যে গ্রামে বাস শুধুই শতবর্ষীদের
প্রকাশিত : ১৩:৩৫, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১০:৩৪, ২৯ মার্চ ২০১৮
ইতালির সারদিনিয়ার মানুষের গড় আয়ু একশো বছরের কাছাকাছি। সারাদিনিয়ার মতো গ্রিসের ইকারিয়া, কোস্টারিকার নিকোইয়া, জাপানের ওকিনওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের লোমা লিন্ডার মতো জায়গাতেও মানুষের গড় আয়ু একশোর কাছাকাছি। তবে এসব জায়গায় প্রতি চার জনে একজন শতায়ুর অধিকারী হন। কিন্তু সারাদিনিয়ায় প্রতি দু’জনের একজন শতায়ুর অধিকারী।
শুধু তাই নয়, সারদিনিয়ায় শতায়ু অর্জনকারী নারী-পুরুষের অনুপাত প্রায় একই রকম। তবে এখানে সবচেয়ে বেশি বয়স লাভ করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে বৈশিষ্টমন্ডিত তিয়ানা গ্রামটি। এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের বয়সই প্রায় একশ’ বছর। একশ’ বছরের বেশিদিন বেঁচে থাকা মানুষের ক্ষেত্রে তিনগুণ রয়েছে তিয়ানা গ্রামে। এ কারণেই এই গ্রামটি অন্য সব অঞ্চল থেকে ব্যতিক্রম।
তিয়ানা গ্রামের বাসিন্দা অ্যান্থেনিয়ো টডেই হচ্ছেন পৃথিবীর একমাত্র স্বীকৃত মানুষ যিনি একই সাথে তিনটি শতক পেয়েছেন। উনিশ শতকের শেষ দিকে জন্মগ্রহণ করে অ্যান্থেনিয়ো বেঁচে ছিলেন একুশ শতকের শুরু পর্যন্ত। ১১০ বছর বয়সে ২০০২ সালে মারা যান তিনি। তার ছেলে ৮৪ বছর বয়সী টোনিয়োর আশা করেন একশো বছর বেঁচে থাকবেন। মূলত উন্নত জিনগত বৈশিষ্ট্য, সুষম খাবার এবং শারীরিক কসরতের কারণে এখানকার মানুষ দীর্ঘ জীবনের অধিকারী হয়।
গবেষকদের মতে, সামাজিক মিথষ্ক্রিয়া এখানে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। পরিবারের সদস্যদের সুসম্পর্ক, সেবা এবং নিজস্ব সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে পারস্পারিক কর্মকাণ্ড বেশি দিন বেঁচে থাকার শক্তি জোগায়। তবে তিয়নার বাসিন্দারা মনে করেন, বেশিদিন বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে জিনগত বৈশিষ্ট্যের চেয়ে সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ই বেশি ভূমিকা রাখে।
জনতত্ত্ববিদ এবং চিকিৎসক ড. গিয়োভান্নি পেস এক গবেষণায় দেখতে পান, সারদিনিয়ায় মানুষের মৃত্যু হার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম। এখানে বেশ কিছু গ্রামে মানুষের গড় আয়ু বেশি। যেসব অঞ্চলে মানুষের গড় আয়ু বেশি সেসব অঞ্চলকে তিনি ‘ব্লু জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এবং বিশেষ এক মানচিত্র প্রস্তুত করেন। এই মানচিত্রে সারদিনিয়ার পাশাপাশি গ্রিসের ইকারিয়া এবং কোস্টারিকার নিকোইয়াকে অন্তর্ভুক্ত করেন গিয়োভান্নি।
সূত্র: সিএনএন
একে// এআর