ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

যে কফিশপের কর্মীরা সবাই প্রতিবন্ধী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৩০, ৬ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৪:৫৯, ১৩ মে ২০১৮

ফ্রান্সে প্রতিবন্ধীদের দৈনন্দিন জীবন বেশ সংগ্রামমুখর, যা অন্যদের থেকে বেশ জটিল। পৃথিবীর সব শারীরিক প্রতিবন্ধীদের অবস্থাও অনেকটা এমনই। দেশটিতে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান এতই অপ্রতুল যে, সরকারকে এদের কাজের জন্য আইন করতে হয়েছে। প্যারিসে এমন একটি কফি শপ নিয়ে যেখানে কাজ করা কর্মীদের সবাই শারীরিক প্রতিবন্ধী।

প্যারিসের এই কফি শপ তথা রেস্টুরেন্টটির নাম জয়েক্স। রেস্টুরেন্টের নামের নিচে ছোট হরফে লেখা আছে ‘সার্ভি অ্যাভেক লে কোয়েআর’। গুগল ট্রান্সলেটর বলছে যে, ফেঞ্চ এই লাইনটির বাংলা অর্থ ‘হৃদয় দিয়ে পরিবেশিত’। কফি শপের এক ঝাঁক শারীরিক প্রতিবন্ধী কর্মী তাদের হৃদয় দিয়েই গ্রাহকদের খাবার পরিবেশন করে থাকেন।

শারীরিক অথবা মানসিক সীমাবদ্ধতা থাকা কর্মীদের নিয়ে পরিচালনা করা কফি শপ প্যারিসে এটিই প্রথম।

এখানকার ২৭ বছর বয়সী এক নারী কর্মকর্তা আলেকজান্ড্রা বিবিসিকে জানিয়েছেন তাঁর কাজের ব্যাপারে। তিনি বলেন, আমি জয়েক্স ক্যাফের বারিস্টা দলে কাজ করি। কফি স্টেশন দেখভাল করাই মূলত আমার কাজ। এখানে কাজ করা সবাই শারীরিক দিক দিয়ে কোন না কোন সমস্যায় আক্রান্ত। আমাদের সবার মধ্যেই এই সীমাবদ্ধতা আছে।

এই কফি শপের ব্যবস্থাপকে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ এই যে, কে কোনো কাজটি পারবে তা বুঝে সেই কাজটি তাঁকে দেওয়া। এছাড়া দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার পর কীভাবে তা করতে হবে তাও তাঁকে সময় নিয়ে বুঝিয়ে দিতে হয়।

আলেকজান্ড্রা বলেন, ব্যবস্থাপক সময় নিয়ে আমাদেরকে আমাদের কাজ বুঝিয়ে দেন। সে কাজ কিচেনের হোক অথবা শপের মধ্যের।

সাধারণের মধ্যে থাকা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কাজ সম্পর্কে ধারণা পালটে দিতেই জয়েক্সের এই উদ্যোগ বলে জানায় আলেকজান্ড্রা। জয়েক্সে কাজ করতে ভালবাসেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি এখানে কাজ করতে ভালোবাসি কারণ আমি এখন মানুষদের দেখতে পারি। তাদের সঙ্গে মিশতে পারি। এখানের সবাই খুব উদার। আমার সহকর্মীরাও খুব ভালো। আমরা একে অপরের সাথে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করি।

এখানে কাজ করা খুব ঝক্কির কাজ না। তবে সকালের দিকে কাজের চাপ থাকে। তবুও এটা ঠিক আছে।

ফ্রান্সের আইন অনুযায়ী, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে অন্তত ৬ শতাংশ কর্মী শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে থেকে নিয়োগ দিতে হবে। তবে আইনটি কার্যত মানা হয় খুব কম। দেশটিতে থাকা প্রতিবন্ধীদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ কাজ পায়। তাও নাম মাত্র কাজ।

আমি এই কফি শপের আগে আরেকটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম। সেখানে আমাকে দিয়ে তেমন কোন কাজ করানো হতো না। তারা ভাবতেন আমি করতে পারব না। আমি কাজে কোন চ্যালেঞ্জ অনুভব করতাম না। তাই সেটি ছেড়ে জয়েক্সে এসেছি। এখানের কাজ ভালো লাগছে”-বলছিলেন আলেকজান্ড্রা।

আমি খুবই লাজুক আর তাই সবার সাথে কথা বলতে পারি না। কিন্তু জয়েক্স আমাকে দিয়ে এই কাজটিই করায়। সবার সাথে কথা বলতে হয় আমাকে।  

*বিবিসি অবলম্বনে

//এস এইচ এস// এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি