শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের
প্রকাশিত : ১২:১১, ২ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৩:১৩, ২ জানুয়ারি ২০১৮
শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া এমপিওভুক্তিরআশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে নন এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাসে সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ না থাকায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষা সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানরত শিক্ষকদের কাছে যান শিক্ষামন্ত্রী। এসময় তিনি তাদের দাবি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। এসময় অনশনরত শিক্ষকরা ‘না’‘না’ স্লোগানে শিক্ষামন্ত্রী বক্তব্য প্রত্যাখান করেন। শিক্ষকরা বলছেন, এর আগের বারও তাদের একইভাবে একাধিকবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। নীতিমালা ও প্রক্রিয়ার কথা বলে তাদের রাজপথ ছেড়ে বাড়ি ফেরানো হয়েছে। তারা আর এসবে বিশ্বাসী নন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এবার তারা বাড়ি ফিরে যাবেন না।
তিন দিনের মাথায় আমরণ অনশনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছে যান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তাঁদের এমপিওভুক্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেন। এসময় শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বাজেট সীমিত। এই বাজেট দিয়ে শিক্ষকদের সব দাবি ও চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়। এ বিষয়ে অন্যান্য মন্ত্রনালয়গুলোরও সহায়তা লাগবে। তিনি নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার বিষয়ে গতরাতে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়গুলোর সঙ্গে আলাপ করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে দাবি মেনে নেওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় সীমা উল্লেখ নেই দাবি করে অনশনরত শিক্ষকরা তা প্রত্যাখান করেন।
প্রসঙ্গত, রোববার থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষকরা। অনশনে ইতোমধ্যে ৭৭শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। শীতের রাতেও শিক্ষকরা ফুটপাতে অবস্থান করছেন। এ সময় অনেক শিক্ষককে কাঁদতে দেখা যায়।
কর্মসূচি আহ্বানকারী সংগঠন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার গণমাধ্যমকে বলেন, টানা দু`দিনের অনশনে তাদের ৭৭ শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে বর্তমানে ২৮ জন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। কয়েকজনকে অনশনস্থলেই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। শিক্ষক নেতারা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, অনশনে মৃত্যুর খবর শোনার আগেই প্রধানমন্ত্রী এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেবেন।
সরকার স্বীকৃত সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবিতেই শিক্ষকদের এ আন্দোলন। স্বীকৃতি পেলেও নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পান না। সারাদেশে এমন নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে ৫ হাজার ২৪২টি। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৭৫ থেকে ৮০ হাজার। অন্যদিকে বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী ৪ লাখের বেশি। সর্বশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।
/ এআর /
আরও পড়ুন