রোযার তাৎপর্য
প্রকাশিত : ২২:৫৬, ১ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৩৫, ৩ এপ্রিল ২০১৮
প্রকাশ থাকে যে, রোযা ঈমানের এক চতুর্থাংশ। কারণ, এক হাদিসে রসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, রোযা সবরের অর্ধেক এবং অন্য এক হাদিসে বলেন, (সবর ঈমানের অর্ধেক) এ থেকে জানা গেল, রোযা ঈমানের অর্ধেকের অর্ধেক অর্থাৎ এক -চতুর্থাংশ। রোযা আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিধায় ইসলামের সব রোকনের মধ্যে এটা সেরা রোকন। সেমতে আল্লাহ তাআলার উক্তি রসূলে কারীম (সা.) এক হাদিসে কুদসিতে বর্ণনা করেছেন। উক্তিটি এই সব সৎ কাজের সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত হবে, কিন্তু একান্তভাবে আমার জন্যে বিধায় আমিই এর প্রতিদান দেব। আল্লাহ বলেন, অর্থাৎ, সবরকারিদেরকে বেহিসাব সওয়াব দান করা হবে।
রোযা সবরের অর্ধেক। তাই এর সওয়াব হিসাব কিতাবের আওতা বহির্ভূত হবে। শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্যে রসূলে করীম (সা.) এর এ উক্তিই যথেষ্ট, তিনি এরশাদ করেন, আল্লাহ্র কসম, যার হাতে আমার প্রাণ নিশ্চয় রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মেশকের চেয়েও উত্তম।
আল্লাহ বলেন, রোজাদার তার কামনা বাসনা ও পানাহার একমাত্র আমার জন্যে পরিত্যাগ করে। অতএব রোযা আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেব। রসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, জান্নাতের একটি দ্বারকে বলা হয় ‘বাবুর রাইয়ান’। এতে রোজাদারগণ ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করবে না। রোজাদারদেরকে তার রোযার বিনিময়ে আল্লাহ্র দীদারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, রোজাদারের দুটি আনন্দ। এক আনন্দ ইফতারের সময় এবং এক আনন্দ তার পালন কর্তার দীদার লাভ করার সময়।
এক হাদিসে আছে, প্রত্যেক বস্তুর একটি দরজা আছে। এবাদতের দরজা হলো রোযা। আরও বলা হয়েছে, রোজাদারের নিদ্রা এবাদত। হজরত আবু হোরায়রা (রা.)
এর রেওয়ায়েতে রসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন রমযান মাস শুরু হয়, তখন জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। শয়তানকে শিকল পরানো হয়। জনৈক ঘোষণাকারী ঘোষণা করে- যারা কল্যাণ কামনা কর, তারা এগিয়ে আস এবং যারা অনিষ্ট কামনা কর তারা সরে যাও। কোরআনের এক আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা অতীত দিনগুলোতে যা পাঠিয়েছ, তার বিনিময়ে আজ জান্নাতে স্বচ্ছন্দ পানাহার করো। এর তফসির প্রসঙ্গে ওকী বলেন, এখানে অতীত দিন বলে রোযার দিন বুঝানো হয়েছে।
কেননা, রোযার দিনে তারা পানাহার তাগ করেছিল। রসূলুল্লাহ (সা.) সংসার ত্যাগ ও রোযাকে গর্বের বিষয়সমূহের মধ্যে এক কাতারে রেখেছেন। সংসার ত্যাগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আল্লাহ তা আলা যুবক এবাদতকারিকে নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করেন এবং বলেন, হে আমার জন্যে আপন বাসনা বর্জনকারী যুবক, হে আমার সন্তুষ্টিতে যৌবন অতিবাহিতকারি যুবক। তুমি আমার কাছে ফেরেশতার মতই।
পক্ষান্তরে রসূলুল্লাহ (সা.) রজাদার সম্পর্কে বলেন, আল্লাহ তালা ফেরেশতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, সে আমার কারণে তার কামনা বাসনা ও পানাহার ত্যাগ করেছে।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মুসলিম দার্শনিক ইমাম আবু হামেদ মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ আল- গাজ্জালি রচিত ‘এহইয়াড উলুমিদ্দিন’ বই থেকে মাওলানা মুহিউদ্দিন খান অনুবাদিত গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
কেআই/এসএইচ/