রাজধানীতে পৃথক দুর্ঘটনায় এক নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু
প্রকাশিত : ০৯:২০, ৫ জুলাই ২০২৪
রাজধানীতে পৃথক দুর্ঘটনায় এক নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্য একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্টে, একজন ভবন থেকে নিচে পড়ে, একজন ট্রেনে কাটা পড়ে এবং একজন প্রাইভেটকারের ধাক্কায় মারা যায়। নিহতদের মধ্যে দুই জন নির্মাণ শ্রমিক এবং একজন সাবেক সরকারি কর্মচারী বলে জানা গেছে।
মিরপুরের পল্লবী, আজিমপুর, পূর্ব রাজাবাজার আমতলা ও খিলক্ষেত রেলক্রসিং এলাকায় পৃথক এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকরা হলো মো. জাকারিয়া (২৭) খাইরুন্নেছা (৩৯), হাবিবুর রহমান ও ফজলুর রহমান (২৫)। জাকারিয়া পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার নেসার উদ্দিনের পুত্র। তিনি মিরপুরে নির্মাণাধীন ওই ভবনেই থাকতেন। অপরজনের নাম খাইরুন্নেছা (৩৯)। মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার আবুল হোসেনের স্ত্রী।
গুরুতর আহত অবস্থায় জাকারিয়া ও খাইরুন্নেছা কে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাদের বেলা ১১টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের সহকর্মী শ্রমিক মো. জালাল জানান, আজ সকাল ১০ টার দিকে মিরপুর-১১ নম্বরে নির্মাণাধীন একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছিলেন । এ সময় হঠাৎ করে জাকারিয়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিকেল সাড়ে ৪ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ওসি) মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদহ ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। এবিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে, মৃত জাকারিয়ার সহকর্মীরা জানান, পল্লবী থানার মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের মদিনাবাগ এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ৩ তলা ভবনে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিল তারা। কাজ করার সময় হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ভবনটির তৃতীয় তলা থেকে নিচে পড়ে যায় জাকারিয়া। দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে ডিউটিরত চিকিসৎক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
এদিকে খায়রুন্নেছাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সহকর্মী মিলন জানান, তারা আজিমপুর এতিমখানা সংলগ্ন সরকারি কোয়ার্টারের একটি ৪ তলা ভবনে সংস্কারের কাজ করছিলেন। সেখানে কাজ করার সময় চতুর্থ তলা থেকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন লেবার খাইরুন্নেছা। ঢামেক হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বোন জোসনা আক্তার জানান, বর্তমানে কামরাঙ্গীরচরের মাতবর বাজার এলাকায় থাকেন। গত কয়েকবছর আগে
খায়রুন্নেছার স্বামী আবুল হোসেন মারা গেছেন । সংসার চালাতে নিরুপায় খায়রুন্নেছা লেবারের কাজ করতেন।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ওসি) মো. বাচ্চু মিয়া তাদের দু'জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতদের মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
ডিএমপি শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ ও স্হানীয় লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার আমতলা এলাকার একটি ১০ তলা ভবনের নিচ তলায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী ফজলুর রহমান (২৫) মারা গেছে। প্রাইভেটকারটির চালক ছিলেন মালিক নিজেই ইঞ্জিনিয়ার মফিদুল ইসলাম।
ওই ১০ তলা ভবনের এক বাসিন্দা জানান, ইঞ্জিনিয়ার মফিদুল ইসলাম ওই ভবনের তৃতীয় তলায় একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ভবনের পার্কিংয়ে থাকা নিজের গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন । এ সময় হঠাৎ প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দারোয়ান ফজলুর রহমানকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে গেট ভেঙে বেরিয়ে যায়। এতে মারা যান নিরাপত্তা কর্মী ফজলুর রহমান।
তিনি আরও জানান, গত দেড় মাস ধরে অ্যাপার্টমেন্টে দারোয়ানের চাকরি করতেন। তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়।
এ ঘটনায় কমলাপুর রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন