ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

রানা প্লাজার ধকল কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পোশাক শিল্প (ভিডিও)

তৌহিদুর রহমান

প্রকাশিত : ১১:৪১, ২৪ এপ্রিল ২০২২

রানা প্লাজার ধকল কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পোশাক শিল্প। বিদেশি ক্রেতা-প্রতিষ্ঠান সবাই ফিরেছে। বাড়ছে রপ্তানিও। ৯৮ ভাগ কারখানার কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা-ব্যবস্থা এখন বিশ্বমানের। গ্রীন ফ্যাক্টরি বা পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার বৈশ্বিক তালিকাতেও বাংলাদেশ শীর্ষে।

বদলে গেছে দেশের পোশাক শিল্প। অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে কর্মপরিবেশ। শ্রমিকরা পেয়েছেন সংগঠনের অধিকার। সব মিলে প্রায় এক দশকে বড় রূপান্তর ঘটেছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে। 

তবে রূপান্তরের পেছনের গল্পটি নির্মম ও মর্মান্তিক। হাজারো শ্রমিকের প্রাণ গেছে তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকান্ড, আর ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায়। যা নাড়া দেয় গোটা বিশ্বকে। ইমেজ সংকটে পড়ে পোশাক খাত। 

এমন প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের তত্ত্বাবধানে কারখানার অবকাঠামো সংস্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শ্রম অধিকার ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে পরিচালিত হয় ব্যাপক সংস্কার কাজ। পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে পোশাক শিল্পে।   

বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, “রানার প্লাজার ঘটনার পর প্রতিটি ফ্যাক্টরি ওয়ান টু ওয়ান অডিড করা হয়েছে। ওই বিল্ডিংয়ের স্ট্রাকচার-ডিজাইন কিভাবে আছে, ফায়ার ব্যবস্থা কিভাবে আছে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। আমি বলবো এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ফ্যাক্টরিগুলো সেফেজ ফ্যাক্টরি ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড।”

বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম বলেন, “প্রতিটি ফ্যাক্টরিকে ফায়ার ও সেফটির জন্য ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে।”

পোশাক খাত নিয়ে আশাবাদী অর্থনীতিবিদরাও। তবে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ তাদের।

অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “রানার প্লাজার পূর্ববর্তী সময়ের সঙ্গে যদি এখন তুলনা করি তাহলে বলবো যে, এখনকার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাত অনেক বেশি সক্ষম, দক্ষ এবং অনেক বেশি শ্রমিকবান্ধব।”

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল দেশের ১৬০টি তৈরি পোশাক কারখানাকে পরিবেশবান্ধব কারখানার সনদ দিয়েছে। যদিও এ সংখ্যা আরও বেশি। আর বিশ্বের শীর্ষ ১০ পরিবেশবান্ধব কারখানার ৭টিই এখন বাংলাদেশে। কর্মপরিবেশ ভালো হওয়ায় সন্তুষ্ট শ্রমিকরাও। 

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর মুখ ফিরিয়ে নেয়া বিদেশি ক্রেতা-প্রতিষ্ঠান সবাই ফিরে এসেছে। বাড়ছে ক্রয়াদেশ। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে চান উদ্যোক্তারা।

লায়লা স্টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুর রহমান বলেন, “একটা দুর্ঘটনার পর কামব্যাক করতে পারাটা হচ্ছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ থেকে আমরা অনেকটাই উৎড়ে এসেছি।”

তৈরি পোশাক শিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্ববাজারে দিন দিন উজ্জ্বল হচ্ছে। শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা, উদ্যোক্তাদের সাহস, আন্তর্জাতিক মানের কর্ম পরিবেশ সব মিলিয়েই মেডইন বাংলাদেশীর পণ্যকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এই ধারা অব্যাহত রেখে আগামীতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আরও বাড়বে এমন প্রত্যাশা সবার। 

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি