রিসাইক্লিং হচ্ছে না বেশিরভাগ প্লাস্টিক বর্জ্য, যাচ্ছে নদীতে (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:০৮, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১১:৪৯, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩
দেশে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের মাত্র ৩৬ শতাংশ রিসাইক্লিং হচ্ছে। বাকি ৬৪ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য সর্বনাশ করছে পরিবেশ। তবে রিসাইক্লিং বা পুনঃব্যবহার হয়ে প্লাস্টিক বর্জ্যও অর্থনীতিতে রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশে উৎপাদন হওয়া বেশিরভাগ প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিং হচ্ছে না। বছরে লাখ লাখ টন জমছে খাল-বিল-নদী আর সাগরে।
যদিও উন্নত বিশ্বের চিত্র ভিন্ন। প্রায় শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহ করে পুনঃব্যবহার বা রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় নতুন পণ্য। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র থাকে সুরক্ষিত। অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হয় দেশগুলো।
বাংলাদেশেও প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের আছে অনেক সুযোগ। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, কেবল ঢাকার দুই সিটি এলাকায় প্রতিদিন ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে। যেখানে একবার ব্যবহারযোগ্য খাদ্যের পাতলা প্যাকেটের বর্জ্যরে পরিমাণ ৩২৩ টন। পানি এবং ওষুধের বোতলের প্লাস্টিক বর্জ্য ১শ’ টন। পানির ট্যাংক, বোতলের ক্যাপ এবং প্লাাস্টিকের ফুলের বর্জে্যর পরিমাণ আরও ১শ’ টন।
দেশে উৎপাদিত বিপুল প্লাস্টিক বর্জে্যর মাত্র ৩৬ শতাংশ রিসাইক্লিং হচ্ছে। পুনঃব্যবহারে না আসায় বাকি ৬৪ শতাংশেরই অর্থনৈতিক গুরুত্ব নেই। বরং কৃষি ও মৎস্য খাতের পাশাপাশি বিপণ্ন করছে পরিবেশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহে যথাযথ উদ্যোগ জরুরি। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে বেশিরভাগ বর্জ্য সংগ্রহ করা সম্ভব।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. এজাজ হোসেন বলেন, “প্লাস্টিক বর্জ্যটা ময়লা না হওয়া অবস্থায় যদি সংগ্রহ না করতে পারি তাহলে রিসাইক্লিং করা যাবে না। এটাই এখন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতে দেখা যাচ্ছে যে তারা শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহ করছে এবং প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো ভালো অবস্থায় সংগ্রহ করছে। এর ফলে তাদের রিসাইক্লিংটা ভালো হচ্ছে।”
বিপিজিএমইএ সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, “সরকার যদি পাইলট প্রজেক্ট করে দেখিয়ে দেয় যে, বিনিয়োগ করলে রিটার্নটা ভালো তাহলে বেসরকারি সেক্টর এগিয়ে আসবে। সেই সঙ্গে নিত্যনতুন অনেক আইটেম আসবে।”
পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বা প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিং করা হলে দেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। সুরক্ষা পাবে পরিবেশও। এজন্য রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা জরুরি বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “যেসব প্লাস্টিক পণ্য মাটিতে মিশে যাচ্ছে ওটার জন্য চিন্তা করা যেতে পারে। সেখানে সরকারের একটি সাবসিডাইস গ্রেডও হতে পারে। সেখানেও সরকার প্রনোদনা ঘোষণা করতে পারে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে যারা এই ধরনের নন-রিসাইকেবল বা মিশে যাচ্ছে উঠানোর খরচ বেশি ওই ধরনের পণ্য যারা রিসাইকেল করছে তাদেরকে প্রনোদনা দেওয়ার কথা ভাবতে পারে সরকার।”
প্লাস্টিক পণ্যের যত্রযত্র ব্যবহার রোধ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটি সমন্বিত পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এএইচ