মোবাইল প্রস্তুতকারকরা দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা চায়
প্রকাশিত : ২৩:৫৬, ১৭ এপ্রিল ২০১৯
দেশে কয়েকটি কোম্পানি ইতোমধ্যে মোবাইল কারখানা স্থাপন করেছে উল্লেখ করে মোবাইল প্রস্তুতকারকরা এ খাতের বিকাশে দীর্ঘমেয়াদী নীতি সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব করেছে।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকাচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এই প্রস্তাব করে। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন।
সভায় বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকাচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, বর্তমানে দেশে ৩০ শতাংশ মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকচারিং হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে যা ৯০ শতাংশে পৌঁছাবে। অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশ রফতানিতে যেতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন,মোবাইলের মাদারবোর্ড উৎপাদনের সুযোগ দিলে বড় বড় কোম্পানি এদেশে কারখানা স্থাপন করবে। তৈরি হবে এ খাতের ব্যাকওয়াক লিঙ্কেজ প্রতিষ্ঠান। তিনি এ খাতের বিকাশে দীর্ঘমেয়াদী (১০ বছর) নীতি সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব করেন।
রুহল আলম বলেন,আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে স্মার্ট ফোন আমদানি হচ্ছে। এটা বন্ধে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা এবং দেশের কোম্পানীগুলোকে স্মার্ট ফোন উৎপাদনে সক্ষম করে তুলতে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন।
১০ বছর না হলেও একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে এই খাতে নীতি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, স্মার্ট ফোন আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং রোধে নির্দেশনা দিয়ে বিটিআরসিকে চিঠি দেয়া হবে।
সভায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর পক্ষ থেকে আইটি বা আইটিইএস প্রতিষ্ঠানকে ২০২৪ পর্যন্ত করপোরেট কর মওকুফ সনদ দেয়ার প্রস্তাব করে। সেক্ষেত্রে প্রতিবছর আইটি বা আইটিইএস প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম সচল রয়েছে কিনা তা যাচাই করে বেসিস প্রত্যয়নপত্র প্রদান করতে পারে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি সংগঠনটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক এবং পেমেন্ট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পুরো পেমেন্ট সিস্টেমকে আরও সহজ ও রেগুলার মনিটরিং এর আওতায় আনার প্রস্তাব করে। এতে সরকার বছরে ৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করতে পারবে বলে তারা জানান।
বেসিসের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আইটি বা আইটিইএস-এর জন্য ১ বছর মেয়াদকালীন করপোরেট ট্যাক্স মওকুফ সনদ ৩ বছর মেয়াদকাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। পাশাপাশি বেসিস কর্তৃক প্রস্তাবিত ডিজিটাল মার্কেটিং পেম্যান্ট পলিসি মূল্যায়ন করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল মার্চেন্ডাইস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে দিন দিন এলইডি লাইটের চাহিদা বাড়ছে। তাই সংশ্লিষ্ট সংযোজন শিল্প গড়ে তুলতে এলইডি লাইটের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ৫ বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করার প্রস্তাব করেন তিনি।
বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন ম্যানুফ্যাকাচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, টিভি, ফ্রিজ শিল্পে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দাঁড়িয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করছে। সেজন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা প্রয়োজন। কিছু অসাধু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় এসব পণ্য আমদানি করে বাজার নষ্ট করছে। তাই তারা এ খাতে সংযোজন ও উৎপাদন দুইটি আলাদা করে দেওয়া এবং শুল্ককর আলাদা করার প্রস্তাব করেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মো. সাহিদ-উল-মনির কম্পিউটার হার্ডওয়্যার আমদানিতে শর্ত শিথিল করার প্রস্তাব করেন।
(সূত্রঃ বাসস)
কেআই/
আরও পড়ুন