হুমায়ন রশীদ চৌধুরীকে মরণোত্তর স্বাধীনতা প্রদক প্রদান করা হয়।
বিভিন্ন দায়িত্ব পালনকালে দেশ ও জাতির কল্যাণে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। দেশের যেকোনো সাফল্যে তিনি মনেপ্রাণে খুশি হতেন। তিনি জীবিত থাকলে আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক নেতৃত্বে বাংলাদেশের সার্বিক সাফল্যে অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্ববোধ করতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের নেতৃবৃন্দ মরহুমের অবদান জাতির সামনে উপস্থাপন করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে দুঃস্থ জনসাধারণের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছেন জেনে আমি তাদের সাধুবাদ জানাই । আমি এই পরিষদের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি। তিনি হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
কেআই//
আরও পড়ুন