ঢাকা, শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫

যেভাবে মহাকাশে সবাইকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে চীন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৫২, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

চাঁদের যে অংশটি পৃথিবী থেকে কখনোই দেখা যায় না, সেই দূরবর্তী দিকে এই প্রথম একটি রোবট চালিত মহাকাশযান নামিয়েছে চীন।    

চীনের মহাকাশযান চাঙ-আ ৪ চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে বলে দাবি করছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। এটিকে চীনের মহাকাশ কর্মসূচীর জন্য এক বিরাট সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।

চাঙ-আ ৪ চাঁদের দূরবর্তী দিকের যেখানে ভূমি স্পর্শ করে, সেটি `সাউথ পোল এইটকেন বেসিন` নামে পরিচিত। চাঁদ গঠিত হওয়ার একেবারের শুরুর দিকে বিরাট কোন সংঘর্ষের ফলে সেখানে এই বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

চীনের মহাকাশ কর্মসূচীর বয়স বেশি নয়। ২০০৩ সালে চীন প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশযান পাঠায়। যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার পর তারা হচ্ছে তৃতীয় কোন দেশ যারা মহাকাশ কর্মসূচীতে এরকম সাফল্য দেখালো।

আগামী কয়েক বছরে চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহাকাশ টেলিস্কোপ ও বিশ্বের সবচেয়ে ভারী রকেট উৎক্ষেপণ এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের মতো নিজেদের মহাকাশ স্টেশন বসানোর পরিকল্পনা করছে।   

চীনের মহাকাশ কর্মসূচীর পাঁচটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হচ্ছে:

১. চাঁদে অভিযান  

চীনের চাঙ-আ মহাকাশযানটির নাম রাখা হয়েছে এক চীনা দেবীর নামে। চীনা উপকথা অনুযায়ী, এই দেবী চাঁদে উড়ে যেতে পারেন। ২০০৩ সালে চীন তাদের কর্মসূচী শুরু করে। তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০৩৬ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানো।   

চাঁদের উল্টোপৃষ্ঠে কোন মহাকাশযানকে অবতরণ করানো বেশ কঠিন বলে মনে করা হয়। কারণ মহাকাশযানের সঙ্গে পৃথিবীর সরাসরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে চাঁদ নিজেই একটা বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

এই সমস্যার সমাধানের জন্য চীন পৃথিবী আর চাঁদের মাঝখানে একটি `রিলে স্যাটেলাইট` বসিয়েছে। পৃথিবী থেকে এই স্যাটেলাইটের দূরত্ব প্রায় চার লাখ কিলোমিটার। এই স্যাটেলাইট থেকেই চীনের লুনার ল্যান্ডার এবং রোভারের সিগন্যাল পাঠানো হচ্ছে।

চাঙ-আ ৪ অনেক যন্ত্রপাতি বহন করে নিয়ে গেছে চাঁদে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর জন্য। চাঁদের উল্টোপৃষ্ঠের অনেক কিছুই যেহেতু এখনো পর্যন্ত অজানা, তাই সেখানে তারা যন্ত্রপাতি পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে।  

একটি `মিনি বায়োস্ফেয়ার` বা জীবমন্ডল তৈরি করে সেখানে আলু ফলানো যায় কীনা, কিংবা রেশমগুটি ফুটানো যায় কীনা, তা নিয়েও পরীক্ষা চালাবে চীন।

পৃথিবী থেকে কখনোই যে চাঁদের একটি পৃষ্ঠ দেখা যায় না, সেটিকে `টাইডাল লকিং` বলে বর্ণন করা হয়। এর মানে হচ্ছে, চাঁদ যে গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, ঠিক সেই একই গতিতে এটি নিজের অক্ষের ওপর ঘুরে। ফলে চাঁদের একটি অংশ পৃথিবী থেকে অদেখা থেকে যায়। যাকে চাঁদের `ডার্ক সাইড` বলেও বর্ণনা করা হয়।   

২. সবচেয়ে বেশি রকেট উৎক্ষেপণ  

২০১৮ সালে মহাকাশে সবচেয়ে বেশি রকেট পাঠিয়েছে চীন। মোট ৩৯টি রকেট উৎক্ষেপণ করে চীন, এর মধ্যে বিফল হয়েছে মাত্র একটি। মহাকাশে এক বছরে সর্বোচ্চ রকেট পাঠানোর এর আগের রেকর্ডটি ছিল ২০১৬ সালে, সেবছর পাঠানো হয়েছিল ২২টি রকেট।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়েছে ৩৪টি রকেট আর তৃতীয় স্থানে ছিল রাশিয়া। তারা উৎক্ষেপণ করে ২০টি রকেট।   
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মহাকাশ কর্মসূচীর পেছনে খরচ করে ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে সেবছর চীন খরচ করেছিল ৫ বিলিয়ন ডলারেরও কম। 

কিন্তু পৃথিবীর কক্ষপথে প্রচুর স্যাটেলাইট বসাতে চীন এখন `সুপার-হেভি লিফট` এবং পুর্নব্যবহারযোগ্য রকেট তৈরি করছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা     

এসি

  


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি