রানা প্লাজা ধসের আহতদের অনেকেই এখনও বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেননি
প্রকাশিত : ১৮:১৫, ২২ এপ্রিল ২০১৬ | আপডেট: ১৭:০৯, ২৩ এপ্রিল ২০১৬
সাভারে রানা প্লাজা ধসের তিন বছর পার হতে চলেছে। কিন্তু, এখনও বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেননি আহতদের অনেকেই। স্বাভাবিক কাজকর্মতো দূরে থাক, সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না কোন কোন শ্রমিক। উপার্জন অক্ষমতা আর পঙ্গুত্ব কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে তাদের। যে সহকর্মীদের তারা হারিয়েছেন, তাদের মনে করে এখনও চোখের জল ফেলেন তারা। এক বুক চাপা কষ্ট নিয়ে বলেন, মরে গিয়ে বেঁচে গেছে বন্ধু-সহকর্মীরা।
এপ্রিল ২৪, ২০১৩, চোখের পলকে ধসে গেল রানা প্লাজা; বুকের ভেতরে তার হাজারো শ্রমিক। এরপর একে একে শ্রমিকদের বের করে আনা হয় সেই অভিশপ্ত ভবনের ধ্বংসস্তুপ থেকে। কারও নিস্তেজ, নিথর দেহ। কারও হাত আছে তো পা নেই, কারও মুখ-মাথা থেতলে গেছে, কেউবা কংক্রীটের স্তুপে আটকা পড়ে সাহায্য চাইছেন।
সারা বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়া সেই ট্র্যাজেডিতে বেঁচে থাকা নিন্ম আয়ের এই মানুষগুলোরই একজন মানিকগঞ্জের হৃদয়। আট তলায় নিউ ওয়েভে কাজ করতেন তিনি। বিয়ের তিন দিন আর জীবনের প্রথম চাকরির প্রথম মাসেই এই দূর্ঘটনা ঝাপসা করে দিলো সব স্বপ্নসাধ।
দুই বছরের চিকিৎসাতেও ফল এলো না; জীবনে আসতে থাকলো একের পর এক অনাকাঙ্খিত বিপর্যয়।
একমাত্র ছোট ভাই টিউশনি করে দিনরাত ছায়া হয়ে আছেন পঙ্গু বড় ভাইয়ের সেবায়।
স্ত্রী-সন্তান, পায়ের জোর থেকে মনের জোর সব খুঁইয়ে আজ হৃদয়ের জীবনটা বড় বিস্বাদের। হতাশায় ডুবে দুবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন এই শ্রমিক। অবশ্য এখন বাঁচতে চান নিজের লেখা কবিতায়। ভুলে যেতে চান সেই দুর্বিসহ স্মৃতি।
রানা প্লাজা ধসে আহত হন হৃদয়ের মতো দেড় হাজার শ্রমিক, তাদের মধ্যে গুরুতর আহত ছিলেন শতাধিক। তাদের সবারই প্রশ্ন, ভাগ্য কি আর কখনো হাসবে না ? না কি, বাকি জীবনের ছন্দ পড়ে থাকবে এমন বেসুরো হয়েই ?
আরও পড়ুন