যেসব ভিটামিনে ভালো ঘুম হয়
প্রকাশিত : ১১:১২, ২১ আগস্ট ২০১৮
ঘুম মানুষের শরীরের জন্য অপরিহার্য। সারা দিনের ক্লান্তির ভাব মুছে দেয় ঘুম। একজন মানুষ কে সুস্থ থাকতে দৈনন্দিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। অনেকে আছেন যারা নিদ্রাহীনতায় দিন পার করছেন। অনেকে আছেন হঠাৎ মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম ভেঙে গেলে এপাশ-ওপাশ করে কাটাতে হয় বাকি সময় আরও। ঘুমে সমস্যার অন্যতম কারণ স্ট্রেস। পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব।
আসুন জেনে নিন, ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সম্পর্কে—
ভিটামিন সি
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান । তবে ভালো ঘুমের জন্যও এটি অপরিহার্য একটি উপাদান। যাদের রক্তে ভিটামিন ‘সি’র মাত্রা কম, তারা স্বভাবতই ঘুমের সমস্যায় ভোগেন এবং মাঝরাতে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। তাই যারা প্রায়ই মাঝরাতে জেগে ওঠেন, তারা একটু খেয়াল করে দেখুন খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ‘সি’র অভাব আছে কিনা? খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে কাঁচামরিচ, সাইট্রাস ফল, আম ও সবুজ শাক।
ভিটামিন বি১২
ভিটামিন বি-১২ স্নায়ুর সুস্থতা ও শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যারা ভেজিটেরিয়ান তাদের শরীরে সাধারণত ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি দেখা যায়। ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতিতে শরীরে দুর্বলতা, ঘুমে সমস্যা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। একই সাথে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন বি-১২ গ্রহণ করলে ত্বকে অমসৃণ হয়ে যায়, পেটে ব্যথা, মাথা ঝিনঝিন করা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভিটামিন ডি
শরীরকে ক্যালসিয়াম শুষে নিতে সহায়তা করে ভিটামিন ‘ডি’। ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতিতে ঘুম না হওয়া ও প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুম হওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। ২০১৭ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ‘ডি’র অভাব ও ঘুমে সমস্যার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে।
অন্য আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি সম্পূরক ঘুমের উন্নতি ঘটায়। তবে আপনার শরীরে কী পরিমাণ ভিটামিন ‘ডি’র প্রয়োজন, তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। কারণ অতিরিক্ত ভিটামিন ‘ডি’ সম্পূরক গ্রহণে দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি ভাব ও কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার মতো কঠিন সব সমস্যা।
আয়রন
আয়রন সারা শরীরে অক্সিজেন ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। আয়রনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং ঘুমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাদ্যতালিকায় আয়রন জাতীয় খাবার অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন সম্পূরক গ্রহণ করা যেতে পারে।
ট্রিপটোফেন
ট্রিপটোফেন খুবই প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড। ট্রিপটোফেন ঘুমের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। শরীর যদি প্রয়োজনীয় ট্রিপটোফেন তৈরি করতে না পারে,তবে খাবার থেকে তার জোগান দিতে হবে। খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে ডিম, মুরগির মাংস, মিষ্টি ও আলু।
মেলাটোনিন
রাতের বেলা মস্তিষ্কে এক ধরনের হরমোন উৎপাদন হয়। এর নাম মেলাটোনিন। মেলাটোনিনকে বলা হয় ‘হরমোন অব ডার্কনেস’। এ হরমোন শরীরকে দিন ও রাতের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। যদি মেলাটোনিন যথেষ্ট পরিমাণে উত্পন্ন না হয়, তাহলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে রাতের স্ন্যাকস হিসেবে রাখতে হবে চেরি, আখরোট ও আদা।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট