মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ৭২ঘন্টার আলটিমেটাম
প্রকাশিত : ০৭:৫৬, ২ মার্চ ২০২৪ | আপডেট: ০৮:০১, ২ মার্চ ২০২৪
১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আজ ১লা মার্চ শুক্রবার বিকাল ৩টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরেের সামনে সমাবেশ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, কেন্দ্রীয় কমিটি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স। সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। নারী কোটার পক্ষে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা, জেলা কোটার দাবিতে বক্তব্য রাখেন ফিরোজ আহমেদ সুজন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার দাবিতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশের শুরুতে বেইলী রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে কালো ব্যাজ ধারণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, "পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী আজকে আমাদের সমাবেশ শেষে শাহবাগ অবরোধ করার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু বেইলী রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মানবিক কারণে আমরা আজকে শাহবাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা অবরোধ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। ঢাকা মেডিকেল ও শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিট হাসপাতালে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে প্রয়োজনীয় রক্ত ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছি। একাত্তর সালে আমাদের পিতাদের ন্যায় দেশের যেকোন সংকট ও দুর্দিনে জনগণের পাশে আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবাররা সবসময় ছিলাম, আছি এবং থাকবো। বেইলী রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মানবিক কারণে আজ আমরা শাহবাগে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচী পালন করিনি। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহাল না করলে শাহবাগে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রয়োজনে সমগ্র বাংলাদেশে সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথ অবরোধ করে কঠোর কর্মসূচী পালন করা হবে। আর কোন ছাড় নয়। বঙ্গবন্ধুর দেয়া উপহার কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অঙ্গ সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বাতিল হওয়া ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। সংবিধান অনুযায়ী বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নারী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা, জেলা কোটা ও আদিবাসী কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। সামাজিক সমতা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই সাংবিধানিক অধিকার কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা কখনোই বৈষম্য তৈরী করে না। কোটা ব্যবস্থা সবসময় বৈষম্য দূর করে সমতা নিশ্চিত করে। রাষ্ট্রে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সমান সুযোগ সৃষ্টি করে। সংবিধান ২৯ (৩) ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সমাজের যেকোন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্র বিশেষ বিধান প্রবর্তন করতে পারবে। নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, পিছিয়ে থাকা জেলাসমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য জেলা কোটা পুনর্বহাল করার মাধ্যমে বৈষম্য দূর করে সকলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাজার হাজার সন্তানরা এখনো বেকার জীবন যাপন করছেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখনো অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। দেশ স্বাধীনের পর অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাড়িতে ফিরে দেখেছেন তাঁদের বাড়ি-ঘর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সম্মান দেয়ার পাশাপাশি ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে ৫ সেপ্টেম্বর এক আদেশের মাধ্যমে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০% ক্ষতিগ্রস্থ নারী কোটা ও ৪০% জেলা কোটা রাখা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নেমে আসে কালো অন্ধকার। ১৯৭৫-৯৬ সাল দীর্ঘ একুশ (২১) বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটার কোন বাস্তবায়ন হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে সাথেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর নেমে আসে দুর্বিষহ অত্যাচার। এসময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাঁদের সন্তানদেরকে তাঁরা তেমন পড়াশোনা করাতে পারেননি। অর্থনৈতিক দৈন্যদশা, যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্থ দেশ, পালিয়ে বেড়ানো সব মিলিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ২১ বছর কোনো সুবিধা পাননি। এমনকি তারা স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার পর্যন্ত হারিয়েছিলেন। ৯ মাস যুদ্ধের ক্ষতি এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল তা আজো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার স্বপ্ন দেখলো ভালো ভাবে বেঁচে থাকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের কল্যাণে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি যখন ক্ষমতায় আসলেন ততদিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ। এই কোটা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোন কাজে আসেনি। যখন দেখলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স শেষ তখন তিনি ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সন্তান পর্যন্ত বর্ধিত করলেন। কিন্তু সরকার বার বার লক্ষ্য করছেন কোনো অবস্থাতেই বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে নেওয়া হচ্ছে না। কারণ ১৯৭৫-৯৬ সালের মাঝে নিয়োগকৃত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আমলারা ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের বংশধর আমলারা পাওয়া যাচ্ছে না বলে পদগুলো শূন্য দেখানো শুরু করে। ১৯৯৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সরকার আরেকটি পরিপত্র জারি করে যথাযথ ভাবে কোটা অনুসরণ এবং কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে খালি রাখা এবং খালি পদগুলো পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ দিতে আদেশ জারি করে। সেটাও বাস্তবায়ন হয়নি। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ৫ বছর চাকুরী প্রত্যাশী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা নিয়োগ বঞ্চিত হন। ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকার থাকা অবস্থায় ২ বছর নিয়োগ বঞ্চিত। তাহলে মোট কত বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিয়োগ বঞ্চিত হলো? ৭২-৭৫ =৩ বছর কার্যকরী ছিল, ৭৫-৯৬=২১ বছর বঞ্চিত, ৯৬-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কোটা অনুসরণে চেষ্টা করার মাধ্যমে আংশিক কার্যকরী ৫ বছর, ২০০১-২০০৮ পর্যন্ত আবার নিয়োগ বঞ্চিত ৭ বছর। ২০১৮ সালে কোটা বাতিল হওয়ার পর ৫ বছর বঞ্চিত। তাহলে মোট ৪২ বছর। দেশ স্বাধীনের বয়স ৫৪ বছর। এর মাঝে ৪৪ বছর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কোটা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আর মাঝের ১০ বছরে মুক্তিযোদ্ধা কোটার কার্যকারিতা ছিল মাত্র ৫% থেকে ৬%। কিন্তু কাগজে কলমে আমাদেরকে কোটা সুবিধার দায়ভার নিতে হয়েছে ৫৪ বছরের। ১৯৭২ সালের পর যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটা সঠিক ভাবে প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করা হতো তাহলে অনেক আগেই কোটা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যেতো। সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে আজও হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বেকার অবস্থায় কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের সন্তানদেরকে আর্থিক সংকটে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তাঁদেরকে সামনে এগিয়ে আনার জন্য বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের ন্যায় বঙ্গবন্ধু কোটা সুবিধা উপহার দিয়েছিলেন কিন্তু তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা বলেন, "অবিলম্বে আমাদের নারী কোটা ১০ শতাংশ পুর্নবহাল করতে হবে। নারী কোটা বাতিল হওয়ার কারণে নারীরা বিসিএসে কাঙ্খিত ক্যাডার পাচ্ছেন না। নারীদেরকে অনেক যুদ্ধ করে এই সমাজে টিকে থাকতে হয়। অনেক বাধা বিপত্তি প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আমাদেরকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। এই সমাজে নারীদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে আনার জন্য নারী কোটার এখনো প্রয়োজন রয়েছে। নারী কোটার কারণে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পেরেছি। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার নারী কোটা অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে হবে। ২০১৮ সালে ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিতে কোটা রাখার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও নারীদেরকে চরমভাবে অপমান করা হয়েছে। সংবিধান পরিপন্থী এই অযৌক্তিক পরিপত্র অবিলম্বে বাতিল করে সকল কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।"
সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, "মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে কমিশন গঠন করতে হবে। আজও পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি। বিএনপি-জামাত জোটের তৎকালীন মন্ত্রী কুখ্যাত আলবদর কমাণ্ডার যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান আল মুজাহিদ একদিন জাতীয় সংসদে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন, এদেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি! তারা এধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য দিয়ে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের জাতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার (Preamble of the Constitution) মধ্যে আজও পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দ যোগ করা হয়নি।আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনার শুরুতে বলা হয়েছে :"আমরা বাংলাদেশের জনগণ উনিশশো একাত্তর খ্রীস্টাব্দের মার্চ মাসের ছাব্বিশ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি"। দেশটা যে ঐতিহাসিক রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছে সেই "মুক্তিযুদ্ধ" কথাটি নেই। যাঁদের কারণে স্বাধীনতা পেয়েছি সেই "বীর মুক্তিযোদ্ধা" শব্দটি নেই। সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দদ্বয়ের স্বীকৃতি না থাকার ফলে অহরহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতীয় গৌরবের পবিত্রতার স্বার্থে সংবিধানের যথাযথ স্থানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দদ্বয় সংযোজন করার দাবি জানাচ্ছি। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুজব সৃষ্টিকারী ও ঢাবির ভিসির বাসায় হামলাকারীদেরকে চিহ্নিত করে আজও পর্যন্ত বিচার করা হয়নি। তদন্ত রিপোর্ট এখনো প্রকাশ হয়নি। অবিলম্বে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ভিসির বাসায় হামলাকারী ও উস্কানিদাতাদের কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। দেশের সকল চাকুরী প্রত্যাশী ভাই বোনদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই কোটা কখনো বৈষম্য তৈরী করে না, বরং কোটা ব্যবস্থা রাষ্ট্রে বৈষম্য দূর করে। অনেককে ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামিয়ে সেদিন নুরু গংরা নিজেদের ফায়দা হাসিল করেছিল যা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ইসরায়েলের এজেন্ট নুরু গংদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। নারী ও জেলা কোটার কারণে রাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিক কোটা সুবিধার আওতায় পড়েন। বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রে কোটা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোটা পুনর্বহালের কোন বিকল্প নেই। মেধা কোটার নাম পরিবর্তন করে সাধারণ কোটা নামে সংজ্ঞায়িত করা প্রয়োজন। কারণ অন্য কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তরা কখনোই অমেধাবী নয়। তারাও মেধাবী। তাদেরকেও প্রিলি, লিখিত ও ভাইভায় পাশ করার পর কোটা সুবিধা পেতে হয়। সরকারের নিকট দাবি, সংবিধান অনুযায়ী সামাজিক সমতা ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারী চাকুরিতে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা, নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও জেলা কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় সমগ্র বাংলাদেশে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।"
সমাবেশ থেকে ছয় (৬) দফা জানানো হয়েছে। দাবিসমূহ হচ্ছে-
১। ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারী চাকুরিতে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।
২। স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে তাদের পরিবারের সকলের নাগরিকত্ব বাতিল ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরত নিতে হবে।
৩। বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের ওপর হামলা, মামলা, হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নির্যাতন প্রতিরোধ সেল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৪। সংবিধানে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শব্দসমূহ সংযোজন করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
৫। অবিলম্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের প্লাটফর্ম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করতে হবে।
৬। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশপূর্বক ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে গুজব সৃষ্টি ও ঢাবি ভিসির বাসায় হামলাকারী এবং উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
আরও পড়ুন