রিফাত হত্যা: যার জবানবন্দিতে ফেঁসে গেলেন মিন্নি
প্রকাশিত : ১১:০৭, ১৯ জুলাই ২০১৯
বরগুনার রিফাত শরীফকে হত্যাকাণ্ডে পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি মামলার ৬ নাম্বার আসামি টিকটক হৃদয়ের জবানবন্দির কারণেই ফেঁসে গিয়েছেন মিন্নি। আদালতে তার জবানবন্দিতেই উঠে আসে মিন্নির জড়িত থাকার কথা।
এদিকে মিন্নির জড়িত থাকার বিষয়টি আদালতে জোরালোভাবে দাবি করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।
অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডে পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনও।
হুমায়ুন কবির বলেন, রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় মূল নায়ক নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সঙ্গে মিন্নি পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। ফুটেজে মিন্নি রিফাত শরীফকে রক্ষার যে চেষ্টা করে, সেখানে সে নয়নকে জাপটে ধরলেও তাকে (মিন্নি) কোনো আঘাত করেনি।
এটি ছিল মিন্নির লোক দেখানো। ঘটনার আগের দিন এবং ঘটনার পূর্ব মুহূর্তে নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির মুঠোফোনের আলাপ-আলোচনা থেকে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে।
হুমায়ুন কবির আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগের দিন প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির ফোনালাপের তথ্যও পাওয়া গেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার মিন্নিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বুধবার আদালত মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন তিনি।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি রিফাত হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ সুপার এর বেশি কিছু জানাতে রাজি হননি।
এর আগে ঐ দিন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা পরিকল্পনায় মিন্নি সরাসরি অংশ নিয়েছেন। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তিন নম্বর আসামি মো. রাশিদুল হাসান রিশান ওরফে রিশান ফরাজীকে গ্রেফতারের পর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, এ পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া সব আসামি এবং মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কারণে সুস্পষ্ট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিন্নি এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতেন।
শুরু থেকে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের সঙ্গেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে যা যা প্রয়োজন, তা সম্পাদনে খুনিদের সব ধরনের মিটিংয়ে অংশ নিয়েছেন মিন্নি।
মিন্নি নিজেও এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আগে ও পরে খুনিদের সঙ্গে মিন্নির কথোপকথনও হয়েছে।
রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও নিহত ব্যক্তির স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করে বরগুনার পুলিশ।
উল্লেখ্য, বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এনএম
আরও পড়ুন