ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রাসুলুল্লাহ (সা:)-এর দশটি অসিয়ত

প্রকাশিত : ১২:৫২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

মানবতার মহান মুক্তি দূত; সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা:)কে আল্লাহ ছোবাহানাহু তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন- তেমাদের জন্য রাসুলের জীবনীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তার প্রতিটি কথা, কাজ, অনুমোদন, নির্দেশনা, আদেশ, নিষেধ ও উপদেশ গোটা মানব জাতির দুনিয়া– আখেরাতের কল্যাণের বার্তাবাহী। তার সে কালজ্বয়ী আদর্শ ও অমিয়বাণী দ্যুাতি ছড়িয়ে পথপ্রদর্শন করেছে যুগ যুগান্তরে আলোকিত হয়েছে মানবমণ্ডলী।

সাহাবি হযরত মুয়াজ বিন (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা:) আমাকে ১০টি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন। তিনি বলেন, হে মুয়াজ!

১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করো না। যদিও এর জন্য তোমাকে হত্যা করা হয়, বা আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

২. মাতা-পিতার অবাধ্য হয়ো না। যদিও তারা তোমার স্ত্রীকে বর্জন করতে এবং তোমার ধন সম্পদ ত্যাগ করতেও নির্দেশ দেয়।

৩. কোনও ফরজ নামাজ কখনও ত্যাগ করবে না। কেননা যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করে, সে আল্লাহ তালার হিফাজত থেকে বঞ্চিত হয়।

৪. মদপান করবে না। কেননা তা সব অশ্লীলতা, লজ্জাহীনতা ও কুকর্মের উৎস।

৫. আল্লাহর অবাধ্য হওয়া থেকে বিরত থাকো। কেননা এতে আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তোষ নেমে আসে।

৬. শত্রুসেনার মোকাবেলায় পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না। যদিও তোমার বাহিনীর সব সেনা ধ্বংস হয়ে যায়।

৭. যখন ব্যাপক মহামারী দেখা দেয়, তখন সে জায়গা থেকে পালিয়ে যেয়ো না।

৮.  সাধ্য ও মর্যাদা অনুযায়ী পরিবার পরিজনের জন্য ব্যয় করো।

৯. নিজ পরিজনের তরবিয়ত দানে (শিক্ষা) ছড়ি ত্যাগ করো না ।

১০. আল্লাহর ব্যাপারে পরিবারের লোকদের সদা সচেতন ও ভীত রাখবে।

ব্যাখ্যা: ২নং অসিয়ত সম্পর্কে কিছুসংখ্যক আলিমের অভিমত হলো মাতা-পিতা যদি স্ত্রীকে তালাক দিতে নির্দেশ দেন তবে বিনা দ্বিধায় তালাক দেওয়া কর্তব্য। কেননা এ রকম করা পছন্দনীয়। কিন্তু আমাদের মতে এ বিষয়ে এ রকম সাধারণ ফতোয়া দেওয়া ঠিক নয়। আমাদের অভিমত হলো যদি পিতা-মাতা আল্লাহ ভীরু হন এবং পুত্রের কাছে তার স্ত্রীর সর্ম্পকে এমন কোনও যুক্তিসংগত কথা পেশ করেন, যার ভিত্তিতে তালাক প্রদান করা উচিৎ বিবেচিত হয়। পুত্রের কর্তব্য অবশ্য তালাক প্রদান করা, স্ত্রীর প্রতি যতই অনুরাগ থাকুক না কেন।

কিন্ত এ ব্যাপারে পিতা-মাতার কথা যদি যুক্তি সংগত না হয়; কোনও সংগত কারণ ছাড়াই তারা যদি পুত্রকে স্ত্রী তালাক দ্ওেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করেন, তবে তার কথা আমান্য করা যেতে পার্। তবে এটা অবাধ্যতা নয়। আল্লাহ তায়ালা এবং তার রাসুল যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন স্বামী-স্ত্রীর পক্ষে যখন সেভাবে জীবন যাপন করা সম্ভব না হয়, কেবল সে অবস্হায় শেষ পন্হা হিসেবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন করা যেতে পারে। পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা তালাক সর্ম্পকে এই রূপ শর্তই বিবৃত করেছেন ।

৯নং অসীয়তের অর্থ হলো সুশাসনে রাখা, এর মর্ম এই নয় যে, ছড়ির বলেই তরবিয়ত (শিক্ষা) করতে হবে। তাছাড়া এর উদ্দেশ্য যখন উপদেশ ও শিক্ষা দ্বারা সংশোধন না হবে তখন প্রয়োজনবোধে প্রহারও করা যেতে পারে। কিন্ত এ ব্যাপারে ও রাসুল (সা:) নির্দেশ দিয়েছিলেন, এমন প্রহার করা যাবে না, যার ফলে জখম বা হাড় ভেঙ্গে যায। মুখের উপর আঘাত রাসুল (সা:) করতেও  নিষেধ করেছেন। এমন কি রাসুল (সা:) পশুদের মুখের উপর ও আঘাত করতে নিষেধ করছেন। মাতা-পিতা ও শিক্ষকদের পক্ষে তার এ সব উপদেশ স্মরণ রাখা কর্তব্য।

 - (তাবরানী)

  আললামা জলীল আহসান নদভী কতৃক রচিত ‘যাদেরাহ’ হাদীস গ্রন্হ থেকে সংকলিত

- ( আনোয়ারুল কাইয়ূম কাজল)


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি