ঢাকা, রবিবার   ১২ জানুয়ারি ২০২৫

মুখে কালো মাস্ক পড়ে ইবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন 

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২২:১৮, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

সেশনজট কমানো, ক্লাসরুম সংকট নিরসন, শিক্ষক নিয়োগসহ ১০ দফা দাবিতে মুখে কালো মাস্ক পড়ে আন্দোলনে নেমেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১১ জানুয়ারী) সকাল ৯টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। এর আগে বিভাগের গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে অবহেলা নয় সুস্পষ্ট নীতি দায়িত্বশীলতা চাই; ক্লাসরুম চাই, শিক্ষক সংকট নিরসন চাই; আর নয় ১২ মাসে ১ সেমিস্টার; আর নয় বাড়াবাড়ি, পরীক্ষা চাই তাড়াতাড়ি; সেশনজটের একেক মাস, বাবা-মায়ের দীর্ঘশ্বাস; পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে রুটিন চাই; কোর্স শেষ না করে পরীক্ষা নয়, সেমিস্টার ফাইনালের পরে ইনকোর্স নয় ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা জানপান, সমাজকল্যাণ বিভাগে এখন ২০১৭-১৮ সেশন থেকে ২০২৩-২৪ পর্যন্ত ৭টি ব্যাচ চলমান। কিন্তু ৭টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাসরুম রয়েছে মাত্র ১টি, শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৩ জন। ফলে অসহনীয় সেশনজটে ভুগছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে ২টি সেমিস্টারের সিস্টেম থাকলেও এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা বছরে ১টি বা ১ বছরেরও বেশি সময় পরে একটা সেমিস্টার সমাপ্ত করতে পারেন। ফলে দিনের পর দিন সেশনজট বাড়ছে। 

দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও তাদের সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আজ আন্দোলনে নেমেছেন তারা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ডিপার্টমেন্টের মতো মানহীন আর কোন ডিপার্টমেন্ট আছে বলে মনে হয়না। এতগুলো ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র ১টা ক্লাসরুম, সময়মতো পরীক্ষা হয় না, রেজাল্ট দিতে দেরি হয়। ফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় অন্যান্য পরীক্ষা নিতেও দেরি হয়। সবমিলিয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা।  

একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সেশনজট এত প্রকট হওয়ার অনেক আগে থেকেই তারা এসব সমাধানের জন্য শিক্ষকদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু যেসব শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় দাবীদাওয়া নিয়ে শিক্ষকদের কাছে গিয়েছে পরবর্তীতে তাদের ফলাফল রহস্যজনকভাবে খারাপ হয়েছে। এজন্য নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে তাদের এই পদক্ষেপ। 

শিক্ষার্থীদের ১০দফা দাবির মধ্যে- রুটিন প্রনয়ন করে প্রতিটি কোর্সের নুন্যতম ক্লাস নেওয়া; সেশনজট নিরসনে ৩ মাসে সেমিস্টার শেষ করা; আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পুর্নাঙ্গ একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত গেস্ট টিচার দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা; পর্যাপ্ত ক্লাস রুমের ব্যবস্থা; সেমিনার লাইব্রেরী বরাদ্দ; সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার আগে ইনকোর্স নেওয়া এবং নম্বর প্রকাশ; বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারকে বিভাগের সার্বিক তত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া; সম্পূর্ণ বিভাগের অর্থায়নে প্রতিবছর শিক্ষাসফরের ব্যবস্থা করা এবং আন্দোলন পরবর্তী প্রভাব কোনো শিক্ষার্থীর উপর যেনো না পড়ে তা নিশ্চিত করা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া শোনেন এবং বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। 

এসময় শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আরও দুটি ক্লাসরুম বরাদ্দ দেন এবং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ট্রেজারার দায়িত্ব নেন। এছাড়াও, দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ ও একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়নের কাজ শুরুর আশ্বাস দিলে বেলা ১টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি