ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

রফতানি আয়ে সাত মাসে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

প্রকাশিত : ২৩:৪৮, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রফতানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে দুই হাজার ৪১৮ কোটি মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে, একক মাস হিসেবে সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়েছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ২৪০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৪১৮ কোটি ডলার। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ২ হাজার ১৩২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার।

অন্যদিকে, জানুয়ারি মাসে ৩৬২ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় হয়েছে ৩৬৮ কোটি ডলার। সুতরাং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় গত মাসে রফতানি আয় ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি হয়েছে। গত অর্থবছরের জানুয়ারিতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৪০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।

প্রধান রফতানি পণ্য পোশাক খাতের আয় ধারাবাহিকভাবে ভাল হওয়ায় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিজিসিসিআই)’র সভাপতি ব্যারিস্টার ওমর সাদাত বলেন, বাংলাদেশের রফতানি খাত মূলত পোশাক নির্ভর। রফতানিতে পোশাক খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছে। এর পাশাপাশি ব্যবসায় পরিবেশ বিশেষ করে গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভাল হওয়ায় রফতানি আয়ে ভাল প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।
তিনি রফতানি আয় সম্প্রসারণে প্রচলিত বাজার ছাড়াও নতুন বাজার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো এবং পণ্য বহুমূখীকরণ বিশেষ করে বেশি মূল্য সংযোজন হয় এমন পণ্য রফতানির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।

ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’ (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, ব্যবসায় অনুকূল পরিবেশ আগের তুলনায় ভাল হওয়ায় পোশাক খাত দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে অবকঠামোখাতে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করা গেলে রফতানি আয় আরো বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য রফতানি বাড়াতে বৈচিত্র্যপূর্ণ শিল্প পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন।

ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোশাক খাতের নিট পণ্য (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দুই-ই বেড়েছে। ৯২৭ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় দাঁড়িযেছে ১ হাজার ১৪ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গতবছরের একইসময়ে এই খাতে রফতানি ছিল ৮৯০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যেও (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। ৯৫০ কোটি ২২ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে ১ হাজার ৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের। গতবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৮৭৪ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।

জুলাই-জানুয়ারি সময়ে বড় পণ্যের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। এই খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যার প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। মাছ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করার মত। এ সময়ে ৩৬ কোটি ১০ লাখ ডলারের মাছ রফতানি হয়েছে। এর প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক শুন্য ১ শতাংশ। তবে চামড়া ও চামড়জাত এবং পাট ও পাট পণ্যের রফতানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।

গতবছরের প্রথম সাত মাসে চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রফতানি ছিল ৭০ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের, এবারের একই সময়ে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে ৪৯ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ১৮ লাখ ডলার।
এছাড়া কৃষিজাত পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। এ সময়ে ৫৭ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের কৃষিজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ৬১ দশমিক শুন্য ৩ শতাংশ।পাশাপাশি আসবাবপত্র, হস্তশিল্প, বিশেষায়িত টেক্সটাইল পণ্য, রাসায়নিক পণ্য ও পাদুকার রফতানি বেড়েছে। তবে হোম টেক্সাটাইলসহ কয়েকটি পণ্য রফতানি গত অর্থবছরের তুলনায় কমেছে।

সূত্র-বাসস

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি