রমজানে খানাপিনা
প্রকাশিত : ২০:২৩, ২০ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৫৬, ২৩ মে ২০১৮
রমজান মাস পবিত্র মাস। রমজানে রোজা ভালোভাবে পালনের জন্য শারীরিক সুস্থ্যতা খুবি জরুরি। রোজায় সবাইকে একটা সুনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হয়। এ সময় শরীরের জমাকৃত কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট থেকে এনার্জি নিয়ে কাজ করে। তাই রোজায় প্রত্যেক বেলার খাবার গ্রহণে ব্যালেন্স রাখতে হবে। খাবারে সব ধরনের খাদ্য উপাদান থাকাটা খুবি জরুরি। শর্করা জাতীয় খাবার রাখতে হবে ইইফতারিতে। যেমন মুড়ি, চিড়া, খেজুর, ফলের রস ইত্যাদি। প্রাকৃতিক খাবার থেকে এনার্জির সাথে সাথে, পুষ্টি উপাদান ও পাওয়া যাবে। এছাড়াও এ সময় পর্যাপ্ত প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে।
প্রকৃতিতে চলছে গ্রীষ্মকাল। আর সাধারণত গ্রীষ্মকালে শরীরের ডিহাইড্রেশন বেশি হয়। তাই এসময় রোজা রেখে শরীরকে হাইড্রেট রাখতে প্রচুর পানি বা ফলের রস গ্রহণের বিকল্প নেই। সাথে সামান্য পরিমানে চিনি বা লবণ মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। খাবারের পরিবর্তনের সাথে পানি গ্রহণ কম হয়ে গেলে, কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই পানি বা ফল, ফলের রস এবং সবজি ইত্যাদি আশযুক্ত খাবার রোজায় বেশি খেতে হবে। এ সময় অতিরিক্ত অয়েলি খাবার না খাওয়া শ্রেয়। এতে লিপিড প্রোফাইল খারপ হয়ে যেতে পারে, মানে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যেতে পারে। যারা রোজায় চর্বি জাতীয় খাবার মেনে চলবেন, তারা এই ঝুঁকি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এমনকি যাদের এই ধরনের সমস্যা আছে এ নিয়ম মেনে চললে তারা ভালো হয়ে যেতে পারেন। এছাড়াও খাবার পরিমিত খেলে রোজায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা অবশ্যই খাবার গ্রহণে সচেতন থাকবেন। কারণ যাদের কিডনি রোগ বা গেটে বাত (ইউরিক এসিড) আছে, তাদের ডাল জাতীয় খাবার পরিমাণে খুব কম খাওয়া বা একেবারেই না খাওয়া উচিৎ।
রোজার সময় অনেকের পেটের সমস্যা দেখা দেয়। এটা সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণের জন্য হয়। তাই তারা চাইলে প্রতিদিন ইফতারে দই চিড়া খেতে পারে। কারণ দই রয়েছে প্রোবাওটিক, যা পেটের গাট ব্যাক্টেরিয়াকে ধংস করে।
এছাড়াও এখন যেহেতু গ্রীষ্মকাল সেহেতু এই সময়কে ফলের জন্য মধু মাস বলা হয়ে থাকে। তাই মৌসুমিফল খেলে রোজায় হাইড্রেটেড থাকা যাবে খুব সহজেই। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার বা পানীয় রোজায় না খেয়ে প্রাকৃতিক খাবার থেকে এনার্জি নেওয়াই শ্রেয়। চিনির পরিবর্তে মধু খেলে উপকার বেশি পাবেন। যারা ডায়াবেটিকসের রোগীরা তাদের খাবার গ্রহণ এবং ইন্সুলিন ব্যাবহারে সচেতন থাকবেন।
যারা প্রসুতি মা তাদের ও খাবার ব্যালান্স করতে হবে। তাদের যেহেতু এসিডিটির সমস্যা থাকতে পারে, সেহেতু তারা এই সময় সহজে হজমযোগ্য খাবার গ্রহণ করবেন আর প্রচুর পানি বা ডাবের পানি গ্রহণ করবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের শারীরিক অবস্থা বুঝে খেতে হবে।
সবশেষে বলতে চাই রোজা আল্লাহর ইবাদত। রোজার নিয়ম সঠিকভাবে পালন করবেন এবং ইবাদত পালন করার জন্য শারীরিকভাবে সুস্থ্য থাকবেন।
লেখক: পুষ্টিবিদ, ল্যাব এইড হাসপাতাল, পল্লবী শাখা