যুবতী মাছ খেয়ে হয়ে গেলেন বৃদ্ধা!
প্রকাশিত : ১৫:৫৭, ৩০ জানুয়ারি ২০২০
আমরা সবাই জানি মাছ খেলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে। ত্বক ও মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটে। কিন্তু এই মাছ খেয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই এক যুবতী হয়ে গেলেন বৃদ্ধা। তরতাজা ফুটফুটে চেহারায় বৃদ্ধার ছাপ, মুখভর্তি ভাঁজ, ঝুলে পড়া চামড়া...২৩ বছরের ওই তরুণীকে দেখলে মনে হবে যেন ৭৩ বছরের বৃদ্ধা।
অবিশ্বাস্য এই ঘটনাটি ভিয়েতনামে। প্রতিদিনের মতোই এক মধ্যাহ্নভোজনে মাছ খেলেন গৃহবধূ থি ফুয়ং। এরপরই ওই তরুণীর শরীরে শুরু হয় অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন। এমনই এক অ্যালার্জি, যার জেরে রাতারাতি তরুণী থেকে বৃদ্ধায় পরিণত হন থি ফুয়ং।
২০০৮ সালের কোন এক দিন থি ফুয়ং খেলেন মাছ, তারপর থেকেই বুড়িয়ে যেতে থাকেন ওই টগবগে তরুণী। দীর্ঘ ১২ বছরেও মেলেনি এর সমাধান। বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। উপায়ান্ত না পেয়ে সম্প্রতি ভিয়েতনামের মেকং ডেলটা অঞ্চলের বেন ট্রি এলাকার বাসিন্দা থি ফুয়ং ও তার স্বামী থান টুয়েন সাহায্য চেয়ে পুরো ঘটনাটি মিডিয়ার সাহায্যে প্রকাশ্যে আনেন।
স্বামীর সঙ্গে থি ফুয়ং
২০০৬ সালে বিয়ে হয় থি ফুয়ং-এর। সেই ছবি দেখে এখনও ভেঙে পড়েন থি ফুয়ং। মিডিয়ার কাছে তিনি বলেছেন, মাছ খাওয়ার পর প্রথমে গোটা শরীর চুলকাতে শুরু করে। তখন স্থানীয় একটি ওষুধের দোকান থেকে অ্যালার্জির ওষুধ কিনে খান। এরপর বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী তাকে একজন বুড়ি হিসেবে দেখতে পান। প্রথমে তিনি ঘাবড়ে যান। কিন্তু পরে কণ্ঠ শুনে বুঝতে পারেন তিনি তার স্ত্রী।
পরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে যান ওই দম্পতি। শেষ পর্যন্ত তারা চীনে যান ডাক্তার দেখাতে। চীনের ডাক্তাররা জানান, তারা যে মাছ খেয়েছিলেন তাতে এক ধরনের বিষ ছিল। সেই বিষক্রিয়ায় তার এই অবস্থা হয়েছে। শুধু তাই নয় এ রোগের জন্য তাকে অনেক দামী ওষুধ খেতে হবে। শেষ পর্যন্ত স্বামী তার প্রায় সব সম্পদ বিক্রি করে স্ত্রীর জন্য সেই ওষুধ কেনেন। কিন্তু তাতেও কোনো উন্নতি হয়নি।
থি ফুয়ং-এর এই জটিলতাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে লাইপোডিসট্রফি। এটি এমন একটি অসুখ যেখানে ত্বকের নীচে পুরু ফ্যাটি টিস্যুর স্তর তৈরি হয়। এই সিনড্রোমের চিকিৎসা বিশ্বে এখন পর্যন্ত নেই বললেই চলে। এই অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চামড়া ঝুলে পড়ে, গোটা শরীর বুড়িয়ে যায়। মারাত্মক বিরল এই অসুখ। গবেষণা বলছে, গোটা বিশ্বে মাত্র ২ হাজার মানুষ এই অসুখে আক্রান্ত।
সূত্র: ডেইলি মেইল
এএইচ/