রোহিঙ্গা ও বন্যাদুর্গত নারী জন্য স্বাস্থ্য সহায়তা
প্রকাশিত : ২২:৩১, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২২:৩৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
নারীর যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বাস্তবায়নে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও চীনের সহায়তায় জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) র উদ্যোগ রোহিঙ্গা ও বন্যাদুর্গত নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং চীন সরকারের যৌথ সহায়তায় ইউএনএফপিএ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের উপস্থিতিতে, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারি এবং বগুড়া জেলা থেকে আগত সিভিল সার্জনদের হাতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ও রোহিঙ্গা নারীদের জন্য যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যরক্ষায় প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের বন্যায় আক্রান্ত প্রায় চৌদ্দ হাজার আটশ পঞ্চাশ জন নারী এই সামগ্রীগুলো সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাবে। বন্যা দুর্গত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত সম্ভ্রম রক্ষার্থে এই সামগ্রীগুলোর ভেতর থাকবে স্যানিটারি ন্যাপকিন, অন্তর্বাস, ফ্ল্যাশ লাইট ইত্যাদি।
রোহিঙ্গা সংকট শুরু হবার পর কক্সবাজারে প্রায় দু লক্ষ চুরানব্বই হাজার প্রাপ্ত বয়স্কা নারী যৌন সহিংসতার ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই ইউএনডিপি এবং চীনের সহায়তায় ইউএনএফপিএ এক লাখ আঠার হাজার রোহিঙ্গা নারীর হাতে তুলে দিচ্ছে প্রজনন সম্পর্কিত জীবন ঝুঁকি কমানোর বিভিন্ন সামগ্রী এবং ঔষধ।
ইউএনেফপিএর স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান, ডা. সত্য নারায়ণ ডোরেস্বামী মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘ইউএনএফপিএ প্রায় ৩৫ হাজার বন্যা দুর্গত প্রাপ্ত বয়স্কা নারী ও প্রজননক্ষম মেয়েকে সহায়তা করেছে এবং দ্রুত এদেরকে জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা করেছে। চায়না এইডের সহায়তায় ইউএনএফপিএ ১২৫ জন স্বাস্থ্য কর্মীর স্বাস্থ্য সামগ্রী সরবারহ করবে। এর ফলে ১৪ হাজার ৮৫০ জন নারী ও মেয়ে প্রজনন স্বাস্থ্য সুবিধা পাবে।
এছাড়াও কক্সবাজারে এক লক্ষ আঠারো হাজার শরণার্থী নারী ও মেয়ে এই প্রজনন স্বাস্থ্য সামগ্রী পাবে’। তিনি এই যৌথ উদ্যোগের জন্য চীনের সরকার ও ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশে নিয়োজিত চীনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক পরামর্শদাতা লি গুয়াঙ্গুন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা প্রশংসনীয়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের বন্যা দুর্গত মানুষ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করতে চীন আগ্রহী।এ কারণেই ইউএনডিপি ও ইউএনএফপিএর সঙ্গে আমাদের এই যৌথ উদ্যোগ’।
তিনি আশা ব্যাক্ত করেন চীনের সরকার ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তা প্রদান করবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডিজিএচএস এর মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি চীনের সরকার এবং ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ কে ধন্যবাদ জানাই বন্যাদুর্গত অঞ্চল ও কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যৌন সহিংসতার আশংকায় থাকা নারী ও প্রজননক্ষম মেয়েদের প্রতি তাদের এই বাড়তি উদ্যোগের জন্য। এটা দক্ষিণের সাথে দক্ষিণের যে সম্পর্ক সেটাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে শত সহস্র রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। আসন্ন বর্ষায় তাদের অপরিকল্পিত ক্যাম্প স্থাপনের জন্য এক নতুন বিপদ ঘনিয়ে আসছে। বৃষ্টিতে সেখানে ভূমিধ্বস রোহিঙ্গাদের জন্য ভয়াবহ সংকট ডেকে আনতে পারে’।
ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইয়োরি কাটো বলেন, ‘চীনের সরকারের সহায়তায় ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যায় আক্রান্ত নারী এবং কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে প্রজননক্ষম রোহিঙ্গা নারীদের জন্য জীবনের ঝুঁকি কমানোর বিভিন্ন সামগ্রী স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছে সরবারহ করছে। তিনি আরও বলেন, ‘সংকটগ্রস্ত নারীদের মাঝে এই সহায়তা নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলবে। নারীরা গর্ভধারণ ও জন্ম বিষয়ক ক্ষেত্রগুলোতে আরও উন্নত সেবা লাভের সুযোগ পাবে’।
অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন আইপিএইচএনের পরিচালক ও এনএনএসের লাইন পরিচালক ও প্রকল্প ব্যাবস্থাপক ড. এবিএম মাজহারুল ইসলাম, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেকটর কিয়োকো ইয়োকোশুকা, ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও বিভিন্ন এনজিওর কর্মকর্তাগণ এবং সরকারি প্রতিনিধিগণ। (বিজ্ঞপ্তি)
টিক
আরও পড়ুন