যশোর রোডের গাছ কাটা বন্ধের আহ্বান বাপার
প্রকাশিত : ১৩:৫৪, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৫:২৯, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮
স্মৃতি বিজড়িত সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড চার লেনে উন্নীত করার দোহাইয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে ৩৬ হাজার হেক্টর বন। কেটে ফেলা হচ্ছে রাস্তার দুই পাশের দুই হাজার ৩১২টি গাছ। অন্যায় ও অপরিকল্পিত এ সিদ্ধান্তের কারণে এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভুলন্ঠিত হতে চলেছে। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের শর্ত পূরণও পিছিয়ে দিচ্ছে। তাই অনতি বিলম্বে ভাগ-বাটোয়ারার অভিপ্রায়ে এমন পরিবেশ ধ্বংসের নীলনকশা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), তুরুপল্লব, নাগরিক উদ্যোগ, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টসহ কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন এ দাবি জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সম্মেলনে বাপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বাপার যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবীব, আলমগীর কবির,শাহাজাহান মৃধা বেনু, তরুপল্লবের সাধারণ সম্পাদক মোকাররম হোসেন, বাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল আলম খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যশোর-বেনাপোল সড়কের সম্প্রসারণ পরিকল্পনা অশুভ চক্রের জন্য বৃক্ষ নিধন এবং লুটের এক বিরাট মওকা হয়ে উঠেছে। আমরা আশংকা করছি দুই লাখ টাকার গাছ বেচাকেনা হবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায়। বাকী সব ভাগাভাগি হবে ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ার, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসকদের মধ্যে। তাই এ গাছ ধ্বংসের নীল নকশা বন্ধ করতে হবে।
বাপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, রাস্তা সম্প্রসারণের নামে যে গাছ কাটার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে রাস্তা মোটেও সম্প্রসারণ হবে না, হবে ভাগ-বাটোয়ারা। প্রাক সমিক্ষা ছাড়াই এমন ধরণের কাজ শুধু পরিবেশ ও বন ধ্বংস করবে না। এর কারণে আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাও বাধাগ্রস্থ হবে। কেননা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পরিবেশ রক্ষার ওপর বিশেষ শর্ত আরোপ করা আছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিকল্প প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলা হয়, বিদ্যমান রাস্তার উত্তর বা দক্ষিণ কিংবা উভয় পাশ দিয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা করা যেতে পারে। যেখানে একপাশ দিয়ে থাকবে সাধারণ ও কম গতির যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা। সেটি দুই লেনের হলেই চলবে। মাঝখানে থাকবে গাছের সারি। এ লেনের জন্য মাটির কাজও বেশি করা দরকার হবে না। বন্যামুক্ত এলাকা বিধায় তা উঁচু করার দরকার হবে না। আবার নিচু থাকার ফলে ইচ্ছা করলেও এসব শ্লাথগতির গাড়ি মূল সড়কে উঠতে পারবে না। পাবনা, সিরাজগঞ্জে এ ধরণের রাস্তা নির্মাণ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। অন্য পাশ দিয়ে নির্মাণ করা যাবে ভারী গাড়ি চলাচলের উপযুক্ত শক্ত-মজবুত সড়ক। যেখান দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ টনের গাড়ি চলতে পারবে। মাঝখানে থাকবে বৃক্ষের সারি। আবার গাছগুলো রেখে চার থেকে ছয় লেনের রাস্তার করা যেতে পারে। তাই পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এবং বৃক্ষরাজি রক্ষা করে সড়ক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংবাদ সম্মেলন থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি।
আরকে//এসএইচ
আরও পড়ুন