রক্তে রাঙ্গানো ফেব্রুয়ারি মাস শুরু
প্রকাশিত : ১৩:০০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’- রক্তে রাঙানো সেই ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে। আজ থেকে ধ্বনিত হবে সেই অমর সংগীতের অমিয় বাণী। বাঙালী জাতি সারা মাসজুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের। সেই সঙ্গে শুরু হচ্ছে মাস ব্যাপি একুশে বইমেলা।
ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ। জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ ঘটে এখান থেকেই।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দুর্বার আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালী জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালীর স্বাধীকার আন্দোলন এবং একাত্তরে ৯ মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
বস্তুত ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে আছে এর গৌরবোজ্জ্বল দিক। কারণ, পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালী ভাষার জন্য এ মাসে জীবন দিয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর থেকেই শুরু হয় ননা কর্মসূচি। এ মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযঞ্জ মাস ব্যাপি বইমেলা। এবছর মাস ব্যাপি বইমেলা শুরু হচ্ছে রবিবার থেকে। ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটির নির্বচনের কারণে এবার মেলার শুরু একদিন পিছিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে। এদিন বাংলা একাডেমিতে বিকাল ৩টায় এই মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এবার বইমেলার একটি নতুন থিম নির্ধারণ করা হয়েছে। আর তা হল- বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ। গ্রন্থমেলা বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে মেলার আঙ্গিক ও সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে অনেক স্থাপনা করা হয়েছে। মেলার বিভিন্ন অংশ বঙ্গবন্ধুকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে তাঁর জীবনের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র ফুটে ওঠে।
অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে একই দিন অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি থেকে থেকে শুরু হচ্ছে দু’দিনব্যাপী ‘৩৪তম’ জাতীয় কবিতা উৎসব। চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের অনুষ্ঠানে ৭টি দেশ থেকে কবিরা যোগ দেবেন বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে। এবার জাতীয় কবিতা উৎসবের উদ্বোধন করবেন কবি মহাদেব সাহা। এছাড়াও এ উৎসবে ৩জন ভাষা সংগ্রামী প্রবীণ কবিকে জাতীয় কবিতা পরিষদ সন্মাননা প্রদান করা হবে।
এসএ/