মেয়ে হত্যার বিচার চান অসহায় বাবা
প্রকাশিত : ১৯:২৭, ১১ এপ্রিল ২০১৯
অসহায় বৃদ্ধ মফিজুল হক (৬৩) তার মেয়েকে হারিয়েছেন দুই বছর হলো। মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে বুধবার দুপরে তিনি প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন। বিচার চেয়েছেন মেয়ে হত্যাকাণ্ডের আর নিজের নিরাপত্তার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের মফিজুল হকের এক মাত্র সন্তান মেয়ে কামরুন্নাহার তূর্ণা ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল রাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ওই দিন বিকেলে শ্বশুরবাড়ির পানির ট্যাঙ্ক থেকে হাত বাঁধা, গলায় ওড়না পেঁচানো তূর্ণার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় একই গ্রামের আমিরুল হক ছোট্টুর ছেলে ও তূর্ণার স্বামী আরিফুল হক রনিকে আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন মফিজুল হক। মামলায় রনিকে মাদকাসক্ত বলে উল্লেখ করা হয়। মামলাটি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শফিউল আজমের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
কামরুন্নাহারের বাবা মফিজুল বলেন, কামরুন্নাহারকে ২০১২ সালে পারিবারিকভাবে আপন ছোট ভাই আমিরুল হকের ছেলে আরিফুল হকের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের পর তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে ২০১৬ সালে আরিফুলের মুঠোফোনে একটি আপত্তিকর ছবি নিয়ে কামরুন্নাহারের ঝগড়া হয়। পরে বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানও করা হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। পারিবারি কলহের জেরে ২০১৭ সালের ২৩ এপ্রিল দিনগত রাতে শ্বাসরোধ করে কামরুন নাহারকে হত্যা করে লাশ বাড়ির পরিত্যক্ত ট্যাংকে রেখে দেয় আরিফুল হক।
মফিজুল হক বলেন, মেয়ের হত্যা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মেয়ের স্বামী ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন চাপ প্রয়োগ করছে। এমনকি আমাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাকে বলা হচ্ছে-‘হয় আপোষ করো, না হয় মরো।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২১ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে আরিফকুল আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালের জুন মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আরিফুল হক।
মফিজুল হক বলেন, আসামি পক্ষের লোকজন আমাকে বারবার হুমকি দিচ্ছে আপোষ না করলে আমাকে মেরে ফেলবে। আমার তো কোনো ওয়ারিশ নেই। তাই আমাকে হত্যা করলে আমার বিচার চাওয়ারও কেউ নাই। সেজন্য আমাকে এলাকার সর্দারদের দিয়ে চাপ দিচ্ছে মামলা তুলে নিতে। আমি একা অহসায় অবস্থায় আছি। আমি বিপদে আছি। আমার মেয়ের হত্যার বিচার যেন হয়, আসামির যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়।
মো. আমিরুল হক এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বানোয়াট আলাপ করছে মফিজুল হক। তাকে কোনো ধরণের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না। মামলা নিজের গতিতেই চলছে। এখন আইনী সুবিধা পাওয়ার জন্য এখন বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপাপ্ত পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, হুমকির ঘটনায় মফিজুল হক থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি করেছেন কি না আমার জানা নেই। যদি তিনি অভিযোগ দায়ের করে থাকেন তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হবে।
আরকে//
আরও পড়ুন