ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

শহরে ক্যানসার আক্রান্তের হার বেশি, বেঁচে থাকার হারও বেশি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৮, ৩০ মে ২০২৩

বাংলাদেশে আনুমানিক ৫ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসেবার উচ্চব্যয়ের কারণে প্রতি বছর দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ক্যানসার চিকিৎসায় ওপরের দিকে নেই। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো অর্থনৈতিক সমস্যা। ক্যানসার চিকিৎসার সক্ষমতা খুবই কম, যন্ত্রপাতি কম, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যাও কম।

গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে 'ক্যানসার চিকিৎসার সক্ষমতা ও বাংলাদেশ' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ক্যানসার চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ক্যানসার স্টাডি গ্রুপ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টাস ফোরাম যৌথভাবে এই আলোচনাসভার আয়োজন করে।

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ক্যানসার স্টাডি গ্রুপের রিসার্চ ফেলো ডা. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও দেশে ক্যানসার চিকিৎসার পরিধি বাড়েনি। শহরে আক্রান্তের হার বেশি হলেও তাদের বেঁচে থাকার হার বেশি। আর গ্রামে আক্রান্তের হার কম হলেও তাদের বেঁচে থাকার হার কম ।

তিনি বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশের বেশির ভাগ পরীক্ষাগারে আধুনিক প্রযুক্তির অভাব রয়েছে, যা নির্ভুল রোগ নির্ণয়কে বিলম্বিত করে। দেশে রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট আছে মাত্র ২০৩ জন, মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট ৩০ জন, চেস্ট সার্জন ৩০ জন, রেডিওলজিস্ট ৫০১ জন, নিউক্লিয়ার মেডিসিন স্পেশালিস্ট ১০০ জন, মেডিক্যাল ফিজিসিস্ট রয়েছেন ৩৩১ জন। এই অল্প জনবল দিয়ে বিশাল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, গত বছর ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে আমরা নামমাত্র একটা বরাদ্দ পেয়েছিলাম, যা গবেষণার জন্য একেবারেই অপর্যাপ্ত। এ বছর শুনেছি আমাদের তা আর দেওয়া হচ্ছে না, কারণ এ বরাদ্দ চক্রাকার পদ্ধতিতে এ বছর অন্য গ্রুপকে দেওয়া হবে। কিন্তু ক্যানসার গবেষণায় এ অনিয়মিত ও নামমাত্র বরাদ্দ কোনো কাজে আসে না ।

২০২২ সালে ক্যানসার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের বৈষম্য তুলে ধরে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, বাংলাদেশে ক্যানসার সেবা বিকেন্দ্রীকরণের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সব জনগোষ্ঠীতে ক্যানসার ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এমনকি শহুরে ও গ্রামীণ জনসংখ্যার মধ্যে ক্যানসার-সম্পর্কিত মৃত্যুর অসমতা বজায় রয়েছে, গ্রামীণ জনসংখ্যার মধ্যে সামগ্রিকভাবে ক্যানসারের মৃত্যুর হার বেশি ।

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালের এপিডেমিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহিরুল ইসলাম নাদিম বলেন, ক্যানসার নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ, সমস্যা ও সম্ভাবনা সবকিছুই আছে। যে কারণে বাংলাদেশ ক্যানসারের চিকিৎসায় ওপরের দিকে নেই। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো অর্থনৈতিক সমস্যা। এ সমস্যায় আমরা গবেষণা কাজও এগিয়ে নিতে পারছি না। তিনি বলেন, ক্যানসার যদি শুরুতে ধরা যায়, তাহলে এর সফল চিকিৎসা করা যায় । প্রথমত, রোগীরা আমাদের কাছে আসে না। যখন কারও কোনো একটা উপসর্গ দেখা দেয়, তখন সে নিজের মতো করে কিছু ওষুধ কিনে খায় । এভাবে সে কিছু দিন সময় পার করে আমাদের কাছে আসে অ্যাডভান্স স্টেজে । ফলে চিকিৎসা করেও সব সময় ভালো ফল আসে না। এক্ষেত্রে রোগীর অর্থনৈতিক সমস্যার পাশাপাশি সচেতনতাও একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি