ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের অবদান কখনোই ভোলার নয় (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৪, ১৫ মার্চ ২০২১

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন দেশ ছাড়াও বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তাদের কেউ অস্ত্র হাতে যেমন যুদ্ধ করেছেন, কেউ আবার কলম, ক্যামেরা হাতে পাকিস্তানিদের বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর কাছে। পণ্ডিত রবি শঙ্কর, জর্জ হ্যারিসন, ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ, আল্লারাখা খাঁ- কনসার্ট ফর বাংলাদেশে ঝড় তুলেছিলেন বাংলার পক্ষে। বিদেশি বন্ধুদের অবদান কখনোই ভোলার নয়। দীর্ঘদিন পর হলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার বিদেশি বন্ধুদের সম্মান জানিয়েছে।

নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যা। পালিয়ে প্রতিবেশি দেশ ভারতে অবস্থান নেয় বাঙালি নারী-পুরুষ। বাঙালিদের আশ্রয় দেয় ভারতের মানুষ। বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। 

শরনার্থীদের পরিস্থিতি নিজেই পরিদর্শন করেন। তাদের খাদ্য ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত গড়েন। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়ার দাবি তুলে ধরেন ইন্দিরা গান্ধী।

বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভুটান, নেপাল, যুক্তরাজ্য, জাপান, মিশর ও ইরাক। কিউবা, যুগোস্লাভিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র, পূর্ব জার্মানিও পাকিস্তানিদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। দেশগুলোর ভূমিকা যুদ্ধজয়ে অনুপ্রেরণা যোগায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারোয়ার আলী বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব সহযোগিতা করে গেল। তারই আলোকে আগস্ট মাসের ৮ তারিখে মুক্তি চুক্তি হয়। তারপর থেকে আমরা যারা মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়েছি আমাদের অস্ত্র বেড়েছে, প্রচুর বেশি মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধ ক্ষেত্রে যোগদানের সুযোগ পেয়েছে।

পণ্ডিত রবি শঙ্কর ও জর্জ হ্যারিসন মুক্তিকামী বাঙালির কথা বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিলেন সুরের মূর্ছনায়। নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ারে কনসার্ট ফর বাংলাদেশের মঞ্চে আসেন বব ডিলান, ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ, আল্লারাখা খাঁ, রিঙ্গো স্টার।  

ওডারল্যান্ড বাটা কোম্পানির প্রোডাকশান ম্যানেজার ছিলেন। পাকিস্তানিদের বর্বরতার বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এই অস্ট্রেলিয়ান ডাচ কমান্ডো অফিসার। বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বীর প্রতীক খেতাব পেয়েছেন তিনি। 

কলম ও ক্যামেরা হাতে বাঙালির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেই সময়ের দ্য টেলিগ্রাফের সাংবাদিক সায়মন ড্রিং ও মার্ক টালি। ছবি তুলেছেন ভারতীয় ফটোগ্রাফার কিশোর পারেখ। লেয়ার লেভিন ক্যামেরা হাতে ঘুরে বেড়িয়েছেন মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার সাথে।  

কবি অ্যালেন গ্লিন্সবর্গের মন কেঁদেছিলো বাঙালির জন্য। লিখেছিলেন সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড। 

যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডিকে ভুলবে না বাংলাদেশ। পল কনেট দম্পতি, জোসেফ ও’কনেলও সেদিন বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের অবদান ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারোয়ার আলী বলেন, এই জায়গায়টায় কৃতজ্ঞ জাতি বহু বছর তাদেরকে সম্মান জানায়নি। কিন্তু বর্তমান সরকারকে আমি কৃতজ্ঞবাদ জানাবো, সাধুবাদ জানাবো যে তারা ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ উপাধীতে তাদের সকলকে সম্মানিত করার চেষ্টা করেছে।

অকৃত্রিম এই বন্ধুদের অবদান চিরকাল স্মরণ করবে বাঙালি।
দেখুন ভিডিও :

এএইচ/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি