ঢাকা, শুক্রবার   ১০ জানুয়ারি ২০২৫

জাতিসংঘকে কফি আনান

রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ারমারকে চাপ দিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২৮, ১৪ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ১৫:২৬, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে দেশটির ওপর চাপ দিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানরাখাইন সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমার সরকার গঠিত কমিশনের প্রধান কফি আনান দেশটির আইন সংশোধন করে রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও বলেন।

স্থানীয় সময় শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ইকোসক চেম্বারে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের এক বৈঠকে তিনি এই আহবান জানান। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের উদ্যোগে আয়োজিত এ বৈঠকে ‘অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট’ এর চেয়ারম্যান কফি আনান ছাড়াও বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

বৈঠক শেষে কফি আনান বলেন, আমি আশা করি রাখাইনে স্থিতিশীলতা ফেরাতে কমিশনের সুপারিশ মিয়ানমার সরকার বাস্তবায়ন করবে। তিনি মনে করেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নিয়ে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে পুনর্বাসনে মিয়ানমারের উপর চাপ অব্যাহত রাখবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দিতে অনাগ্রহ দেখিয়ে অং সান সু চি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

গত ২৫ আগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা শুরুর পর ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে থেকে বাংলাদেশে আরও ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে।

রাখাইন সঙ্কট নিয়ে আনান কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের দিন নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়। কমিশনের ওই  প্রতিবেদনে মিয়ানমারে থাকা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সুপারিশের পাশাপাশি বাংলাদেশে থাকা শরণার্থীদের পুনর্বাসনের কথা বলা হয়।

এ সহিংসতায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা আবারও বাস্তুচ্যুত হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলো এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া ও চীন মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিলেও বিপরীতে তৎপর রয়েছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। যুক্তরাষ্ট্রও রোহিঙ্গা নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে আসছে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের দিক থেকে উপর্যুপরি উসকানি এবং আকাশ সীমা লঙ্ঘন সত্ত্বেও বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সহিষ্ণুতা দেখিয়েছে।

তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের অংশগ্রহণ ও তদারকি ছাড়া মিয়ানমারের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও অর্থপূর্ণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মূল সমস্যা সমাধান করা কঠিন হবে।

জাতিসংঘে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ছাড়াও অফিস অব দ্য হাই কমিশন অব হিউম্যান রাইটস, অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স, ইউএনএইচসিআর, ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও সভায় বক্তব্য রাখেন।

এ নিয়ে গত ২৮ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার পরিস্থিতির উপর তিনবার আলোচনায় বসল। ১৩ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

 

আর/এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি