ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

শার্শায় কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানোর মহোৎসব চলছে

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৩৪, ২০ মে ২০২৩

যশোরের দক্ষিণের শার্শা উপজেলার ও সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার শেষ সীমান্ত বাগআঁচড়ার বেলতলা আমের সর্ববৃহৎ বাজার। প্রতিবছরের ন্যায় চলতি মৌসুমে আমের ব্যাপক বেচাকেনা হলেও প্রতিটা আমের গোডাউনে ভারতীয় ট্যাগপন নামের রাসায়নিক কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানোর উৎসব চলছে।

আর এসব রাসায়নিক কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আম খেয়ে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সাধারণ ভোক্তারা।

জানা যায়, শার্শা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আম সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের দিন ধার্য করা হয় বিভিন্ন নির্দিষ্ট তারিখে। কোন প্রকার কার্বাইড ও রাসায়নিক কেমিক্যাল স্প্রে দিয়ে আম পাকানো যাবে না, এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু আম ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় নির্দেশনা অমান্য করে কৃত্রিম উপায়ে আম পাকিয়ে বাজারজাত করছে।  বিকালে স্প্রে করলেই পরের দিন সকাল হওয়ার সাথে সাথে আম গায়ে রং দ্রুত পাল্টিয়ে পাকা আমে পরিণত হচ্ছে। এতে করে আমের প্রকৃত স্বাদ এবং মান নষ্ট হচ্ছে, একই সঙ্গে ভোক্তারা ব্যাপকভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। 

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, যশোর তথা দক্ষিণাঞ্চলের বাগআঁচড়া বেলতলা বাজারে বিক্রিকৃত আমের সুনাম রয়েছে দেশ এবং বিদেশে। কিন্তু কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানোর মহোৎসবের কারণে সেই সুনাম আজ নষ্ট হতে চলেছে। বিদেশে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এ খাত থেকে প্রতিবছর অনেক টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে, এতে অর্থনৈতিকভাবে দেশ লাভবান হয়। এবছর বিষমুক্ত আম সরবরাহ না করা গেলে বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছুটা অনিশ্চিতার মুখে পড়তে পারে। 

এসব অনিয়মের বিষয়ে আম বেপারী জিনারুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্প্রে করার জন্য তো প্রশাসনকে টাকা দিয়েছি। আর বেপারী জালাল উদ্দিন জানান, সব ঘরেই তো স্প্রে দিয়ে আম পাকাচ্ছে, সবাই যেভাবে পাকাচ্ছে আমিও সেইভাবে আম পাকাচ্ছি।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আরএমও) লক্ষিনদার বলেন, আম পাকানোর জন্য সরকার নির্ধারিত স্প্রে ছাড়া অন্য যে সব কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানো হবে তা অবশ্যই মানব দেহের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। 

সেনেটারী ইন্সপেক্টর শেফালী খাতুন বলেন, আম কেনাবেচা শুরু হয়েছে আমি এখনও জানিনা। তবে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কোন বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ মণ্ডল জানান, বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু ব্যবসায়ীরা যদি বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানোর চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র পাল জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আম বাজারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন অনিয়ম তদারকি করছে। কোন রকম বাজারে চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি কোন অসাধু ব্যবসায়ী যদি আমে বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি