রাজশাহীতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা
প্রকাশিত : ২১:০০, ৪ মে ২০১৯
রাজশাহীর বাগমারায় এক স্কুল শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ভুট্টা ক্ষেতে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার যোগিপাড়া ইউনিয়নের বারুইহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয় লোকজন ধর্ষণের চেষ্টাকারি ওই যুবককে আটক করে।
ধর্ষণের চেষ্টাকারি যুবকের নাম তৌহিদ আলী (২৫)। সে একই গ্রামের এহিয়া আলীর ছেলে। এহিয়া কুদাপাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক। তৌহিদ বিবাহিত হলেও কিছুদিন আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের চেষ্টার শিকার শিশুটি স্থানীয় স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিবেশি এক ছোট ভাইকে নিয়ে মাঠে ঘাস কাটতে যায়। বেলা ১১টার দিকে তৌহিদ স্কুলছাত্রী শিশুটিকে জোরপূর্বক ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
এসময় দুই শিশুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তৌহিদকে আটক করে। বিকেলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম-পুলিশ পাঠিয়ে তৌহিদকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। সেখানে সালিশি বৈঠকে তাকে কান ধরে ক্ষমা চাওয়ার পর শিশু স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টাকারি তৌহিদকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য বলেন, মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের পর ওই যুবকে ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নামমাত্র সালিশ বৈঠক বসানোর পর তাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। ধর্ষণের চেষ্টাকারি তৌহিদ কান ধরে ক্ষমা চাওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মধ্যে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
শিশুটির প্রতিবেশি এক চাচা জানান, ‘এঘটনায় শিশুটি প্রচন্ড ভয় পেয়েছে। ঘটনার পর থেকে চঞ্চল শিশুটি চুপ হয়ে গেছে। কারও সঙ্গে তেমন কথা বলছে না বা ঘরের বাহিরে বের হচ্ছে না। ঘটনাটির শক্ত বিচার হওয়া উচিত ছিল।’
যোগাযোগ করা হলে আপোস-মীমাংসার জন্য অর্থ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে যোগিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর গ্রাম-পুলিশ পাঠিয়ে ওই ছেলেকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে মেয়ের পিতাকে মামলা করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু মেয়ের কথা ভেবে সে রাজি হননি। সে কারণে সালিশি বৈঠক বসিয়ে আপোস-মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। ছেলেটি শুধুমাত্র ‘মেয়েটির গায়ে হাত দিয়েছে, ধর্ষণের চেষ্টা করেনি’ দাবি করে মোস্তফা কামাল।
তিনি আরও বলেন,‘সালিশ বৈঠকের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসির অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তাদের অনুমতিক্রমে প্রায় ৫০ জন লোকের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক করে মীমাংসা করা হয়। সালিশ শেষে তৌহিদ কান ধরে সকলের কাছে ক্ষমা চায় এবং আর কোনদিন এধরণের ঘটনা ঘটাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। এনিয়ে তার কাছে লিখিত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তৌহিদকে ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ে আসার আগে স্থানীয় লোকজন তাকে মারধর করে।’
বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন,‘মাঠের মধ্যে এক মেয়ের গায়ে একছেলে হাত দিয়েছে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে শুনেছি। তবে এনিয়ে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’
কেআই/
আরও পড়ুন