লকডাউনে কাজের জ্বালা
প্রকাশিত : ২৩:১১, ২৩ মে ২০২০ | আপডেট: ২৩:১৮, ২৩ মে ২০২০
(প্রতিকী ছবি-গ্রাফিক্স)
করোনা পরিস্থিতির কারনে চলমান লকডাউনে (অবরুদ্ধ) অনেকেই সাংসারিক কাজকর্মের জ্বালায় পড়েছেন। নানান জনের নানান রকম কাজের জ্বালা। যেমন- কাপড় কাচার জ্বালা, থালা বাসন ধোয়ার জ্বালা, ঘর ঝাড়ু দেওয়া, মোছার জ্বালা। কাজে জ্বলতে জ্বলতে হয়ত ভাবছেন অফিসের কাজ বা বসের জ্বালার চেয়েও ঘরের জ্বালা কম নয় বরং বেশি।
কারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, কারওবা ব্যাচেলর বাসায় বুয়া আসছে না। কেউ মায়ার টানে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন। যারাই কাজ করছেন তাদের মধ্যে অনেকেই বাধ্য হয়ে করছেন। কেউ বউয়ের ভয়ে কেউবা নিরুপায় হয়ে। আবার কেউ কেউ বউয়ের মিষ্টি কথার তোড়ে করছেন কাজ। এর মধ্যে আবার কেউ কেউ শরীরের অসুস্থতার কথা বলে কিছুটা নিস্তার পাচ্ছেন। যারা বাধ্য হয়ে কাজ করছেন তারা আশা করছেন যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আবার আগের মতো করে নিজের সম্রাজ্যে ফিরতে পারবেন তারা।
সময় মতো টেবিলে খাবার না পেলে যে ছেলেটা চিকৎকার করে বাড়ি মাথায় তুলত সেই ছেলেটাকে এখন যেন বাগে আনা গেল। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হল সব কিছু সময় মতো হয় না। পারলে তুমি সময় মতো করে দেখাও।
বাসার যে কর্তা এক সময় অফিস থেকে এসে রান্নার স্বাদ কিছুটা গড়মিল হলে জ্বলে উঠতেন, অফিসে যাওযার সময় প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি হাতের কাছে না পেলে ধমক দিতেন। তিনি চাইতেন সব কিছু যেন সাজানো গোছানে থাকে। সংসারের মঙ্গলের জন্যই তিনি এমনটি চাইতেন। তবে তার বলার ধরণে অন্যরা বুঝতেন যে, তিনি সংসারের অন্যদের কষ্ট বুঝেন না। সবাই যে স্ত্রীর কষ্ট বুঝেন না এমন কিন্তু নয়। অনেকেই অফিসে যাওয়া আগে যতদূর পারেন স্ত্রীকে সহযোগিতা করেন। অফিস থেকে এসেও সাহায্য করতেন।
আবার অনেকেই ভাবতেন সংসারের একেকটা কাজের মূল্য মাত্র কয়েকশত টাকা। সংসারে কি পরিমান কাজ করতে হয় বুঝতেন না অনেকেই। কিন্তু বর্তমান অবরুদ্ধ অবস্থায় ঘরের কাজ কত কষ্টের তা সামনে থেকে দেখছেন। যারা সময়ের অভাবে স্ত্রীকে তার কাজে সহযোগিতা করতে পারতেন না তারা আজ নেমে পড়েছেন স্ত্রীর সঙ্গে।
অনেক বাসা-বাড়িতে লকডাউনের সময় সাংসারিক কাজ কর্মে একটু পরিবর্তন দেখা গেছে। যারা দিনের বেশির ভাগ সময়টা বাড়ির বাইরেই থাকতেন, ঘরের কাজ তেমন একটা করা হতো না। আজ তারা ইচ্ছায় অনিচ্ছায় ঘরের কাজ করে বুঝেছেন, ঘরে কি পরিমান কাজ, কতক্ষণের কাজ। কত কষ্টের কাজ, ঘরের কাজ তো দূরের কথা, ঘরে যে বসে আছেন তাতেই মাথা নষ্ট, এমন লোকও যে নেই তা কিন্তু নয়। ঘরের কাজ করাতে না পারলেও, ঘরে যে কি পরিমান কাজ তা দেখাতে পেরেই খুশি। অনেকেই ঘরের কাজে সময় দিতে পেরে খুশি, ঘরের কাজ সকলেরই। আগামী দিনেও সবাই মিলে মিশে ঘরের কাজ করবে এমনটাই প্রত্যাশা।
এমএস/এসি